Monday, February 3, 2025
ঠিকানা দিকশূন্যিপুর

নিঝুম নির্জন কাগে

দিন যাপনের একঘেয়েমি আর ক্লান্তি দূর করতে পর্যটনের বিকল্প নেই। চার দেওয়ালের গন্ডি ছাড়িয়ে তল্পিতল্পা গুটিয়ে ঝোলা কাঁধে সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়েন যাঁরা, তাঁদের জন্যই এই কলম। লিখেছেন অজন্তা সিনহা

আক্ষরিক অর্থেই নিঝুম। কোলাহল নেই। দিনে শুধু পাখির ডাক। রাতে ঝিঁঝিঁ পোকাদের কনসার্ট। এছাড়া হাওয়ার শনশন শিরশিরানি। কালিম্পং জেলার অন্তর্গত পেডং বেশ জমজমাট এক জনপদ। সেখান থেকে মাত্র আধঘন্টার দূরত্বে কাগে। অথচ কী নির্জন ও শান্ত এই গ্রাম। আর কী অপরিসীম আন্তরিকতা। এখানে থাকার অভিজ্ঞতা কোনোদিন ভোলার নয়। গতকালই এক মিঠে রোদ্দুর মাখা সকালে, পেডং থেকে ছোট্ট পাহাড়ী গ্রাম কাগে-তে এসেছি। ব্রেকফাস্ট সেরেছিলাম পেডং-এ, পূর্ণ তামাংয়ের ওখানে। সেই সময় তো বটেই, আজও উত্তরবঙ্গের বহু মানুষ কাগের নাম জানে না। আমি বরাবরই অচেনা ও প্রত্যন্ত অঞ্চল খুঁজে নিয়ে বেড়াতে যাই। এ ব্যাপারে খুব বেশি সাহায্য পেয়েছি পূর্ণজির কাছে। কাগেও তাঁর সূত্রেই আসা।

পেডং থেকে কাগে যাওয়ার পথটি সেসময় বেশ পাথুরে ছিল। গাড়িতে বেশ ঝাঁকুনি লাগছিল। সে হোক। পথের দু’পাশের ছবির মতো দৃশ্যপট সব ভুলিয়ে দিচ্ছিল। উত্তুঙ্গ পর্বতরাশি, ছোট ছোট গ্রাম, প্রচুর ছোট-বড় গাছ, ফসলের ক্ষেত আর ফুলের প্রাচুর্য। আর এই সবকিছুর পর হলো মুদুম। যেমন মিষ্টি নাম, তেমনই চেহারা। অক্টোবরে এই নদী ক্ষীণকায়া। তবু, পাহাড়ের নিয়মে খরস্রোতা মুদুম বয়ে চলেছে প্রবল বেগে। শুনলাম কাছেই এক বড় ঝর্না তার উৎস। ড্রাইভার ভাই এটাও বললো, বর্ষায় নাকি মুদুম একেবারে বাঁধনহারা। এই মুদুমের অববাহিকা জুড়ে যে উপত্যকা, তারই আশপাশ ঘেরা জঙ্গলের ভিতর পটে আঁকা ছবির মতো গ্রাম কাগে। মুদুমের ওপরের ছোট্ট ব্রিজ পার করেই পৌঁছে গেলাম হোমস্টে-তে, তখনও পর্যন্ত কাগের একমাত্র হোমস্টে।

Whatsapp Image 2022 05 11 At 4.24.40 Pm

বাকি বর্ণনায় যাওয়ার আগে আজ সকালের কথা। ঘুম ভেঙেছে অনেক ভোরে–সব আলো ছড়াচ্ছে একটু একটু করে পাহাড় আর উপত্যকার কোনে কোনে। মুখ ধুয়ে, প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্র গায়ে চাপিয়ে ঘরের বাইরে যাই। বাইরে একটি পাথরের চাতাল। সেটিকে রঙ্গিন ছাতা, চেয়ার ইত্যাদি দিয়ে বেশ সুন্দর বসার জায়গা বানিয়ে দিয়েছেন এঁরা। যেন একটি প্রাকৃতিক ব্যালকনি। সেখানেই বসে একটু একটু করে একটি দিনের জন্ম প্রত্যক্ষ করছি। পাখির ডাক ছাড়া আর কোনও শব্দ নেই। এদিক ওদিক চাইতে হঠাৎই চোখ যায় দূরে। বেশ অনেকটা দূর। তবু স্পষ্ট সেই অনির্বচনীয় তুষার-ধবল চূড়া। কাঞ্চনজঙ্ঘা ?

দৌড়ে আমার পাশের ঘরে ঘুমিয়ে থাকা সহযাত্রী ভাই রাজদীপকে তুলি। তারপর কেমন করে তার সাহায্যে হাচড়ে পাচড়ে অনেকটা নিচের হোমস্টে থেকে ওপরের গাড়ির রাস্তায় উঠি পাগলের মতো, শুধু আর একটু ভালো করে তেনাকে দেখবো বলে, সেটা লিখে প্রকাশ প্রায় অসম্ভব ! চারপাশের গ্রাম তখনও ভালো করে জাগেনি। আমরা অনেকটা সময় ধরে মুগ্ধ হয়ে দেখলাম কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃপ্ত রূপ । অত দূর থেকেও স্পষ্ট তার অনতিক্রম্য আকর্ষণ! ছবিও তোলা হলো। আমার অতি সাধারণ ডিজিটাল ক্যামেরায় যতখানি ওঠে ! তবু সে যে কাঞ্চনজঙ্ঘা ! তারপর সামান্য রোদ উঠতেই অদৃশ্য তিনি। আমরা যা পেয়েছি, তাতেই পরিপূর্ণ হয়ে নেমে এলাম নিচে। এসে বসলাম ওই চাতালে। সামনে পাহাড়ের ধাপে ধাপে বোনা ফসলের ক্ষেতে তখন সকালের সোনা রোদ খেলা করছে। অনির্বচনীয় সেই অভিজ্ঞতা।

Whatsapp Image 2022 05 11 At 4.21.47 Pm

এবার আবার শুরুর, মানে গতকালের কথা। গতকাল যখন পৌঁছই এখানে, তখন পুরো রাজ্য জুড়ে শুরু হয়ে গেছে দুর্গাপুজোর উন্মাদনা। সেই সব আয়োজন, উদযাপন থেকে অনেক দূরের এই গ্রামে একটাই পুজো। পুরো গ্রাম তাতে সংপৃক্ত। আমরা যেখানটায় আছি, তার থেকে অনেকটা উঁচুতে একটি ছোট মালভুমির আকারের জমিতে পুজোর প্যান্ডেল। আমার পৌঁছনো ক্ষমতার বাইরে। রাজদীপ ঘুরেফিরে সেখানে যায়, আর, এসে আমায় ধারাবিবরণী দেয়। অর্থাৎ দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো। প্রতি সন্ধ্যায় সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। তার আমোদ-আভাস পাই মাইকের মাধ্যমে। গ্রামের নৃত্যগীতিপ্রিয় মানুষের তাই নিয়েও উৎসাহ কম নয় ! প্রসাদও পৌঁছে যায় হাতে পরিবারের ক্ষুদে সদস্য মারফত। সব মিলিয়ে পুজো উপভোগের এক অনাবিল প্রাপ্তি। 

লাঞ্চে ছিল দুর্দান্ত রাইশাক, অনেকটা ভাত খেয়ে ফেলি শাক দিয়েই। তারপরের প্রতি লাঞ্চের মেনুতে ‘রাইশাক’ বাঁধাধরা হয়ে গেছিল। এছাড়াও চিকেনের একটি বিশুদ্ধ নেপালি ডিশ আজও মুখে লেগে আছে। কাগে পাক্কা কৃষিপ্রধান গ্রাম। আর সম্পূর্ণভাবে জৈবসার প্রয়োগের মাধ্যমে চাষ হয়। ফলে প্রতিটি শাকসবজি সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যগুণসম্পন্ন। এঁদের আবার বাড়িতেই পোলট্রি ও ডেয়ারি। পুরো ফার্মহাউস যাকে বলে। বুড়ো বয়সে গরুর খাঁটি দুধের স্বাদও নিতে হলো, অনুরোধের ঢেঁকি গিলে। এমনিতে লাঞ্চ ও ডিনারে যা মেলে, ভাত-রুটি, ডাল-সবজি-ভাজা, ডিম ও চিকেন। ব্রেকফাস্ট-এ পাওয়া যায় পুরি/রুটি-সবজি, অমলেট বা ডিম সেদ্ধ, নুডলস। সন্ধ্যায় চা বা কফির সঙ্গে স্ন্যাকস-এ পকোড়া, মোমো। মোমোর ক্ষেত্রে একটু আগাম অনুরোধ জানাতে হয়, তৈরির ব্যাপারটা সময়সাপেক্ষ বলে। হোমস্টে-র ঘরগুলি পরিচ্ছন্ন ও আরামদায়ক। এটাচড ও ওয়েস্টার্ন টাইপ বাথরুম। যাবতীয় পরিষেবা চমৎকার। প্রয়োজন অনুসারে গরমজলের যোগান রয়েছে।

সম্প্রতি পূর্ণজির কাছে শুনলাম, এখন আরও কয়েকটি হোমস্টে হয়েছে কাগে-তে। এটা ভালো। আরও কিছু পরিবারের আয়ের উৎসমুখ খুলে যাওয়া। চাষবাসের রোজগারে বছরভর পেট চলে না। সেসময় দেখেছি, গ্রামে প্রাথমিক শিক্ষার ওপরে আর স্কুল নেই। এখনকার খবর জানি না। একটু উঁচু ক্লাসে পড়ার জন্য ছেলেমেয়েদের পেডং যেতে হতো। চিকিৎসা বলতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। সেটাও সব সময় খোলা থাকে না। অগত্যা সেই জড়িবুটি ভরসা। আর ভরসা প্রকৃতি। সেখানেই এই মানুষগুলোর যত রসদ জমা। সেখান থেকেই উজার করা প্রাপ্তি। গ্রামে রয়েছে একটি অতি প্রাচীন গির্জা ও একটি গুম্ফা। আর সেই ঝর্না। তার আশপাশের দৃশ্য নাকি অনির্বচনীয়। সব ধর্মের মানুষের অপূর্ব সহাবস্থান এই গ্রামে। সবগুলি উৎসবই পালিত হয় অনাড়ম্বর অথচ আন্তরিক আবেগের উচ্ছ্বাসে। দুর্গাপুজোতেও দেখলাম সেই ছবি।

কালিম্পং থেকে মাত্র ২১ কিমি দূরত্বে অবস্থিত কাগে। এখান থেকে যাওয়া যায় লাভা, লোলেগাঁও, খোলাখাম, রিশপ, সিলেরি গাঁও, ঋষিখোলা। পেডংয়ের কথা তো আগেই বললাম। আর একটু দূরে গেলেই ডুয়ার্স। ট্রেকিংয়ের জন্য বিশেষ আকর্ষণীয় কাগে। নেচার স্টাডির জন্যও বটে। প্রচুর বিরল জাতের গাছগাছালি রয়েছে জঙ্গলে। আর আছে পাখি ও প্রজাপতি। বন্যজন্তুর মধ্যে লেপার্ড। মোট কথা প্রাকৃতিক ও ভৌগোলিক ভাবে এর পর্যটন সম্ভাবনা যথেষ্ট। কিন্তু রাস্তার সমস্যায় সেই সম্ভাবনার পথ উন্মুক্ত হতে পারে না। হোমস্টে’র মালিক আক্ষেপ করে সেটাই বলেন। আমার ঘুরে আসর পর অনেকগুলো বছর চলে গেছে। আশা করি, এখন কিছুটা সুরাহা হয়েছে ওদের চাহিদাগুলির।

এই অনেক বছরেও ভুলিনি সেই ছোট্ট গ্রামের কুমারী সৌন্দর্য। মুদুমের মিষ্টি গান। গ্রামের মানুষের অনাবিল আন্তরিকতা। হোমস্টে মালকিনের যত্ন। শুধু পরিবার নয়, পুরো গ্রামের ওপর তাঁর কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ। সবার সব সমস্যার সমাধান ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ আছে ওঁর ঝুলিতে। সদা হাস্যময়ী সেই নারীকে দেখে দারুন অনুপ্রাণিত হই, আজও মনে আছে । কাছেই একটা স্কুলে শিক্ষকতা করেন। তার সঙ্গে যাবতীয় গৃহকর্ম। গ্রামের এটা-ওটা। তারই মধ্যে আমাদের মতো অতিথিদের দেখভাল। শুধু খাওয়া-দাওয়া ইত্যাদি নয়, গল্পে, সাহচর্যে। কি সুন্দর একটি ফুলের বাগান রচনা করেছেন বাড়িতে। আদতে জেলা কালিম্পং হলো ফুল-পাতা-অর্কিডের স্বর্গ। এই গ্রামের ঘরে ঘরে সেই সৌন্দর্য ছড়ানো।

যাওয়ার জন্য উপযুক্ত সময় হলো অক্টোবর থেকে মার্চ। আরামদায়ক আবহাওয়া। ঝর্না ও নদীর শোভা দেখতে চাইলে বর্ষা। তবে, ধস নেমে আটকে পড়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কাঞ্চনজঙ্ঘা সবচেয়ে ভালো দৃশ্যমান শীতে। প্রত্যন্ত অঞ্চল। তাই সঙ্গে রাখুন জরুরি ওষুধ, টি ব্যাগ, কফি, বিস্কুট, জল গরম করার ইলেকট্রিক কেটলি ও টর্চ। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন, বাগডোগড়া এয়ারপোর্ট, শিলিগুড়ি তেনজিং নোরগে বাসস্ট্যান্ড থেকে কালিম্পং চলে আসুন শেয়ার গাড়িতে। তেনজিং নোরগে থেকে বাসও পাবেন। কালিম্পং থেকে পেডং হয়ে কাগে। সরাসরি গাড়ি রিজার্ভ করেও আসতে পারেন। তাতে খরচ একটু বেশি পড়ে। হোমস্টে-র থাকা-খাওয়ার রেট দিনপ্রতি জনপ্রতি ১২০০ টাকা। কালিম্পং থেকে পিক আপের ব্যবস্থা করেন এঁরা। এছাড়া ট্রেকিং, লোকাল সাইট সিয়িংয়ের জন্য গাইড গ্রামে পাওয়া যায়। বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ : 9933615828

★★ যখনই বেড়াতে যাবেন (নিয়মিত বিভাগ)

🌈 প্যাকিং ফান্ডা

🔺কি কি নিয়ে যাবেন তার একটা লিস্ট বানিয়ে ফেলুন চটপট। এটা বেশ কয়েকদিন আগেই করুন। এতে জরুরি ও প্রয়োজনীয় জিনিস ভুলে যাওয়ার ভয় থাকবে না।

🔺ব্যক্তিগত জরুরি জিনিস, টাকাপয়সা, ট্রেন বা ফ্লাইটের টিকিট, হোটেলের বুকিং স্লিপ ইত্যাদি এমন জায়গায় রাখুন যা হাতের কাছে থাকবে অথচ বিশেষ যত্ন-খেয়ালও রাখা যাবে। ক্যামেরা, ল্যাপটপ ব্যাগের ক্ষেত্রেও একথা প্রযোজ্য।

🔺 ফার্স্ট এড বক্স, সাধারণ জরুরি ওষুধ এবং আপনি নিয়মিত যে ওষুধ খান তা যথাযথ পরিমানে সঙ্গে রাখুন।

🔺 টর্চ-মোম-দেশলাই অবশ্যই রাখতে হবে।

🔺সানগ্লাস, ছাতা ও বর্ষাতি রাখতে পারলে ভালো।

🔺ভাঁজ নয় জামাকাপড় ফোল্ড করে প্যাক করলে কম জায়গায় বেশি পোশাক আঁটবে। আর জামাকাপড়ের ভাঁজও নষ্ট হবে না।

🔺জামাকাপড়-জুতো ও অন্যান্য সরঞ্জাম নিন কোথায় যাচ্ছেন, সেই অনুসারে। যেমন, পাহাড়-জঙ্গল-সি বিচ যেখানে, সেখানে হিলতোলা  জুতো নয়, স্পোর্টস শু জাতীয় হলে ভালো। আর পোশাকও প্রয়োজনের অতিরিক্ত নয়। প্রসাধনী ও রূপচর্চার উপকরণও যেটা না হলে নয়, ততটুকুই। মনে রাখুন, বোঝা বাড়ালে পথে চলাফেরায় কষ্ট। শীতের জায়গায় যথেষ্ট শীতপোশাক রাখুন সঙ্গে।

 🔺গ্রাম বা প্রত্যন্ত অঞ্চলে গেলে সঙ্গে রাখুন কিছু শুকনো খাবার, টি ব্যাগ, কফি পাউডার, গরমজল করার ইলেকট্রিক কেটলি, কাগজের কাপ ও প্লেট, টিস্যু পেপার।

Whatsapp Image 2022 05 11 At 4.24.38 Pm 1

🌈 যাওয়ার আগে কি কি করবেন

◾যথাসম্ভব জায়গাটা সম্পর্কে আগাম খোঁজখবর নিয়ে নিন। স্পটে গিয়ে কি কি দেখবেন, কিভাবে সময় কাটাবেন, তার একটা ধারণা থাকলে সুবিধা হবে আপনার। বাজেট করা ও প্যাকিংয়ের ক্ষেত্রেও এটা জরুরি।

◾জেনে নিন, কাছাকাছি এটিএম, প্রয়োজনে ডাক্তারের ব্যবস্থা আছে কিনা। না থাকলে সেই অনুসারে আপনাকে প্রস্তুত থাকতে হবে।

◾চেষ্টা করবেন থাকা-খাওয়া-যাতায়াত-সাইট সিয়িং-শপিং ইত্যাদি খরচাপাতির জন্য একটা নির্দিষ্ট বাজেট করে নেওয়ার।

◾বেড়াতে গিয়ে যাতে অসুস্থ না হয়ে পড়েন, তার জন্য আগে থাকতেই প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।

🌈 আগাম বুকিং এবং

এটা একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও বিতর্কিত দিক। যাঁরা হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়েন, দল বেঁধে বা একা এবং বুকিংয়ের তোয়াক্কা করেন না, তাঁদের জন্য এই বিভাগ নয়। যাঁরা কিছুটা নির্ঝঞ্ঝাট বেড়ানো পছন্দ করেন, পরিবার পরিজন নিয়ে ভ্রমণ করেন, তাঁরা সচরাচর এডভান্স বুকিং না করে যান না। আমি নিজেও সেভাবেই সারা জীবন ঘুরেছি। এই বুকিংয়ের ক্ষেত্রে অনেকসময়ই এজেন্ট, পাহাড়ের ক্ষেত্রে হোমস্টে মালিক এবং সংশ্লিষ্ট লোকজনের সঙ্গে পর্যটকদের নানা বিষয়ে অশান্তির কথা শোনা যায়। এক্ষেত্রে যে সাবধানতা গুলি অবলম্বন করা যেতে পারে—

■ এজেন্ট সম্পর্কে ভালো করে আগে খোঁজ নিন

■পাহাড়ের হোমস্টে মালিকরা এমনিতে সৎ। কিন্তু ততটা পেশাদার এখনও নয়। কথাবার্তা, আদানপ্রদানের ক্ষেত্রেও ওদের কিছুটা সমস্যা আছে। ওদের ক্ষেত্রে বার বার জিজ্ঞেস করে, ভাষার কোনও সমস্যা থাকলে, সেটা কাটিয়ে উঠে, নিজের চাহিদা পূরণের ব্যাপারটা আগে থেকে বুঝে নিন।

■ কোনও কারণে বেড়াতে যাওয়া ক্যান্সেল হলে এডভান্স বুকিংয়ের টাকা ফেরত দেওয়া হয় না, এটাই নিয়ম। একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আপনার টাকা গচ্ছিত থাকবে ওই এজেন্ট, হোমস্টে মালিকের কাছে এডভান্স হিসেবেই। সেই সময়ের মধ্যে আপনি যেতে পারবেন সেখানে। এই বিষয়টিও বুকিংয়ের সময় পরিষ্কার করে নেওয়া ভালো।

🌈 কি করবেন

◾মানিয়ে চলার চেষ্টা করুন। যেখানে গেছেন, সেখানকার পরিবেশের সঙ্গে যত বেশি মানিয়ে চলবেন, তত মজা-খুশি-আনন্দ অনন্য প্রাপ্তি হয়ে ধরা দেবে আপনার অভিজ্ঞতায়।

◾যথাসম্ভব পায়ে হেঁটে ঘুরুন। এতে জায়গাটির সত্যিকারের এসেন্সটা পাবেন।

◾জেনে নিন এলাকার মানুষের জীবন, তাদের শিল্প-সংস্কৃতি, প্রকৃতি ও ইতিহাস।

🌈 কি করবেন না

◾যত্রতত্র প্লাস্টিক, আবর্জনা ইত্যাদি ফেলে পরিবেশ নষ্ট করবেন না।

◾লক্ষ্য রাখুন আপনার আনন্দ-উল্লাস যেন অপরের বিরক্তির কারণ না হয়ে দাঁড়ায়।