প্রতিবাদের সস্তা নাটক
কলকাতায় পারফর্ম করতে এসে জনপ্রিয় গায়ক কেকে’র আকস্মিক ও অকালমৃত্যু এবং তার ঠিক আগেই বাংলার গায়ক রূপঙ্করের তাঁর সম্পর্কে উক্তি ‘হু ইজ কেকে’–আপাতত এই নিয়ে বাজার বিশেষভাবে গরম। মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়া দুইই বিপুলহারে সক্রিয় রূপঙ্করের আচরণের কাটাছেঁড়ায়। অথচ পুরোটাই দুর্ভাগ্যজনকভাবে কাকতালীয়। এ দুর্ভাগ্য বা দুর্ভোগ রূপঙ্করের নিজের না সামগ্রিকভাবে বাংলার সাংস্কৃতিক সমাজের, এই মুহূর্তে বলা মুশকিল।
কেকে’র এই মৃত্যু চরম বেদনাদায়ক। রূপঙ্করের উক্তিও সমর্থনযোগ্য নয়। তবু, দুটি ঘটনাকে মিলিয়ে যেটা করার চেষ্টা চলছে, সেটা প্রতিবাদ নয়। প্রতিবাদের নামে একটি সস্তা নাটক। সবচেয়ে বড় কথা, বিষয়টা আর থামছেই না। মনে হচ্ছে যেন, আমাদের চারপাশের বাকি সব সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। সোস্যাল মিডিয়ার কথা ছেড়েই দিলাম। এটা তো আমাদের অবকাশ যাপনের, সস্তা বিনোদনের সবচেয়ে প্রকৃষ্ট প্ল্যাটফর্মে পরিণত আজ। মেনস্ট্রিম মিডিয়াও কিছু কম যাচ্ছে না। সেখানেও ঘুরেফিরে একই খবর।
পর্যায়ক্রমটা এইরকম–প্রথমে রূপঙ্কর যেটা বললেন, সেটা ট্রোল্ড হলো। তারপর কেকে’র মৃত্যু। সেটাকে জড়িয়ে একপ্রস্থ চললো। রূপঙ্কর সাংবাদিক সম্মেলন করে ক্ষমা চাইলেন, সেটা নিয়েও ব্যঙ্গ,বিদ্রুপ, টিটকিরি চললো কয়েকদিন। তাঁর সঙ্গীত জগতের সতীর্থরা রূপঙ্করের বিরুদ্ধে বললেন, সেটাও চর্চায় এলো। একই বিষয় নিয়ে ক্লান্তিহীন চর্চা, কতটা অলস, অকর্মন্য হলে একটা জাতি করে যেতে পারে–এ ঘটনা তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ। আবারও বলছি, রূপঙ্করের প্রথম বক্তব্য আমরা একেবারেই সমর্থন করি না। কিন্তু কেকে’র মৃত্যুর দায় তাঁর কাঁধে বর্তায় না। এখানে তেমনই একটা চেষ্টা চলছে, যা সমর্থনযোগ্য নয়।