রসে রসনায় – পর্ব ০৬
এই কলমে থাকছে দুটি করে রেসিপি। প্রকাশিত হচ্ছে প্রতি পনের দিন অন্তর। এই সপ্তাহে আমিষ দুটি পদের রেসিপি জানিয়েছেন রিংকু মিত্র।
◾ঢাকাই মুরগি, সঙ্গে ঘি ভাত বা পোলাও
মুরগির ঝোল, কষা ইত্যাদি চেনা পদে পরিবারের সকলের অরুচি ধরে গেছে ? চাইছেন খাবার টেবিলে মুরগির একটু অন্যরকম একটি পদ বানিয়ে, সবাইকে চমকে দিতে ? আপনারা যাঁরা এইরকমই একটু ব্যতিক্রমী পথে হাঁটতে চাইছেন, তাঁদের জন্যই আজকের এই আয়োজন। এমনিতে ভাত, রুটি, পরোটা–সবকিছুর সঙ্গেই ভালো লাগে ঢাকাই মুরগি। তবে, ঘি ভাত হলে একেবারে জমে যাবে ব্যাপারটা। তাই সেটার রেসিপিও দিয়ে দিলাম সঙ্গে। আমি এখানে ৩/৪ জনের আন্দাজে রেসিপি দিলাম।
উপকরণ
- মুরগির মাংস ৫০০ গ্রাম
- পেঁয়াজ ১টা বড়
- রসুন ১টা মাঝারি
- আদা ১ ইঞ্চি
- কাঁচা লঙ্কা ৩/৪টে
- ধনে পাতা সামান্য
- গোটা গরম মশলা ১ টেবল চামচ
- জায়ফল খুব ছোট ১ টুকরো (একটা গোটা জায়ফলের ৬ ভাগের ১ ভাগ)
- জয়িত্রী ১টা ফুল
- গোলমরিচ গুঁড়ো ১ টেবল চামচ
- দুধ ১ কাপ
- দই ১ কাপ
- ঘি ১ টেবল চামচ
- সাদা তেল ১ টেবল চামচ
- চিনি ১ চা চামচ
- নুন স্বাদমতো
- গোলাপ জল ১ চা চামচ
***গোলাপ জল বা ধনে পাতা–যে কোনও একটা দেবেন।
প্রণালী
মুরগি ধুয়ে জল ঝরিয়ে নুন আর গোলমরিচ মাখিয়ে রাখুন।
এরপর পেঁয়াজ, রসুন, আদা, কাঁচা লঙ্কা, গোটা গরম মশলা, জায়ফল, জয়িত্রী, গোলমরিচ গুঁড়ো, দুধ, দই সব মিক্সিতে দিয়ে মশলার একটা পেস্ট মতো বানিয়ে নিন।
এবার মুরগিতে এই পেস্ট মাখিয়ে দশ মিনিট রেখে দিন।
উনুনে কড়াই (শুকনো করে মুছে নেবেন) বসিয়ে, তাতে তেল আর ঘি দেওয়ার পর গ্যাস জ্বালিয়ে তেল-ঘি গরম করুন।
এরপর তাতে মুরগি দিয়ে, চড়া আঁচে পাঁচ মিনিট ভাজুন। আঁচ কমিয়ে ঢাকা দিন। নুন-চিনি দিয়ে দিন।
মাঝে মাঝে ঢাকা খুলে নাড়াচাড়া করবেন।
মুরগি সেদ্ধ হয়ে এলে, প্রয়োজন মতো গরমজল দিন। এটা কিন্তু একটি অল্প ঝোলের রান্না। তাই সেই বুঝেই জল দেবেন।
নামানোর আগে গোলাপ জল বা ধনে পাতা কুচি দিয়ে একটু ঢাকা দিয়ে রাখুন। ব্যস ঢাকাই মুরগি রেডি।
ঘি ভাত বা পোলাও
উপকরণ
- গোবিন্দভোগ চাল ২ কাপ
- ঘি ৪ টেবিল চামচ
- গোটা গরম মশলা এক টেবিল চামচ (ছোট এলাচ, দারুচিনি, লবঙ্গ)
- কাজু, কিশমিশ মিলিয়ে ১ কাপ
- দুধ ২ কাপ
- কাঁচা লঙ্কা ২টি
- আদা বাটা ১ চা চামচ
- নুন-চিনি স্বাদ মতো
প্রণালী
চাল আগে ধুয়ে শুকনো করে নিন। একদম ঝরঝরে হবে এমন।
এবার এতে ১ চামচ ঘি, আদা বাটা আর নুন দিয়ে মাখিয়ে রাখুন।
কড়াতে ৩ চামচ ঘি দিন। কাজু-কিশমিশ ভেজে তুলে নিন। এবার এই ঘিয়েই গোটা গরম মশলা দিয়ে, চালটা কম আঁচে খুব ভালো করে ভাজুন। চাল সঠিক মাত্রায় ভাজার ওপর এর স্বাদ নির্ভর করবে।
পোলাও-এর গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো জল বা দুধের মাপ। আমি জল ব্যবহার করি না। কম আঁচে চাল ভাজা যখন স্বচ্ছ হয়ে আসবে, তখন দুধটা দিয়ে দিন।
ভালো করে নাড়িয়ে, নুন দিয়ে, দু মিনিট চড়া আঁচে রেখে আঁচ কমিয়ে দিন। এখন চিনি দিন। কাঁচা লঙ্কা দুটোও দিয়ে দেবেন।
মাঝে মাঝে নাড়াতে থাকুন।
চাল সেদ্ধ হয়ে এলে কাজু-কিশমিশ দিয়ে দিন। নুন-মিষ্টি দেখে নিন।
ওপর থেকে আরেকটু ঘি দিতে পারেন। ঢাকা দিয়ে দশ মিনিট রেখে দিন। তারপর পরিবেশন করুন।
◾এগ মালাই মশালা
ঘরে ডিম থাকলে, আর কী চাই ? চটজলদি কত রকম পদ যে বানিয়ে নেওয়া যায় ! স্বাদ বদলেও জুড়ি নেই সেই সব পদের। আজ তেমনই একটি রেসিপি জানাচ্ছি তিনজনের জন্য।
উপকরণ
ডিম ৩টি
১ টি বড় পেঁয়াজের অর্ধেক
কাঁচা লঙ্কা ২/৩টি (যে যেমন ঝাল খান)
রসুন ৫/৬ কোয়া
ধনে পাতা ১ গুছি
১ কাপ দুধ
সাদা তেল ২ টেবল চামচ
নুন-চিনি আন্দাজ মতো
প্রণালী
ডিম সেদ্ধ করে নিন।
পেঁয়াজ, রসুন, কাঁচা লঙ্কা, ধনে পাতা বেটে নিন।
কড়াতে সাদা তেল দিন। গরম হলে ডিম একটু নুন মাখিয়ে হালকা ভেজে তুলে নিন।
এরপর ওই তেলে বাটা মশলা দিয়ে দিন। ভালো করে কষাতে থাকুন।
তেল ছেড়ে গেলে তাতে দুধটা দিয়ে দিন। নুন-মিষ্টি দিন। ঝোল ফুটে একটু ঘন হলে, ভাজা ডিমগুলো দিয়ে দিন। নামিয়ে একটা লঙ্কা কুচিয়ে ওপরে দিতে পারেন। এটা অবশ্য অপশনাল। গরম গরম রুটি বা পরোটার সঙ্গে পরিবেশন করুন।