চিনি থুড়ি বাজেট কমই কারণ…
বিনোদন দুনিয়ার টক-ঝাল-মিষ্টি খবর এই কলমে। লিখছেন সোমদত্তা রায়।
শুরু থেকেই সাবলীল ও স্বাভাবিক অভিনয়ে বাংলা বিনোদনপ্রেমী দর্শকের হৃদয় অধিকার করে নেন ছিপছিপে চেহারার এই তরুণী। টেলিভিশনে শুরু। প্রথম দুটি মেগা ‘সবিনয় নিবেদন’ ও ‘কেয়ার করি না’ থেকেই নজর কেড়ে নেন তিনি। আর ‘বোঝেনা সে বোঝেনা’র পর তো ছোটপর্দার দর্শকের ঘরে ঘরে পৌঁছে যায় পাখির নাম। এহেন পাখি থুড়ি মধুমিতা সরকার এখন আর অবশ্য অন্দরের পর্দায় আবদ্ধ নন। পাখির উড়ান আজ অনেক বড় আকাশে। স্টার জলসার পরের ধারাবাহিক ‘কুসুম দোলা’র পর আর একটু জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন মধুমিতা। তারপর সিনেমা, ওয়েব সিরিজ–সর্বত্র অবাধ গতি এই প্রতিভাময়ী কন্যার।
মধুমিতা ইতিমধ্যেই পা রেখেছেন বড় পর্দায়। বাংলা ছবিতে অল্প কিছু কাজ করলেও, স্থায়ী ছাপ রাখতে সক্ষম হয়েছেন দর্শক মনে। তাঁর অভিনীত ‘চিনি’ একই সঙ্গে বাণিজ্য সফল ও সমালোচকদের প্রশংসা পেয়েছে। এর সঙ্গেই নাম করতে হয় ‘কুলের আচার’ ছবিটির কথা। এ ছবিতেও অভিজ্ঞ অভিনেতাদের পাশে নজর কেড়ে নেন মধুমিতা। সদ্য মুক্তি পেয়েছে ‘চিনি ২’! পরিচালক শিলাদিত্য মৌলিকের আগামী ছবি ‘কে প্রথম কাছে এসেছি’-র শুটিং শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। ওয়েব সিরিজ ‘উত্তরণ’, ‘শ্রীকান্ত’ ও ‘জাতিস্মর’–সব ক্ষেত্রেই তিনি উজ্জ্বল ও সপ্রতিভ। মোদ্দা কথা, কাজের মধ্যেই আছেন তিনি।
এহেন মধুমিতার হিন্দি ছবি ‘ফর্জ’-এ সুযোগ পাওয়ার মাধ্যমে বলিউডে পা রাখার খবর সংবাদ মাধ্যমে আসা এবং পরে সেই ছবির স্থগিত হওয়ার বার্তা প্রচার। এই পুরো বিষয়টি নিয়ে একশ্রেণির সংবাদ মাধ্যম যা করে চলেছে, তা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। বিশেষত, একশ্রেণির পত্রপত্রিকা এই খবরটিকে মুখরোচক আকারে প্রকাশ করতে গিয়ে এমনভাবে বিষয়টি আনছে জনসমক্ষে, যেন এটা মধুমিতারই ব্যর্থতা !! তারা খবরের হেডিং করছে–’শুরুর আগেই ধাক্কা খেলেন মধুমিতা’ বা ‘যাওয়া হলো না মধুমিতার’ ইত্যাদি ইত্যাদি।
এসবের মানে কী ? যা খুশি একটা লিখে দিলেই হলো নাকি ? ছবির কাজ বন্ধ। কারণ হিসেবে একটি প্রথম সারির সংবাদপত্র জানাচ্ছে, ছবির জন্য অত্যধিক বাজেট বরাদ্দ হয়েছে, যা এখনও যোগাড় করে উঠতে পারেনি প্রযোজক সংস্থা। ফলে ছবি শুটিং ফ্লোরে যাবার জন্য তৈরি থাকা সত্বেও কাজ বন্ধ করতে হয়েছে। এটা সম্পূর্ণভাবেই পরিচালক প্রীতম মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রযোজকদের সমীকরণের ব্যাপার। এখানে অভিনেতাদের ভূমিকা কোথায়?
তবে, এই প্রেক্ষিতেই উঠে আসে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা। যদি বৃহত্তর পটভূমিতে দেখি, তাহলে, এখনও মধুমিতা কেরিয়ারের একেবারে প্রথম ধাপেই দাঁড়িয়ে। তাঁর মধ্যে যে যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে, সেটা প্রমাণিত। আম জনতার মধ্যে তাঁকে কেন্দ্র করে একটা চাহিদাও তৈরি হয়েছে। শুধু দরকার একটু বিচক্ষণতা। জরুরি, মাপা পদক্ষেপ। যে ছবি ঘোষণার পরও বাজেটের জন্য ফ্লোরে যেতে পারে না, সে ছবি নির্মাণের গোড়াতেই গলদ রয়েছে। আশা করা যায়, এ ঘটনা মধুমিতাকে হতাশ নয়, ভবিষ্যতে ভেবে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।