Monday, February 3, 2025
বিনোদনের ছোট বাক্স

জমে উঠেছে ‘কথা’-কাহিনি

আকারে ছোট হলেও বিনোদন ক্ষেত্রে টেলিভিশনের গুরুত্ব আজ অসীম। মেগা থেকে রিয়ালিটি, গেম শো থেকে ম্যাগাজিন–টিভি শোয়ের চাহিদা ছিল, আছে, থাকবে। এই বিভাগে তারই খবর প্রতি সপ্তাহে। এই সপ্তাহে জনপ্রিয় টার্কিশ সিরিজ ‘বিনবির গেস‘ অবলম্বনে তৈরি হিন্দি মেগা ‘কথা আনকহী‘ নিয়ে লিখেছেন মৃণালিনী ঠাকুর

সিঙ্গেল পেরেন্ট, আরও ভালো করে বলার, একাকী মা ‘কথা’-কাহিনি এই মুহূর্তে বেশ জমে উঠেছে সোনি এন্টারটেনমেন্ট টেলিভিশনের পর্দায়। পরীক্ষাধর্মী কনটেন্ট নির্মাণে বরাবরই অগ্রণী সোনি। আলোচ্য মেগা ধারাবাহিকটিও তার ব্যতিক্রম নয়। ধারাবাহিকের শুরুটা হয় এভাবে–অকালপ্রয়াত স্বামীহারা কথা’র জীবন আবর্তিত একমাত্র সন্তান, ছেলে আরভকে ঘিরে। সেই আরভ রক্তের ক্যান্সারে আক্রান্ত। ব্যয়সাপেক্ষ চিকিৎসার টাকা যোগাড়ের চেষ্টায় পাগলের মতো হন্যে হয়ে ঘুরছে কথা। সারাদিন ধরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নানা ধরণের কাজ করে চলে সে এই কারণেই। আর এভাবেই কথার পরিচয় হয় ভিয়ানের সঙ্গে। ভিয়ান রঘুবংশী এক ধনী ব্যবসায়ী তরুণ, আর্থকন নামের এক বৃহৎ সংস্থার সিইও। সে মনে করে মহিলারা পুরুষের কাছে আসে শুধু অর্থের জন্য। এহেন ভিয়ান কথাকে অর্থ সাহায্য করে শর্তসাপেক্ষে। আর্থকনে চাকরি পায় কথা। অর্থাৎ কথা ও ভিয়ানের পরিচয়ের শুরুটাই হয় এক অস্বাভাবিক পরিপ্রেক্ষিতে।

আর্থকনের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে সেলিব্রেশন পার্টি হবে। তার জন্য ডিজের ব্যবস্থা করতে মিউজিশিয়ানের কাছে যায় কথা। সেখানেই কীথের সঙ্গে দেখা হয় কথার। কীথ আর্থকনের বিষয়ে জানা মাত্রই কথাকে বলে ভিয়ানকে কোনও ভাবে কীথের অফিসে নিয়ে আসার জন্য। ভিয়ানকে সারপ্রাইজ দিতে চায় কীথ। যাই হোক, কথা ভিয়ানকে কীথের অফিসে হাজির করে। ভিয়ান তার শৈশবের বন্ধু কীথকে দেখে যথার্থই বিস্মিত হয়। এহেন মজাদার পরিস্থিতিতেই কথার পরিচয় হয় কীথের সঙ্গে। আর দুজনের মধ্যে হৃদ্যতা জন্মায় সহজেই। কারণ কীথ ভিয়ানের তুলনায় সহজ সরল। কীথের কাছে কথা ভিয়ান সম্পর্কে অনেক গোপন তথ্য জানতে পারে। ভিয়ান বিচিত্র স্বভাবের এক মানুষ। একদিকে সে নারীবিদ্বেষী। অন্যদিকে তার মন অপরের দুঃখে ব্যথিত হয়। লুকিয়ে কবিতাও লেখে সে। কথাকে কীথ ভিয়ানের সম্পর্কে জানিয়েছে–এটা জেনে ভিয়ান বেশ অস্বস্তি অনুভব করে। কিন্তু কেন ?

এরই পাশাপাশি কথার জীবনে ঘটছে আরও একটি নাটকীয় পরিবর্তন। চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠেছে আরভ। হাসপাতালে থাকাকালীন খবর পেয়ে, তাকে দেখতে আসে আরভের ঠাকুমা। আদতে আরভের বাবা, কথার প্রয়াত স্বামী আদিত্যও ধনী গেরেওয়াল পরিবারের সন্তান। কথাকে পরিবারের বিরুদ্ধে বিয়ে করায়, বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়েছিল মানুষটি। এখন তার অবর্তমানে আরভকে আঁকড়ে ধরতে চাইছেন তার ঠাকুমা। বাড়ির এক অনুষ্ঠানে কথা ও আরভকে আমন্ত্রণ জানান তিনি। আরভের দাদু আরভকে দেখে, একই সঙ্গে নিজের মৃত সন্তানের জন্য শোকাকুল হন, অন্যদিকে আরভকে দেখে এক অচেনা আবেগে ভরে ওঠে তাঁর হৃদয়। আরভ যাওয়া-আসা শুরু করে তার দাদুর বাড়িতে। এতে পরিবারের সকলেই যে খুশি হয়, তা নয়। আরভের জেঠিমা রীত ঈর্ষায় কাতর হয়ে পড়ে। এই পরিবারের বিশাল সম্পত্তির আরভও একজন ভাগীদার, সেটা মেনে পারে না রীত। একদিন একটু বেশি রাতে কথাকে ভিয়ানের সঙ্গে গাড়িতে দেখে সে রাস্তায়। রীত কলঙ্কিত করার চেষ্টা করে কথাকে। পর্বে পর্বে এমনই নাটকীয় ঘটনার ঘনঘটায় জমে উঠেছে এই হিন্দি ধারাবাহিক।

জনপ্রিয় টার্কিশ সিরিজ ‘বিনবির গেস’ অবলম্বনে হিন্দি মেগা ‘কথা আনকহী’ সোনি এন্টারটেনমেন্ট টেলিভিশনে গত ডিসেম্বরে শুরু হওয়ার পর থেকেই রীতিমতো দর্শকধন্য হয়। কনটেন্ট নিঃসন্দেহে এর বড় কারণ। এছাড়াও অদিতি শর্মা (কথা) ও আদনান খানের (ভিয়ান) অনস্ক্রিন কেমিস্ট্রি ধারাবাহিকের নাটক জমিয়ে তোলায় কার্যকর হয়েছে বলে মনে করছেন প্রযোজকরা। যদিও প্রথমে ভিয়ান চরিত্রের জন্য ছোটপর্দার জনপ্রিয় মুখ মোহিত মালিককে ভাবা হয়। ব্যস্ততায় সময় দিতে পারেননি মোহিত। অতএব আদনানের প্রবেশ। প্রসঙ্গত, অদিতি শর্মা ও আদনান খান এই প্রথম জুটি বেঁধেছেন মেগার কাহিনিতে। স্পিয়ার অরিজিনস-এর ব্যানারে ‘কথা আনকহী’ প্রযোজনা করেছেন সুঞ্জয় ওয়াদ্ধা। পরিচালনা রবি ভূষণ। অভিনয়ে অন্যান্যদের মধ্যে আছেন সমর ভারমানি (কীথ),আজিনক্য মিশ্র (আরভ), বিশাল মালহোত্রা, শীন দাস, পৃথি আমিন, বিদিশা ঘোষ শর্মা, গিরীশ সহদেব, জ্যোতি গাউবা, বিনয় রোহরা প্রমুখ। দেখছেন সোম থেকে শুক্র রাত ৮.৩০ মিনিটে।