Monday, May 12, 2025
ওয়েব-Wave

প্রতিশোধের আগুন মহাভারত মার্ডারস-এ

লিখেছেন মৃণালিনী ঠাকুর

শ্বাশ্বত চ্যাটার্জি এই মুহূর্তে বাংলার অন্যতম সেরা অভিনেতা। কিছু ক্ষেত্রে তো অতুলনীয় তিনি। অপরিহার্যও বটে ! এহেন শ্বাশ্বত অভিনয় করেছেন সৌমিক হালদারের ‘মহাভারত মার্ডারস’-এ, এ খবরে মনে পুলক জাগারই কথা। অন্যদিকে সৌমিক এই সময়ের একজন অত্যন্ত প্রতিভাবান ও ব্যতিক্রমী ধারার পরিচালক। বস্তুত, হইচই চ্যানেলের নয়া নিবেদন বাংলা সিরিজ ‘মহাভারত মার্ডারস’ যে নতুন ও অভিনব দর্শনের অভিমুখে নিয়ে যাবে দর্শককে, তার সূত্রটি বাঁধা সৌমিকের হাতেই। বলা বাহুল্য, সেখান থেকেই দর্শক প্রত্যাশা তুঙ্গে ওঠে। এরই সঙ্গে উল্লেখ করতে হয়, লেখক অর্ণব রায়ের কথা। ‘মহাভারত মার্ডারস’ নামেই লেখা তাঁর উপন্যাস এই সিরিজের আধার।

অভিনয়ে শ্বাশ্বত ছাড়াও আছেন প্রিয়াঙ্কা সরকার, অর্জুন চক্রবর্তী, ঋষভ বসু, কৌশিক সেন, রাজদীপ গুপ্ত ও দেবাশিস মণ্ডল। অভিনয়ে এঁরাও কেউ কম যান না। ১২ পর্বের এই সিরিজ দেখানো শুরু হয়েছে সম্প্রতি। প্রতি পর্বের সময়সীমা ২৫ মিনিট। একজন সিরিয়াল কিলার, যে কিনা আজকের সময়ের দুর্যোধন বলে নিজেকে মনে করে। আর সে খুন করে চলে তাদেরই, যাদের সে একালের পাণ্ডব বলে ধরে নিয়েছে। ইনভেস্টিগেটিং অফিসার রুকসানা এবং সিদ্ধার্থ রঙ্গমঞ্চে প্রবেশ করতেই একের পর এক টুইস্ট। একবিংশ শতাব্দীর কুরুক্ষেত্র বাঙ্ময় হয়ে ওঠে দর্শকের সামনে। এমন জটিল এক অপরাধী মনকে খুঁজে বের করা সহজ নয়। তদন্তে কী কী উঠে আসে আর কে এই প্রতিশোধ নাটকের পিছনে, সেটা জানতে অবশ্যই আপনাকে দেখতে হবে এই সিরিজ।

Images 3 14
প্রতিশোধের আগুন মহাভারত মার্ডারস-এ 4

আগেই বলেছি অভিনব ভাবনা। তার সঙ্গে নিশ্চয়ই যোগ করবো, রহস্যে টানটান হওয়ার ফলে এর তীব্র আকর্ষণের দিকটা। শুরু থেকেই রহস্য ঘন আকার ধারণ করে। একেবারে মেদহীন এর চিত্রনাট্য। বলা বাহুল্য, যাঁরা উপন্যাসটি পড়েননি, তাঁদের জন্য প্রাপ্তির রসদ একটু বেশি। তাঁরা এতে অতি দ্রুত সংপৃক্ত হয়ে যাচ্ছেন এই কারণেই। প্রথম পর্বগুলিতে মনে হবেই, এই লোকটি নিষ্ঠুরতার এমন পর্যায়ে কেন নিজেকে নিয়ে যাচ্ছে ? এই হত্যার পিছনে কী তার উদ্দেশ্য ! পর্বের সময়সীমা কম থাকাটা প্লাস পয়েন্ট হয়েছে সিরিজের ক্ষেত্রে। লোকজন দেখার পরও ভাবছেন, কী হচ্ছে, কেন হচ্ছে ! খুন ছাড়াও ‘মহাভারত মার্ডারস’-এ আছে ড্রাগচক্র ও অন্যান্য অপরাধ।

Images 3 12
প্রতিশোধের আগুন মহাভারত মার্ডারস-এ 5

থ্রিলারের যাবতীয় চরিত্র বজায় রাখার পাশাপাশি চরিত্রগুলি ডেভেলপ করার ক্ষেত্রে বাড়তি উপাচার যুক্ত করা হয়েছে। যার ফলে, দর্শকরা তাঁদের ভাবনার খোরাক পেয়ে চলেছেন অবিরত। মনস্তত্ত্বের একাধিক স্তরে যে অপরাধীর বিচরণ, তার কাছে পৌঁছতে তদন্তকারীদেরও সেই পথ অবলম্বন করতে হচ্ছে। বহু না বলা কথা বুঝে নেবার জন্য নিজেদের বুদ্ধির গোঁড়ায় ধোঁয়া দিতে হচ্ছে দর্শককেও। এটাও বিশেষ প্রাপ্তি অবশ্যই। দ্রৌপদী পর্ব দিয়ে শুরু। আর কোথায় গিয়ে এই হত্যা সিরিজের শেষ, আপাতত ধূসর রহস্যে ঢাকা। সব মিলিয়ে বলতে পড়ি হইচই দর্শক আপাতত বুঁদ একালের ‘মহাভারত মার্ডারস’-এ।