ভূস্বর্গ কাশ্মীরে টিম ‘ঝনক’
আকারে ছোট হলেও বিনোদন ক্ষেত্রে টেলিভিশনের গুরুত্ব আজ অসীম। মেগা থেকে রিয়ালিটি, গেম শো থেকে ম্যাগাজিন–টিভি শোয়ের চাহিদা ছিল, আছে, থাকবে। এই বিভাগে তারই খবর প্রতি সপ্তাহে। ম্যাজিক মোমেন্টস প্রযোজিত, লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের ভাবনাপ্রসূত ‘ঝনক’ নিয়ে আগ্রহ তুঙ্গে। লিখেছেন শ্যামলী বন্দোপাধ্যায়।
বেশ সাড়া জাগিয়ে শুটিং শুরু হয়েছে হিন্দি ধারাবাহিক ‘ঝনক’-এর। কারণ অনেক। একে তো বাংলা টেলিভিশনের এক ও অদ্বিতীয় লীনা গঙ্গোপাধ্যায় পরিচালিত প্রথম মৌলিক হিন্দি সিরিয়াল। তার ওপর এই সিরিয়ালের শুটিং আবার হচ্ছে কাশ্মীরে। একটা সময় কাশ্মীর ছিল হিন্দি ছবির স্বর্গীয় লোকেশন। বাংলা ছবির তদানীন্তন কতিপয় পরিচালকও বেছে নেন কাশ্মীরকে, শুটিংয়ের জন্য। ইদানীং অবশ্য দুবাই, মরিশাস, লন্ডন, প্যারিস, সুইজারল্যান্ডকেই লোকেশন হিসেবে বেছে নেওয়াই রীতি। সেক্ষেত্রে ম্যাজিক মোমেন্টস প্রযোজিত, লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের ভাবনাপ্রসূত কাহিনির কিছুটা অংশ পল্লবিত হতে চলেছে কাশ্মীরে, সেটা নিঃসন্দেহে বেশ উল্লেখযোগ্য ঘটনা। সম্প্রতি, কলকাতায় হয়ে গেল সিরিয়ালের বেশ কিছু অংশের শুটিং। গত ৭ সেপ্টেম্বরে ‘ঝনক’ টিম রওনা দিয়েছে কাশ্মীর।



নতুন ধারাবাহিকের খবর মানেই গল্প সম্পর্কে দর্শকের আগ্রহ থাকে তুঙ্গে। এখানে গল্প আবর্তিত হবে অনিরুদ্ধ, আরশি আর ঝনককে কেন্দ্র করে। এই ধারাবাহিকের মুল পুরুষ ও নারী চরিত্র যথাক্রমে অনিরুদ্ধ এবং ঝনক। আর বিশেষ চরিত্রে আছে আরশি। অনিরুদ্ধর সঙ্গে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল মুখার্জি পরিবারের মেয়ে আরশির। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে অনিরুদ্ধ ঝনককে বিয়ে করতে বাধ্য হয়। বিয়ে হলেও কেউ কাউকে মানতে পারে না। দুজন দুজনকে ভালবাসতেও পারে না। অতএব সম্পর্কজনিত জটিলতা পাক খায় এই দুই নারী-পুরুষকে ঘিরে।


দাদু, ঠাকুমা, ছেলে-বউ, নাতি-নাতনিদের মিলে তিন প্রজন্মের বৃহৎ বোস পরিবার। পরিবারের তৃতীয় প্রজন্মের তরুণ সদস্য অনিরুদ্ধ একজন সফল ইঞ্জিনিয়ার। কাজের প্রয়োজনে সে দেশ-বিদেশ ঘুরে বেড়ায়। অনিরুদ্ধর সঙ্গে বিয়ে ঠিক হওয়ার পর থেকে আরশি তার হবু এনআরআই স্বামীকে নিয়ে এক সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। ওদিকে কাশ্মীরের এক ট্রিপে গিয়ে অনিরুদ্ধর সঙ্গে আলাপ হয় কাশ্মীরি মেয়ে ঝনকের। নিয়তিই যেন তাদের মেলায়। নিয়তির হস্তক্ষেপেই তাদের দুজনের বিয়েও হয়ে যায়। ঝনক বা অনিরুদ্ধ কারও এ বিষয়ে প্রত্যক্ষভাবে কোনও দোষ না থাকলেও জীবনে চরম অশান্তি নেমে আসে।



এদিকে স্বাভাবিকভাবেই এই বিয়ে মানতে পারে না আরশি। ঝনকের কোনও দোষ না থাকা সত্ত্বেও আরশির সঙ্গে তিক্ততা তৈরি হতে থাকে। ঝনক কষ্ট করে জীবনের পথে এগিয়ে যেতে ও উন্নতি করার দিকে মন দেয়। যদিও, তার ভবিষ্যৎ কী এবং এই বিয়ের পরিণতি কী হবে, তা নিয়ে বেশ সন্দিহান সে। গল্পের পরবর্তী সময়ে দেখা যাবে ঝনক তার লক্ষ্যে অবিচল থেকে জীবনে উন্নতি করে। নামী শিল্পী হয়ে তার মৃত মায়ের নাম উজ্জ্বল করে। প্রশ্ন হলো, এতকিছুর পরও কী সে তার স্বামী অনিরুদ্ধর মন পাবে ? আদৌ কী তারা ঘরসংসার করতে পারবে ? না কি চিরদিন অবহেলিতই থেকে যাবে সে? শেষ পর্যন্ত কী হয়, তা নিয়ে টানটান গল্পের অপেক্ষায় দর্শক। এখন দেখার, দর্শকের এই চাহিদা কতটা পূরণ হয় !




ঝনকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন হিবা নবাব। ক্রুশল আহুজা অভিনয় করছেন অনিরুদ্ধর ভূমিকায়। আরশির ভূমিকায় চাঁদনি শর্মা। তেজেশ কুমার নামের এক নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় করছেন ঋষি কৌশিক। এছাড়াও বিভিন্ন ভূমিকায় আছেন পৃথ্বী জুৎসি, অজয় চক্রবর্তী, রীনা পিম্পেল, সচিন ভার্মা, কাজল পিসাল, পুনীত পাঞ্জয়ানি, সানি সচদেব, পত্রালি চট্টোপাধ্যায়, সৃজনী ব্যানার্জি, মেঘনা, অঙ্কিতা ব্যানার্জি ডলি সোহি, সৌরভ আগরওয়াল, সীমা শর্মা, ভরত কল, শিল্পা কাতারিয়া, আনন্দ শর্মা, নীতু শেঠ, সুচিস্মিতা চৌধুরী, সঞ্জয় গান্ধী, সাত্বিক সংখ্যায়ন। কাহিনি পল্লবিত দুটি বাঙালি ও একটি কাশ্মীরি পরিবার ঘিরে। বেশ ভিন্নস্বাদের এক রসায়ন দেখার অপেক্ষায় সকলেই। বিশাল সংখ্যক কাস্ট নিয়ে আউটডোর লোকেশনে কাজ। কাশ্মীর ছাড়া মুম্বইতেও হবে ‘ঝনক’-এর শুটিং। লীনার এবারের সৃজন যে আরও বড় এক ক্যানভাসে, সেকথা বুঝতে অসুবিধা হয় না। হিন্দি মেগার দর্শক এতে মনোরঞ্জনের চূড়ান্ত রসদ পাবেন, একথা আগাম বলে দেওয়া যায়।