রসে রসনায় – পর্ব ০৭
এই কলমে থাকছে দুটি করে রেসিপি। প্রকাশিত হচ্ছে পনের দিন অন্তর। আজ দুটি নিরামিষ পদ সম্পর্কে জানিয়েছেন জয়ন্তী ঠাকুর।
◾স্বাদ ও স্বাস্থ্যের জাদু শুক্তোয়
শুধু রোজকার খাবারের পাতে নয়, উৎসব ও পুজোপার্বণেও শুক্তো অপরিহার্য একটি পদ। বিশেষত, বাঙালি রসনায়, এপার-ওপার, দুই বাংলা মিলিয়েই ভোজনরসিকদের কাছে শুক্তোর চাহিদা তুঙ্গে। আজ আমি এখানে চারজনের আন্দাজমতো উপকরণ ও প্রণালী জানালাম।
উপকরণ
- উচ্ছে ছোট মাপের ৪টে
- কাঁচাকলা মাঝারি মাপের ১টা
- পেঁপে ছোট মাপের ১টা
- গাজর মাঝারি মাপের ১টা
- আলু মাঝারি মাপের ১টা
- বেগুন মাঝারি মাপের ১টা
- বিন ৭/৮ টা
- আদা (থেঁতো করা) ১ চা চামচ
- বিউলি ডালের বড়ি ৭/৮টা
- সরষের তেল ৩ টেবল চামচ
- তেজপাতা ২টো
- শুকনো লঙ্কা ২টো
- গোটা রাঁধুনি আধ চা চামচ
- রাঁধুনি গুঁড়ো আধ চা চামচ
- সরষে ১ চা চামচ
- ঘি ১ চামচ
- আধকাপ দুধ
- আধ চা চামচ ময়দা
- নুন-চিনি আন্দাজমতো
প্রণালী
সব সবজি লম্বা করে কেটে নিয়ে ভালোভাবে
ধুয়ে থালায় (ছবির মতো) আলাদা করে সাজিয়ে রেখে দিন। এতে রান্নায় সুবিধা হবে।
সরষেটা শুকনো কড়াইতে ভেজে রাখুন।
এরপর কড়াইতে তেল দিয়ে বড়িগুলো লালচে করে ভেজে তুলে নিন।
ওই তেলেই উচ্ছে একইভাবে লালচে করে ভেজে নিন।
কড়াইতে আরও একটু তেল দিয়ে বাকি সবজিগুলোও একইভাবে একে একে ভেজে নিয়ে তুলে রাখুন।
এরপর তেলের মধ্যে তেজপাতা, শুকনো লঙ্কা, গোটা রাঁধুনি ও আদা থেতো দিয়ে একটা ফোড়ন তৈরি করুন।
ফোড়নটা তৈরি হয়ে গেলে উচ্ছে ও বড়ি বাদ
দিয়ে সব সবজি কড়াইতে দিয়ে, তার মধ্যে পরিমাণ মত নুন ও চিনি দিয়ে কষাতে থাকুন।
কষানো হলে আন্দাজমতো গরম জল দিয়ে দিন। ফুটতে শুরু করলে অল্প আঁচে ঢাকা দিয়ে রাখুন, সবজি সেদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত।
সেদ্ধ হয়ে গেলে উচ্ছে ও বড়িটা দিয়ে, তারপর ঘি, ভাজা সরষে ও রাঁধুনি গুঁড়ো দিয়ে দিন।
এরপর দুধের মধ্যে ময়দা গুলে সেটা ঢেলে দিন। এতে শুক্তোর গ্রেভিটা ঘন হবে।
কিছুক্ষণ কড়াইতে ঢেকে রেখে, নামিয়ে পরিবেশন করুন।
◾থোরের পোলাও
খাবার টেবিলে নিরামিষ পদে থোর যাঁদের পছন্দ নয়, তাঁদের জন্যই আমার এই বিশেষ রেসিপি। গ্যারান্টি দিচ্ছি, এভাবে রান্না করলে সকলেই চেটেপুটে খাবেন থোরের এই পদ। বলা বাহুল্য, নিরামিষ পদ হলেও থোরের পোলাও পুষ্টিগুণে ভরপুর। আর রান্নার গুণে তাকে সুস্বাদুও করে তোলা সম্ভব। আমি এখানে ৪ জনের আন্দাজে উপকরণ ও প্রণালী জানালাম।
উপকরণ
- গোবিন্দভোগ চাল আধ কাপ
- থোর ছোট মাপের ১টা
- টমেটো ছোটো সাইজের ১টা
- কাজু বাদাম ও কিসমিস অল্প পরিমানে
- ঘি ১ চা চামচ
- তেজপাতা ও শুকনো লঙ্কা ২টো করে
- সাদা জিরে আধ চা চামচ
- আদা বাটা ১ চা চামচ
- সরষের তেল ২ টেবল চামচ
- নুন-হলুদ-চিনি আন্দাজ মতো
- গরম মশলার গুঁড়ো আধ চা চামচ
প্রণালী
থোরটা সরু সরু লম্বা লম্বা করে কেটে, জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে, নুন-হলুদ মাখিয়ে চটকে রেখে দিন।
চাল ধুয়ে জল ঝরিয়ে নিন।
টমেটো কুচিয়ে রাখুন।
এরপর কড়াইতে তেল দিয়ে সাদা জিরে, শুকনো লঙ্কা ও তেজপাতা ফোড়ন দিন।
তারপর এরমধ্যে কুচনো টমেটো, আদা বাটা ও চাল দিয়ে কষাতে থাকুন।
এবার একে একে দিয়ে দিন কাজু বাদাম, কিসমিস, আন্দাজমতো নুন, হলুদ ও চিনি।
আরও কিছুক্ষণ কষিয়ে নিয়ে, চটকানো থোরটা দিয়ে, কম আঁচে নাড়াচাড়া করতে থাকুন।
এবার ১ কাপ গরম জল দিয়ে ঢেকে রাখুন, চালটা সেদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত।
চাল সেদ্ধ হয়ে গেলে, গরম মশলার গুঁড়ো ও ঘি দিয়ে আর একটু নাড়াচাড়া করুন।
নামিয়ে পরিবেশন করুন গরম গরম।