রসে রসনায় – পর্ব ১২
বাঙালির পার্বণ মানেই পেটপুজোর ভরপুর আয়োজন। আসন্ন দুর্গাপুজোকে ঘিরে আমাদের এই বিভাগেও এখন থাকছে পুজোর চারদিনের বিশেষ রেসিপি। জেনে নিন আমিষ-নিরামিষ ও মিষ্টির রকমারি। গত সপ্তাহে ছিল অষ্টমীর সম্ভার। আজ নবমী। জানিয়েছেন জয়ন্তী ঠাকুর।
◾মিক্সড ভেজিটেবল পোলাও
পুজোর দিনে আমরা সকলেই খাবার টেবিলে একটু স্বাদ বদল প্রত্যাশা করি। এই পদটি সেক্ষেত্রে একান্ত উপযোগী হয়ে উঠতে পারে। আমি এখানে চারজনের হিসেবে রেসিপি জানালাম।
উপকরণ
- গোবিন্দভোগ চাল ১ কাপ
- বিনসকুচি ও গাজরকুচি ১ টেবল চামচ
- মটরশুঁটি ১ টেবল চামচ
- কাজু ও কিসমিস ১ টেবল চামচ
- গোটা এলাচ, দারুচিনি ও লবঙ্গ এক চা চামচ
- গরম মশলা গুঁড়ো আধ চা চামচ
- ঘি ১ টেবল চামচ
- আদা বাটা ১ চা চামচ
- গোলাপজল কয়েকফোঁটা
- হলুদ-নুন-চিনি পরিমানমতো
প্রণালী
প্রথমে গোবিন্দভোগ চাল ভালোভাবে ধুয়ে, জল ঝরিয়ে, হলুদ মাখিয়ে রেখে দিন । এরপর ওভেনে প্রেশার কুকার বসিয়ে ঘি দিন। গ্যাস কমিয়ে রাখবেন। নাহলে, ঘি উড়ে যাবে। ঘি গরম হয়ে যাওয়ার পর, তাতে গোটা গরমমশলা, কাজু ,কিসমিস, সব সবজি ও আদাবাটা একে একে দিয়ে, ভালোভাবে কষিয়ে নিন । তারপর হলুদ মাখানো চালটা দিয়ে একটু নাড়াচাড়া করে নুন দিন। চালের দ্বিগুণ পরিমাণ গরমজল দিয়ে প্রেশার কুকারে ঢাকনা লাগিয়ে দিন। এরপর ১টা সিটি দিয়ে গ্যাস বন্ধ করে দমে বসিয়ে রাখুন ৫ মিনিট । নামানোর পর পরিমাণমতো চিনি, গরম মশলার গুঁড়ো ও কয়েক ফোঁটা গোলাপজল দিয়ে আরও ৫ মিনিট দমে রেখে দিন। নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
◾ মাটন ডাকবাংলো
উৎসবের দিনে মাটনের একঘেয়ে ঝোল খেতে না চাইলে, এই রেসিপিটা একবার বানিয়ে দেখতে পারেন। আমি এখানে চারজনের উপযোগী রেসিপি জানালাম।
উপকরণ
- মাটন ৫০০ গ্রাম
- ডিম ৪টে
- আলু ২টো বড় মাপের
- পেঁয়াজ ২টো বড় মাপের
- টমেটো ২টো বড় মাপের
- টকদই ১০০ গ্রাম
- ঘি ২ টেবল চামচ
- গরম মশলা গুঁড়ো আধ চা চামচ
- রসুন ১টা বড়
- আদা ছোট ১ টুকরো
- লাল লঙ্কার গুঁড়ো আধ চা চামচ
- ধনে ও জিরে গুঁড়ো আধ চামচ করে
- গোলমরিচ গুঁড়ো আধ চা চামচ
- হলুদ আধ চা চামচ
- নুন-চিনি স্বাদমতো
প্রণালী
প্রথমে আলু ও ডিম সেদ্ধ করে, ভেজে রাখুন। এরপর পেঁয়াজ কুচিয়ে নিন। রসুন-আদা বেটে নিন, বাটার পরিমার হবে ১ টেবল চামচ। টমেটো কেটে, বেটে নিন। কড়াইতে ঘি গরম করে, পেঁয়াজকুচি বাদামি করে ভাজুন। তারমধ্যে আদা-রসুন বাটা ও টমেটো বাটা দিয়ে কষাতে থাকুন। এরপর এই মিশ্রনের সঙ্গে হলুদ, ধনে, জিরে, গোলমরিচ, লঙ্কাগুঁড়ো ও দই মিশিয়ে, ভালোভাবে কষিয়ে নিন। এবার এই পুরো মশলার মধ্যে মাটন দিয়ে, কষাতে থাকুন, যতক্ষণ না মাটনের রং বদল হচ্ছে। মাটনে লাল রং ধরলে, গরম মশলা গুঁড়ো, নুন ও চিনি দিয়ে পরিমানমতো গরম জল দিন। খুব বেশি ঝোল থাকবে না। সেই বুঝে জল দেবেন। মাটন সেদ্ধ হয়ে গেলে ভাজা আলু ও ডিম দিয়ে আরও কিছুক্ষণ গরম আঁচে বসিয়ে রাখুন। তারপর পোলাও বা সাদা ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।
◾ বেকড দই
উৎসব ও পুজো-পার্বণের দিনে বাঙালি খাবারের পাতে যেটি না থাকলেই নয়, সেটি হলো দই। দই হলো মাঙ্গলিক। আমরা কোথাও যাত্রা করার সময় ‘দই’ মুখে দিয়ে যাই। আবার কপালে টিপও পরে থাকি। খাওয়ার পাতে একটু আধুনিকতার ছোঁয়া দিতেই, আজ আমি দইয়ের একটি অন্যরকম রেসিপি জানালাম, ২/৩ জনের হিসেবে।
উপকরণ
- টক দই ২০০ গ্রাম
- Condensed milk ২০০ গ্রাম
- যে কোনও নামী ব্র্যান্ডের cream ২৫০ মিলিলিটার
- ৪/৫ ফোঁটা vanilla essence
- ছোটো এলাচের গুঁড়ো চা চামচের ৩ ভাগের ১ ভাগ
প্রণালী
সব উপকরণ এক সঙ্গে একটা বাটিতে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এরপর যে পাত্রে বেকড দই বানাবেন, সেখানে ব্যাটারটা ঢেলে দিয়ে, একটা বেকিং ট্রে-র মধ্যে জল দিয়ে তার মধ্যে পাত্রটা বসিয়ে দিন, যে ভাবে ছবিতে দেখানো হয়েছে। এবার OTG-তে grill mode-এ 200 degree centigrade সেট করে ট্রে বসিয়ে, অন করে দিন। ২০/২৫ মিনিট সময় রাখুন bake করার জন্য।এরপরে OTG থেকে বের করে, ঠান্ডা হয়ে গেলে, freeze-এ রেখে দিন ঘন্টা খানেকের জন্য। Freeze থেকে বের করে আনুন। ব্যস, বেকড দই তৈরি। পুজোর ভোজের শেষ পাতে পরিবেশন করুন। ভোজ জমে যাবে।