রাজনীতির চিত্রনাট্যে
ফিল্মি তারকাদের রাজনৈতিক দুনিয়ার সঙ্গে সংযোগ নতুন কিছু নয়। সেই এম জি রামচন্দ্রন-জয়ললিতা যুগ থেকে আজকের মিমি-নুসরত প্রমুখ–খেলাটা চলছে। বলা বাহুল্য, এই খেলাতেও হারজিৎ আছে। যদিও, সেই হারজিতের নিটফল সর্বদা খুব সুখকর হয় না এই ময়দানে। দক্ষিণী সিনেমা আর দক্ষিণী রাজনীতির বিষয়টা এক্ষেত্রে কিছুটা আলাদা। বহু যুগ ধরে সিনেমা জগৎ আর রাজনীতি সেখানে হাত ধরাধরি করে চলেছে। সকলেই পরিস্থিতি বিচারে প্রস্তুত থাকেন।
এবার দেখা যাক বলিউড ও টলিউড বিত্তান্ত। বলিউডের বিগ বি–রাজনীতি ওঁকে ‘স্যুট’ করেনি। বিচক্ষণ বচ্চন সাহেব দু’নৌকায় পা দিয়ে চলার বিপদটা খুব তাড়াতাড়ি বুঝেছেন ও রাজনীতির ময়দান ছেড়েছেন। তৎকালীন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে তিক্ত সম্পর্কটাও এর একটা কারণ, অনেকে মনে করেন। তবে, তাঁর স্ত্রী জয়া বচ্চন দু’দিক সামলেই চলছেন মোটামুটি। অমিতাভের একদা সহকর্মী আর এক সুপারস্টার প্রয়াত বিনোদ খান্নাও সক্রিয় রাজনীতিতে ছিলেন। যদিও এঁদের সকলেরই রাজনৈতিক সক্রিয়তা সৌখিন স্তরে। হেমা মালিনীও প্রায় একই পথের পথিক। শত্রুঘ্ন সিনহা একটা সময় বেশ খানিকটা সক্রিয় থাকলেও, এখন নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। কোনও রাজনৈতিক দলের অফিসিয়াল সদস্য না হয়েও রাজনৈতিক আলোচনায় আছেন কঙ্গনা রানাওয়াত, অক্ষয় কুমার, পরেশ রাওয়ালরা। এঁরা সকলেই শাসক দলের সমর্থক বলে পরিচিত। টলিউডে রাজনীতির প্যাঁচপয়জারে নিজের অভিনয়ের কেরিয়ার জলাঞ্জলি দিয়ে প্রয়াত তাপস পাল। দেবের কেরিয়ার যখন স্টার তকমা ছেড়ে অভিনেতার নান্দনিক পথে বিচরণের মুখে, তখনই রাজনীতির ঘোলা জলে তাঁর মাছ ধরতে নামা। বলা যায় বাধ্য হয়েই নামা। মুনমুন সেন লস্ট কেস। কোনও দিকেই আর কিছু দেবার নেই তাঁর। সন্ধ্যা রায় রাজনীতিতে গুরুত্বহীন এখন। মিমি-নুসরত বাংলার রাজনীতিতে গ্ল্যামার ছাড়া আর কিছুই যোগ করেননি। রূপা-লকেটের রাজনৈতিক কেরিয়ার হঠাৎ যেন থমকে গেছে। আদতে স্মৃতি ইরানীর মতো সফল এঁরা কেউই নন। তার কারণ, ধারাবাহিকতা। একটি রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে দীর্ঘ সম্পর্ক তাঁর। হঠাৎ করে নিছক তারকার প্যাকেজ নিয়ে ময়দানে নামেননি টেলিভিশনের এ যাবৎকালের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই তারকা। একালের রাজনীতিকে মস্তিষ্কে নিয়ে, সাংগঠনিক দীক্ষা ও পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত রাজনৈতিক প্রজ্ঞা নিয়েই রাজনীতিতে এসেছেন তিনি। উত্তরণেও পৌঁছেছেন সেই নিরিখেই।