সুর-তালের মহার্ঘ মেলবন্ধন ‘ঋতুচক্র মেঘ বরসো রে’
সম্প্রতি দিল্লির সঙ্গীতপ্রেমী শ্রোতা-দর্শক সাক্ষী রইল এক অনবদ্য অনুষ্ঠানের। দর্শক পরিপূর্ণ দিল্লির কামানি অডিটোরিয়ামে ইন্টারন্যাশনাল পারফর্মিং আর্টস ফেস্টিভ্যাল (কলকাতা ) আয়োজিত মনসুন ফেস্টিভ্যালে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখলেন ভজনসম্রাট পদ্মশ্রী অনুপ জালোটা এবং গ্র্যামি জুরি সদস্য ও গিমা অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী পণ্ডিত প্রদ্যোত মুখার্জি। কিংবদন্তি এই দুই শিল্পীর পরিবেশন বহুদিন মনে রাখবে উপস্থিত দর্শকবৃন্দ। ‘ঋতুচক্র মেঘ বরসো রে’ শিরোনামের এই মনসুন ফেস্টিভ্যাল অর্থাৎ বর্ষা উৎসবে ভারতীয় শাস্ত্রীয় ও আধুনিক সঙ্গীতের এক সার্থক রূপ মেলে। চিরন্তন ও সমসাময়িক–ভারতীয় নাট্য, সঙ্গীত ও নৃত্যের এক সূক্ষ, নান্দনিক প্রকাশ ঘটে উৎসবে। নৃত্যরতন ইয়ুথ আইকন অ্যাওয়ার্ড তুলে দেওয়া হয় প্রখ্যাত কত্থক নৃত্যশিল্পী ডঃ খুশবু পাঞ্চালের হাতে।
একসময় লোকের কানে কানে গুঞ্জরিত হয়েছে তাঁর যে গান, সেই বিখ্যাত ভজন ‘অ্যায়সি লাগি লগন…’ দিয়ে এই সন্ধ্যায় সঙ্গীত পরিবেশন শুরু করেন অনুপ জালোটা। মুহূর্তে বদলে যায় পরিবেশ। ভক্তির সুধারসে ভেসে যান উপস্থিত সকল শ্রোতা। এরপর শ্রোতারা নিবিষ্ট হয়ে শোনেন, ‘অছ্যুতম কেশভম কৃষ্ণ দামোদরম…’, ‘শ্যাম তেরি বংশী…’, ‘রং দে চুনারিয়া…’ গানগুলি। সবশেষে অনুপ জালোটার কণ্ঠে গীত বিখ্যাত গজল ‘আজ যানে কী জিদ না করো…’ ছিল এককথায় প্রেম-বিরহের এক অপরূপ আবেগময় নিবেদন।
অনুপ জালোটার পাশাপাশি ছিল আর এক অতুলনীয় শিল্পীর জাদুকরী পরিবেশনা। পণ্ডিত প্রদ্যোত মুখার্জি মাউথ ড্রামিং ও তবলায় সম্মোহিত করে দেন সকলকে। অনির্বচনীয় সেই সুর ও তালবাদ্যের মেলবন্ধনে জমে ওঠে কনসার্ট। অনুপজি এবং প্রদ্যোতজি দুজনেই অতুলনীয় প্রতিভার অধিকারী, দক্ষ ও প্রতিষ্ঠিত। বিশ্বজোড়া খ্যাতি তাঁদের। এই সন্ধ্যায় অনুষ্ঠানে আগত দর্শক-শ্রোতা কাঙ্ক্ষিত মাত্রাতেই সাড়া দেন ওঁদের পরিবেশনের সময়। শিল্পী-শ্রোতার যথার্থ এক বন্ধন রচিত হয়, যা সার্থক করে তোলে উৎসব প্রাঙ্গনকে। মনে রাখা নিবেদন ছিল শিবানী ভার্মার কত্থক নৃত্য পরিবেশন। মনোরম এই সন্ধ্যা সবদিক থেকেই হয়ে উঠেছিল আনন্দময়।