রসে রসনায় – পর্ব ০৩
এই কলমে থাকছে দুটি করে রেসিপি। একটি রোজকার তালিকায় থাকা খাবারের পদ। আর একটি থাকছে উৎসব-পার্বণকে ভেবে। প্রকাশিত হচ্ছে প্রতি পনের দিন অন্তর। জানাচ্ছেন রিংকু মিত্র।
◾ আলু-ঝিঙে মুগডাল
ভাত, ডাল আমাদের প্রধান খাবার। ডালে আছে প্রচুর প্রোটিন ও ভিটামিন। রোজকার খাবার পাতে তাই স্বাদ আর স্বাস্থ্য দুইয়ের জন্যই একটু ডাল না হলেই নয়। ডাল রান্নাও করা যায় নানা বৈচিত্র্যে। আজ তেমনই একটি রেসিপি আপনাদের জন্য। এখানে আমি তিন/চার জনের আন্দাজে রেসিপি জানালাম।
উপকরণ
- মুগডাল ১ কাপ
- আলু ১টা বড়/মাঝারি ২টো
- ঝিঙে ১টা বড়
- কাঁচা লঙ্কা ২/৩টে
- সরষের তেল ৩ টেবিল চামচ
- পাঁচফোড়ন ১ চা চামচ
- শুকনো লঙ্কা ২টো
- তেজপাতা ১টা
- জিরে গুঁড়ো আধ চা চামচ
- ধনে গুঁড়ো আধ চা চামচ
- কাশ্মিরী লঙ্কা গুঁড়ো আধ চা চামচ
- আদা গ্রেট করা বা বাটা ১ চা চামচ
- হলুদ ১ চা চামচ
- ঘি ১ চা চামচ
- নুন-মিষ্টি স্বাদমতো
প্রণালী
মুগডাল ধুয়ে ভিজিয়ে রাখুন দশ মিনিট। খেয়াল করে দশ মিনিট পর ভেজানো ডাল একটি জালি পাত্রে জল ঝরাতে দিয়ে রাখবেন।
আলু, ঝিঙে ডুমো ডুমো করে কেটে ধুয়ে রাখুন। আলুর টুকরো তুলনায় ছোট হবে।
কড়াতে সরষের তেল দিন। তেল গরম হলে কেটে রাখা আলু ভেজে তুলে রাখুন।
এবার কড়ার বাকি তেলের মধ্যে পাঁচফোড়ন, শুকনো লঙ্কা আর তেজপাতা দিন।
ফোড়নের গন্ধ বের হলে জল ঝরানো মুগডাল তার মধ্যে দিয়ে ভালো করে ভেজে নিন।
এবার এতে ঝিঙে দিন। নুন দিয়ে নাড়াচাড়া করে ঢাকা দিয়ে রাখুন। ঝিঙে থেকে জল বেরিয়ে ডাল নরম হয়ে আসবে।
এরপর জিরে-ধনে-হলুদ-লঙ্কা গুঁড়ো কড়াইতে দিয়ে ডাল ও ঝিঙের সঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে নিন। অল্প জল ছিটিয়ে দিন, যাতে মশলা পুড়ে না যায়।
এবার পরিমান মতো গরম জল দিন। রান্নায় সবসময় গরম জল ব্যবহার করবেন। তাতে স্বাদ ভালো হবে।
এরপর ভাজা আলুর টুকরোগুলো দিয়ে দিন। নেড়েচেড়ে দিন সবকিছু।
এবার নুন-মিষ্টি মেশান ও ঢাকা দিয়ে রান্না হতে দিন, যতক্ষণ না ডাল সেদ্ধ হয়।
সবশেষে ঘি দিয়ে নামিয়ে পরিবেশন করুন।
***এটা ভাত, রুটি,পরোটা সবকিছুর সঙ্গেই খেতে ভালো লাগে।
◾ আম-কাতলা ভাপা
গরমে আম দিয়ে নানান রান্না হয়। হালকা ও সহজপাচ্য সেইসব পদের একটি সম্পর্কে এখানে বলব। আম আর নারকেল দিয়ে তৈরি কাতলা মাছের এই পদটি খুব সুস্বাদু হয়। যাঁদের নারকেল সহ্য হয় না, তাঁরা এটি সাদা তিল দিয়েও বানাতে পারেন। এখানে আমি দু’জনের মাপে রেসিপি জানালাম।
উপকরণ
- কাতলা মাছ ২টি বড় টুকরো
- কাঁচা আম ১টি (ছোট সাইজ)
- নারকেল আধ মালা কোরানো/সাদা তিল ২ টেবল চামচ
- সরষে এক চা চামচ
- কাঁচা লঙ্কা বাটা ১ টেবল চামচ
- সরষের তেল ৩ টেবল চামচ
- চিনি আধ চা চামচ
- লেবুর রস সামান্য (একটি গোটা পাতি লেবুর এক তৃতীয়াংশ নিলেই হবে)
- নুন-হলুদ প্রয়োজন মতো
প্রণালী
মাছ ধুয়ে জল ঝরিয়ে নুন-হলুদ-লেবুর রস মাখিয়ে রাখুন।
আম কুরিয়ে নিন। কোরানো আম, সর্ষে আর দুটি কাঁচা লঙ্কা মিহি করে বেটে নিন।
কোরানো নারকেল/সাদা তিলও বেটে রাখুন।
এক তৃতীয়াংশ নারকেল/তিল আর আম-সর্ষে-লঙ্কা বাটা তুলে রাখুন।
একটা ঢাকনাওয়ালা পাত্রে অল্প তেল দিন। তার মধ্যে সব মশলা দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন।
এরপর তাতে মাছের টুকরোগুলো দিন। ভালো করে মাছের গায়ে মশলা মাখিয়ে নিন, নুন-মিষ্টি সহ।
এবার সরষের তেল বাকিটা দিয়ে দিন। তুলে রাখা নারকেল/তিল, আম-সর্ষে-লঙ্কা বাটাও মিশিয়ে নিন।
সবশেষে একটা বড় পাত্রে জল দিয়ে, জল গরম হলে তাতে যে পাত্রে সব মাখা হয়েছে, সেটি ঢাকনা আটকে বসিয়ে দিন এবং কম আঁচে দশ মিনিট ভাপিয়ে নিন। প্রেশার কুকারও ব্যবহার করতে পারেন। সেক্ষেত্রে একটা সিটি দিলেই চলবে।
এরপর গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন। স্বাদ মুখে লেগে থাকবে গ্যারান্টি।