Monday, February 3, 2025
ওয়েব-Wave

বং ওয়েব দর্শকের ফেভারিট রহস্যভেদী ‘ইন্দু’ 

হাতে হাতে স্মার্টফোন। তরুণ প্রজন্মের চোখ ইদানীং নিত্যনতুন ওয়েব সিরিজে। সারা বিশ্বের স্ট্রিমিং বিনোদন এখন হাতের মুঠোয়। সেইসব সিরিজ নিয়েই নানাকথা এই বিভাগে। পরপর খুন ! দুটি সিজন পার হলো। এবার ‘ইন্দু’ পারবে কী রহস্য ভেদ করতে ? তৃতীয় সিজনের অপেক্ষায় ওয়েব দর্শক। লিখেছেন মৃণালিনী ঠাকুর

নিতান্তই এক গৃহবধূ ইন্দু, তার বিয়ে ঠিক হওয়া ইস্তক ভাবী শ্বশুরবাড়িকে কেন্দ্র করে এমন কিছু ঘটনার সম্মুখীন হয়, যা শুধু রহস্যে ঘেরা নয়, রীতিমতো রোমাঞ্চকর। কেউ বা কারা আপ্রাণ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা সত্বেও ইন্দুর বিয়েটা হয় এবং সে এসে প্রবেশ করে তার রহস্যের ঘেরাটোপে ঢাকা শ্বশুরবাড়িতে। ২০২১-এ হইচই ওটিটি চ্যানেলে প্রদর্শিত সায়ন্তন ঘোষ পরিচালিত ওয়েব সিরিজ ‘ইন্দু’ প্রদর্শনের পর থেকেই বং গৃহবধূর আপাত নিরীহ চেহারার আড়ালে লুকিয়ে থাকা এক রহস্যভেদী, বাঙালি ওয়েব দর্শকের হৃদয় জয় করে নেয়। তখন থেকেই দ্বিতীয় সিজনের অপেক্ষা শুরু হয়ে যায়।

ওয়েব দুনিয়ায় থ্রিলারের রমরমা। কিন্তু যে থ্রিলার একেবারে ঘরের চার দেওয়ালের মধ্যে, পরিবারের সদস্যদের ভিতর পাকিয়ে ওঠে, তার টান বেশ অন্যরকম। দর্শক নিজেও ওই পরিবারের চরিত্রগুলির আলো-আঁধারিতে সম্পৃক্ত হয়ে যায়। ইন্দুর শ্বশুরবাড়ি অর্থাৎ দাশগুপ্ত পরিবারের রন্ধ্রে রন্ধ্রে গোপনীয়তা, যার মধ্যে প্রচ্ছন্ন কালো অপরাধের ছায়াটি নজর এড়ায় না ইন্দুর। তাকে ভয় দেখাবার চেষ্টা অব্যাহত থাকে। কাবার্ডে কঙ্কাল আবিষ্কার থেকে ইন্দুকে খাবারের সঙ্গে ধুতরোর বিষ মিশিয়ে মারার চেষ্টা–এই সবের মধ্যেই শেষ হয়েছিল প্রথম সিজন। আর একটি প্রশ্নও ছিল, কী ঘটেছিল ইন্দুর জা লাবণীর ভাগ্যে ?

দ্বিতীয় সিজনের সৌজন্যে অবশ্য জানা হয়ে গেছে, খুন হয়েছে লাবণী। এ বছরের শুরুতেই ‘ইন্দু ২’ শুরু হয়েছে। মোট ৮ টি পর্বে তৈরি এই সিজনের শুরু ‘পারবে শার্লক হোমস?’ শিরোনামে। অর্থাৎ যাবতীয় প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ইন্দুর রহস্যভেদের চেষ্টা থেমে নেই। এই সিজনে এসে বদলে গেছে পরিচালক। অভিমন্যু মুখার্জি আছেন ‘ইন্দু ২’-এর পরিচালনায়। ইন্দুর ভূমিকায় আগের মতোই পাওয়ার প্যাকড পারফরম্যান্স দিয়েছেন ঈশা সাহা। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে আছেন পায়েল দে, চন্দ্রনীভ মুখোপাধ্যায়, সুহোত্র মুখোপাধ্যায়, মানালি দে, মানসী সিনহা প্রমুখ।

এবারের গল্পে আমরা দেখি, ইন্দুর বিয়ের রিসেপশনের কয়েকদিন পরেই খবর আসে, লাবণী মারা গেছে। ইন্দুর সন্দেহ খুন হয়েছে লাবণী। ইন্দু স্থির করে রহস্যের গভীরে যাবে সে–কেন তার বিয়ের শুরু থেকেই নানান জটিল, অপ্রীতিকর ও অদ্ভুত ঘটনা ঘটে চলেছে, লাবণীর খুনও যার অঙ্গ। কিন্তু এরপর যেটা ঘটে, সে যেন কাঁপিয়ে দেয় ইন্দুর সম্পূর্ণ অস্তিত্ব ! তার এইসব অনুসন্ধান পর্বের মাঝেই রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয় ইন্দুর স্বামী সৌগতরও। মাথা ঠিক রাখা কঠিন হয়ে পড়ে ইন্দুর। সবাইকে মনে মনে সন্দেহ করে সে। এরই মাঝে তার দেওর সুজাত নতুন নতুন সমস্যার বেড়াজাল বুনতে থাকে ইন্দুর জন্য। এই সিজনে খুশি কাহিনির গতিপথে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। যে কোনও প্রেক্ষিতে খুশির তীব্র প্রতিক্রিয়া প্রচুর সূত্র এনে দেয় রহস্য উদঘাটনে। 

দাশগুপ্ত পরিবারের গোপন, অন্ধকারাচ্ছন্ন ও রহস্যময় কাণ্ডকারখানায় খুশির উন্মোচিত অতীত অনেকটাই আলোকপাত করে, যা আমরা এই সিজনের শেষের দিকে দেখতে পাই। দ্বিতীয় সিজনের শেষ পর্বের শিরোনাম ‘শেষ তবু শেষ নয়’। অবশ্যই শেষ নয়। কারণ, লাবণী আর সৌগতর খুনি কে–এখনও জানা বাকি। সেই সব জানার জন্য দর্শকের তৃতীয় সিজনের অপেক্ষা শুরু হয়ে গেছে। ইন্দুর ভূমিকায় ঈশা ছাড়া আর কারোর কথা ভাবতেই পারবেন না দর্শক। বাকিরাও তো তাঁদের চরিত্রের সঙ্গে মানিয়ে গেছেন পুরোপুরি। সুতরাং অভিনেতা বদলাবে না, এটাই প্রত্যাশিত। দ্বিতীয় সিজনে পরিচালক বদলেছে। তৃতীয় সিজনে কে সিরিজ পরিচালনা করবেন সায়ন্তন, অভিমন্যু না অন্য কেউ ? উত্তর আছে সময়ের গর্ভে।