Tuesday, May 13, 2025
ওয়েব-Wave

‘আখরি সাচ’-এ চাবুক তমান্না

হাতে হাতে স্মার্টফোন। তরুণ প্রজন্মের চোখ ইদানীং নিত্যনতুন ওয়েব সিরিজে। সারা বিশ্বের স্ট্রিমিং বিনোদন এখন হাতের মুঠোয়। সেইসব সিরিজ নিয়েই নানাকথা এই বিভাগে। দিল্লির কুখ্যাত বুরানি কেস স্ট্রিমিং হচ্ছে ওয়েব পর্দায়। লিখেছেন অজন্তা সিনহা

আরও একটি ক্রাইম থ্রিলার। তাহলে, নতুন কিছুই কী লেখার নেই ? নাহ, সেকথা বলা যাবে না। অপরাধ ও অপরাধী দুইই তার চরিত্র বদলাচ্ছে সময়ের সঙ্গে তাল রেখে। ফলে, প্রশাসনেরও যত দিন যাচ্ছে, টেনশন বাড়ছে। যেমন সমাজে ঘটে, পর্দাতেও আমরা তেমনই দেখি। রবি গ্রেওয়াল পরিচালিত তদন্তধর্মী ক্রাইম থ্রিলার সিরিজ ‘আখরি সাচ’-এ অপরাধের শেষে কী আছে, তা তো আপনারা পর্দাতেই দেখবেন। সিরিজের নাম ‘আখরি সাচ’, সেই নিরিখে ফাইনাল ট্রুথ বা শেষ সত্য কী, সেই প্রশ্নের জবাব পেতে আপনাদের চোখ রাখতে হবে ডিজনি হটস্টার-এর পর্দায়। 

কাহিনির বিস্তারে যাওয়ার আগে আরও কিছু তথ্য। সমালোচকদের মতে, ‘আখরি সাচ’-এর মুখ্য আকর্ষণ আনিয়া স্বরূপের চরিত্রে তমান্না ভাটিয়ার আত্মবিশ্বাসী ও শক্তিশালী অভিনয়। সিরিজ দর্শকের প্রশংসা বিপুল পরিমাণেই কুড়িয়েছেন তিনি। বাকিরা হলেন অভিষেক ব্যানার্জি (ভুবন), শিভিন নারাং (আমন), রাহুল বাগগা (রাঘব), দানিশ ইকবাল (আদেশ), নিশু দীক্ষিত (পুনম), কৃতি ভিজ (অংশিকা), সঞ্জীব চোপড়া (জওহর সিং) প্রমুখ। ‘পাতাল লোক’ খ্যাত অভিষেক ইতিমধ্যেই বড় পর্দায় পা রেখেছেন। প্রতিভাবান এই বঙ্গতনয় হিন্দি বিনোদন দুনিয়ায় নিজের অপরিহার্যতা প্রমাণ করে ফেলেছেন দ্রুত। স্মার্ট প্রেজেন্টেশন ও দুরন্ত অভিনয়ে ‘আখরি সাচ’ যে আপনাকে রুদ্ধশ্বাস এক অভিজ্ঞতা দেবে, সেটা জোর দিয়ে বলা যায়। গত মাসেই স্ট্রিমিং শুরু হয়েছে এই সিরিজের।

Images 1 1
'আখরি সাচ'-এ চাবুক তমান্না 8

দিল্লির কুখ্যাত বুরানি আত্মহত্যা কেস অবলম্বনে তৈরি হয়েছে এই সিরিজ। কাহিনি লিখেছেন সৌরভ দে। ভয়াবহ ও মর্মান্তিক এই ধর্মীয় গণ-আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছিল ২০১৮ সালে ১লা জুলাই, দিল্লির বুরানিতে। ওইদিন সকালে দশ জন মানুষকে পাওয়া গিয়েছিল ফাঁসিতে ঝোলানো অবস্থায়। আর একজন, যিনি পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ এক মহিলা, তাঁকে শ্বাসরুদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। পুলিশ বাড়িটিতে এই মৃতদেহগুলি আবিষ্কারের পর সিদ্ধান্তে এসেছিল–এ সাংঘাতিক এক ভ্রান্ত বিশ্বাস ও মনস্তাত্বিক ব্যাধির প্রকাশ। 

Images 2 1 1
'আখরি সাচ'-এ চাবুক তমান্না 9

এবার দেখা যাক, রিয়েল লাইফ স্টোরি রিলে কীভাবে নিয়ে আসা হলো ! অপরাধ দমনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এক পুলিশ আধিকারিক আনিয়া। আমরা দেখি ক্রেডিট কার্ড সংক্রান্ত এক জটিল অপরাধের জাল ছিঁড়ে সবে অপরাধীকে ধরে ফেলার জায়গায় পৌঁছেছে সে। ঠিক তখনই তার বস আনিয়াকে ওই এক পরিবারের ১১ জনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে নিযুক্ত করে। ঘটনার প্রথম অবস্থায় বিষয়টি গণ-আত্মহত্যা বলে মনে হলেও, পরে, এর পিছনে অপরাধের গন্ধ পায় আনিয়া। সে তদন্তে দিনরাত এক করে ফেলে।

গণ আত্মহত্যাকারী এই রাজাওয়াত পরিবারের অন্দরের পর্দা যত উন্মুক্ত হয়, তত উঠে আসে অতীতের নানা রহস্যের কথা। পরিবারের পুরুষ কর্তাটি একদা পুলিশে চাকরি করতেন। পুলিশের একজন আধিকারিক ছিলেন তিনি। এঁকে ঘিরেই বেশ এক ছায়াময় ইতিহাস বেরিয়ে আসে আলোর পথে। সেখানে ছেলে ভুবনকে ঘিরে রয়েছে এমন এক জটিলতা, যেখান থেকে এই পরিবারের নিম্নগামিতা শুরু। কাহিনির কেন্দ্রে রাজাওয়াত পরিবারের চার ভাইবোন আদেশ, ভুবন, ববিতা ও কবিতা। কী ঘটে তাদের মধ্যে ? রহস্য ঘনীভূত ববিতার মেয়ে অংশিকা আর তার বাগদত্ত আমনকে ঘিরে। তদন্ত যত এগোয়, তত একের পর এক পর্দা সরে যায়। ঘটনাক্রম অতীতে ও বর্তমানে ঘোরাফেরা করে। রাজাওয়াত পরিবারের এই ঘটনার পিছনে কী আছে–কে বা কারাই বা আছে, দেখুন ‘আখরি সাচ’এর পর্বে পর্বে। আপাতত প্রথম সিজনের পাঁচ পর্ব স্ট্রিমিং হচ্ছে।