কুশ আহীরের থেকে অনেকটাই আলাদা
আকারে ছোট হলেও বিনোদন ক্ষেত্রে টেলিভিশনের গুরুত্ব আজ অসীম। মেগা থেকে রিয়ালিটি, গেম শো থেকে ম্যাগাজিন–টিভি শোয়ের চাহিদা ছিল, আছে, থাকবে। এই বিভাগে তারই খবর প্রতি সপ্তাহে। ছোটপর্দার অতি পরিচিত মুখ গৌরব রায়চৌধুরী। জি বাংলায় চলছে গৌরব অভিনীত নতুন মেগা ‘রাঙা বউ’। তারই সেটে নিজের স্বপ্ন ও ভাবনার কথা তিনি জানিয়েছেন সোমনাথ লাহাকে।
‘পিলু’-র আহীর চরিত্রটি তোমার কেরিয়ারে এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। ‘রাঙা বউ’-এর কুশ তার তুলনায় কতখানি আলাদা ?
## আহীরের সঙ্গে কুশের আকাশপাতাল তফাৎ রয়েছে। আহীর শাস্ত্রীয়সংগীত নিয়ে চর্চা করেছে। সে বেশ বুদ্ধিমান ও পরিণতমনস্ক। সঙ্গীত সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রয়েছে। আর কুশ হচ্ছে একটি সরল ও সাধারণ ছেলে। তাছাড়াও তার শর্ট টার্ম মেমোরি লসের মতো সমস্যা রয়েছে। সে এই মুহূর্তে কি হলো, পরমুহূর্তেই ভুলে যায়। কুশের বাবা অ্যাসাইলামে ভর্তি। মা নেই। সে জেঠুর বাড়িতে মানুষ। সেই বাড়িতে অনেকেই আছে। তবে, সেখানে নানা জটিলতা। কুশ মাঝে মাঝেই সব ভুলে যায় বলে তাকে বোকা বানানো খুব সহজ। কত কি হতে পারে তাঁর সঙ্গে ! এটাই হচ্ছে চরিত্রটা।
এইজন্যই কি চরিত্রটা তোমাকে আকর্ষণ করেছিল?
## একদমই তাই। এটাই আমাকে বিশেষভাবে আকর্ষণ করেছে। কারণ, এই ধরণের চরিত্রে আমি এর আগে অভিনয় করিনি। আমি সবসময়ই অনেক কিছু করেছি। চাপ দাড়ি রেখে ওস্তাদজী কিংবা ওয়েস্টার্ন লুকের কোনও চরিত্র। সবটাই করেছি। কিন্তু একটা সাধারণ অসহায় ছেলের চরিত্র এই প্রথম।
কুশ একজন বনেদি বাঙালি পরিবারের ছেলে। সেই হিসেবেই তো তার লুক, পোশাক ইত্যাদির পরিকল্পনা করা হয়েছে !
## আমি নিজেও ষোলো আনা বাঙালি। এই ধরণের লুক ও পোশাক বড্ড পছন্দ করি। এইরকম লুক বা পোশাক তাই নতুন নয়। এর আগেও যখনই সুযোগ পেয়েছি, পরেছি।
শর্ট টার্ম মেমোরি লসের সমস্যার মতো বিষয়টিও কী কুশের চরিত্রকে এক অন্য মাত্রা দিয়েছে?
## কুশের শর্ট টার্ম মেমোরি লসটা কেন ? সেটা কিভাবে হলো ? তার এই রোগটা কেন, কীভাবেই বাড়ছে ? কেন সে এভাবেই রয়েছে ? এসবই হচ্ছে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। সেটাই চমক এই ধারাবাহিকের। প্রতি পর্বে দর্শক বিষয়টা বুঝতে পারবে।
‘ত্রিনয়নী’-র পর আবার সহ অভিনেতা শ্রুতি ও পরিচালক স্বর্ণেন্দু সমাদ্দারের সঙ্গে কাজ করছ। তোমাদের ঘিরে ইতিমধ্যেই দর্শকের একটা প্রত্যাশা রয়েছে। সেই চাপটা একজন অভিনেতা হিসেবে কীভাবে দেখছ?
## আমার কাছে এই চাপটা কিছুটা বেশিই। ভাবনাচিন্তা করতে হচ্ছে। আমার দায়িত্ব অনেক বেড়ে গিয়েছে। আরও বেশি করে দায়িত্ব নিতে শুরু করেছি। আরও ভালো কাজ করতে হবে।
কুশের সঙ্গে নিজের কতখানি মিল খুঁজে পেয়েছ ?
## একটু মজার ছলেই বলি, আমিও মাঝে মাঝে ভুলে যাই, যেরকম সবাই ভুলে যায়। আমিও কোথাও এই রকমই সাদাসিধে। এইরকমই সরলভাবে বাঁচি। তবু, আমাদের মধ্যে মিলের চেয়ে অমিলই বেশি।
শ্রুতির সঙ্গে অনেকদিন পর আবার কাজ করে কেমন লাগছে ?
## শ্রুতি আমার পুরোনো বান্ধবী। ভালো তো লাগবেই। আরও বেশি ভালো লাগছে, নতুনভাবে আমরা নতুন চরিত্রে অভিনয় করছি। ব্যক্তিগতভাবে আমি খুব উপভোগ করছি ব্যাপারটা। কাজ করতে গিয়ে কোনওরকম অসুবিধা হচ্ছে না। বরং বোঝাবুঝি থাকায় তাড়াতাড়ি কাজ হয়ে যাচ্ছে।
পুরোনো চরিত্র আহীরের থেকে বেরিয়ে কুশ হওয়ার জন্য কিছুটা সময় তো নিশ্চয়ই লেগেছে তোমার। এই সুইচ অন, সুইচ অফের বিষয়টা কিভাবে করলে?
## এইটা আমাকে প্রতিদিন করতে হয়। এটা আমার কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। প্রতিনিয়ত এটাই করে যাই। চেষ্টা করি নতুন ভাবে নতুন ভূমিকায় দর্শকদের কিছু দেওয়ার। এটাই তো আমার তালিম।
তুমি কয়েকটি ছবিতেও কাজ করেছ। তোমাকে আমরা হরনাথ চক্রবর্তীর ‘অমর প্রেম’, বাবা যাদবের ‘গেম’, মৈনাক ভৌমিকের ‘একান্নবর্তী’-তে অভিনয় করতে দেখেছি। আবার কবে তোমাকে বড়পর্দায় দেখতে পাবো?
## বেশ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। কথাবার্তা চলছে। ২০২৩-এর শেষে বা বলতে পারো ২০২৪ থেকে সেগুলো শুরু করব। আমি ভালো গল্পের সন্ধান করছি। নিজেও বেশ কিছু লেখা লিখছি। ‘রাঙা বউ’-ই আমার অভিনীত শেষ মেগা ধারাবাহিক হতে চলেছে। এরপর পুরোপুরি ছবিতেই মনোনিবেশ করব।
‘রাঙা বউ’ নিয়ে দর্শকদের উদ্দেশ্যে কি বলবে?
## দর্শকদের বলবো আপনারা ‘রাঙা বউ’ দেখুন। উপভোগ করুন। এটা একটা অন্য ধরণের, ভিন্নস্বাদের গল্প। সম্পূর্ণ বিনোদনমূলক। দর্শক দিনের শেষে বিনোদনটাই বেশি পছন্দ করে। সেই বিনোদন সম্পূর্ণভাবে এখানে রয়েছে। আর দেখে অবশ্যই ফিডব্যাক দেবেন।