এ বং পজিটিভ-এর নিবেদন ‘লীলা’
এ বং পজিটিভ-এর নবতম প্রযোজনা ‘লীলা’। আশিস কুমার দাসের লেখা ‘মৃত্যুলোকে সশরীরে’ অবলম্বনে তৈরি হয়েছে নাটক ‘লীলা’। নাটকটিতে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মেলবন্ধন ঘটেছে। হিন্দু পুরাণ ও গ্রীক পুরাণের নারী চরিত্রকে এক জায়গায় নিয়ে এসে, তাদের অবস্থা, পরিস্থিতির টানাপোড়েন ও লড়াই নাটকের মুখ্য বিষয়। এছাড়াও এখানে সেকাল আর একালের নারীজীবনের একটি তুলনামূলক ছবিও উঠে আসবে। অভিনয়ে আছেন মানসী কুন্ডু, রিমি দেব, পাপিয়া পাল ও অর্পণ বোস। সামগ্রিক পরিকল্পনা বাপ্পা। শব্দ, পোশাক, আলো ও অভিনয়–সব মিলিয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ প্রযোজনা ‘লীলা’। আগামিকাল, সন্ধ্যা ৭টায় অশোকনগর শহীদসদনে, পশ্চিমবঙ্গ নাট্যমেলার আমন্ত্রণে মঞ্চস্থ হচ্ছে ‘লীলা’।
নাটকের গল্পে রয়েছে তিনটি নারী চরিত্র–বেহুলা, সাবিত্রী, এউরিদিকে আর একটি পুরুষ চরিত্র মৃত্যুরাজ। আমরা সকলেই হয়তো বেহুলা, মৃত্যুরাজ চরিত্রগুলোর সঙ্গে কমবেশি পরিচিত। কিন্তু এউরিদিকে চরিত্রটি অনেকের কাছেই অজানা। তার সম্পর্কে জানা যায় গ্রিসের প্রাচীন ইতিহাস থেকে। লেখক আশিস কুমার দাস তিনটি নারী চরিত্রকে এক জায়গায় নিয়ে এসেছেন। তারই নাট্যরূপ দিয়েছেন নির্দেশক বাপ্পা।
নাটকে আমরা দেখব, একদিকে বেহুলা ও সাবিত্রীর স্বর্গলোকে আসা এবং তাদের কঠিন লড়াই ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেবতার কাছ থেকে স্বামীর প্রাণ ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া। অন্যদিকে এউরিদিকে গল্পের সম্পূর্ন ভিন্ন দিক তুলে ধরেছে। নাটকে দেখা যাবে, এউরিদিকের মৃত্যু ও তারপর তার স্বামী অরফিউস সকল প্রতিকূলতা পার করে স্বর্গে আসে এবং স্ত্রীর প্রাণ ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চায় মৃত্যুরাজের কাছ থেকে। যদিও দেবতার ষড়যন্ত্রে সে ব্যর্থ হয় এবং তার স্ত্রী এউরিদিকে চিরদিনের জন্য রয়ে যায় এই মৃত্যুপুরীতে। সে প্রতীক্ষা করতে থাকে তার স্বামী অরফিউসের।
চূড়ান্ত আবেগপূর্ণ এক ক্লাইম্যাক্স-এর মধ্য দিয়ে নাটক শেষ হয়, যা দর্শকের মনেও অদ্ভুত হাহাকার তৈরি করবে বলে দাবি প্রযোজকদের। কাহিনির অনুষঙ্গে অভিনেতাদের সংবেদনশীল অভিনয়ে দর্শক হৃদয়ে এক শূন্যতার অনুভব সৃষ্ট হয়। আর এখানেই এই নাটকের সার্থকতা বলা যায়। বিশেষভাবে বলতে হয় অর্পণ বোসের কথা। তিনি একাধারে মৃত্যুরাজ, অরফিউস, সত্যবান ও লখিন্দর এই চারটি চরিত্রকে মঞ্চে প্রতিষ্ঠা করেন।