দাবাং ৪-এ নতুন চুলবুল
ভাইজানের হলো কী ? ক্যাটরিনার বিয়ে, আমির খানের তৃতীয় বিয়ের রটনা, শাহরুখের সুখী দাম্পত্য–এসব দেখেশুনে কী চিন্তাভাবনার জগৎটাই পাল্টে গেল সল্লু মিঞার ? দাবাং-এর চার নম্বর ইনস্টলমেন্টে পৌঁছে, প্লট থেকে শুরু করে চুলবুল ইমেজ–সবই বদলে দিতে চলেছেন তিনি! খবরটা জানার পর থেকে তাঁর ভক্তকূল এমনটা সন্দেহ করবে, সেটাই তো স্বাভাবিক !
খবরে প্রকাশ, ‘পান সিং তোমর’, ‘সাহিব বিবি আউর গ্যাংস্টার’ ছবির নির্দেশক, বলিউডের এই মুহূর্তের প্রতিভাবান লেখক-পরিচালকদের অন্যতম তিগমাংশু ধুলিয়াকে সলমন খান বেছে নিয়েছেন ‘দাবাং ৪’ পরিচালনার জন্য। এই নির্বাচনের মূল লক্ষ্য, ভাইজান চাইছেন, গল্পের পট এবার অনেক বেশি সিরিয়াস ও রিয়ালিস্টিক হবে। এমনকী চুলবুল পান্ডেও বেশ কিছুটা ভিন্ন রূপেই আসবেন দর্শক দরবারে। চরিত্রটি মজাদার নিশ্চয়ই থাকবে আগের মতোই–তাই বলে আমাদের অতি চেনা ‘মস্তিখোর’ চুলবুল নয়! এই নিয়ে খুব বেশি প্রচার চাইছেন না কোনও পক্ষই। তিগমাংশু ব্যস্ত কাহিনি ও চুলবুল-চরিত্র নির্মাণের কাজে। এ কাজ তাঁর মতো গুণীর পক্ষেও কতদূর চ্যালেঞ্জিং বলে দেওয়ার দরকার পড়ে না।
চুলবুলের দাবাং যাত্রা শুরুর পর প্রায় একযুগ কেটেছে। বয়স বেড়েছে চুলবুলের। সেই হিসেবেই তার স্বভাব-আচরণে বদল চাইছেন সলমন। এ যেন পর্দার চরিত্রের ছায়ায় নিজেকেও আয়নায় দেখা। আবদুল রশিদ সেলিম সলমন খান। বি টাউনের সবচেয়ে বিতর্কিত এই মানুষটি এক অদ্ভুত সমীকরণে তাঁর পর্দার ও পর্দার বাইরের জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছেন। তাঁর অপরাধের রেকর্ড যত উঠে এসেছে প্রকাশ্যে, তত হিট হয়েছে সলমনের ছবি। ‘দাবাং’ সিরিজ থেকে টাইগার, ওয়ান্টেড, সুলতান বা প্রেম রতন ধন পাইয়ো, হাম আপকে হ্যায় কৌন, হাম সাথ সাথ হ্যায়, তেরে নাম, বজরঙ্গি ভাইজান থেকে রেডি বা কিক এবং আরও অজস্র ছবি–সাফল্য তাঁর পিছু ছাড়েনি।
২০০৮-এ সলমনের টেলিভিশনে খাতা খোলার পালা শুরু ‘দশ কা দম’ গেম শোয়ের মাধ্যমে। সর্বকালের অন্যতম সেরা এই হিট শোয়ের পর ২০১০, অর্থাৎ তাঁর ‘দাবাং’ বর্ষ থেকেই ‘বিগ বস’ হোস্ট করা শুরু করেন সলমন, যা ইতিমধ্যেই সিজন ১৫ পার করেছে। ছবি থেকে টিভি শো প্রযোজনা–সলমনের এক্ষেত্রেও সাফল্য প্রশ্নাতীত। প্রচুর পুরস্কার ঝুলিতে পুরেছেন এ যাবৎকাল। সেসব আর বিস্তারে না গিয়ে ফিরবো ‘দাবাং’ প্রসঙ্গে। এই যে এবার তিনি পরিবর্তন চাইছেন দাবাং-চুলবুল ইমেজে, এ চ্যালেঞ্জ আসলে তাঁর নিজের সঙ্গে। বয়সের পরিণতির হাত ধরে নতুন সলমন খানকে উপহার দিতে চাইছেন তিনি। মনে পড়ছে ওঁর ‘বিগ বস’ হোস্ট শুরুর আগের কথা। সেই সময় সোনি টিভির সৌজন্যে একটি সাক্ষাৎকার নেওয়ার সুযোগ পাই সলমনের–ভায়া ই-মেল। তাতে, ‘এত ব্যস্ততার মাঝে উনি ছুটি বা অবকাশ কেমন করে খুঁজে পান ?’–প্রশ্নের জবাবে সলমন লিখেছিলেন, Life is a holiday–আলাদা করে ছুটির আর দরকার কী ?! সেই মন নিয়েই দাবাং ঝড় আনছেন তিনি আগামী দিনে। নতুন মাত্রায় বি টাউনের স্টুডিওর সীমানা অতিক্রম করে সে ঝড় কতদূর আছড়ে পড়বে, সে তো সময়ই বলবে। শেষ করবো একটি পরিসংখ্যান দিয়ে। ২০১০-এ দাবাং, পরিচালনা অভিনব কাশ্যপ, লাভ ২১৯ কোটি। ২০১২-তে দাবাং ২, পরিচালক আরবাজ খান, লাভ ২.৬৫ বিলিয়ন। ২০১৯-এ দাবাং ৩, পরিচালনা প্রভু দেবা, লাভের অঙ্ক ৩২৫ কোটি টাকা। তিগমাংশুর হাত ধরে দাবাং ৪ কোথায় পৌঁছয়, সে দিকে তাকিয়ে সকলেই।