Monday, February 3, 2025
সম্পাদকীয়

ধীরে নাসির ধীরে

বলিউডের কিংবদন্তী অভিনেতা তিনি। মঞ্চ থেকে সেলুলয়েড–সর্বত্র অবাধ গতি। কাজ করেছেন হলিউডেও। এহেন নাসিরুদ্দিন শাহ আরও একবার খবরের শিরোনামে। খবর না বিতর্ক! আদতে নানা বিষয়–তাঁর কাজের ক্ষেত্র বা তার বাইরেও বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগ নাসিরুদ্দিন সম্পর্কে বারবার উঠে এসেছে। তিনি একজন অপরিসীম শক্তিশালী, শিক্ষিত এবং অবশ্যই সমাজমনস্ক অভিনেতা। তা সত্ত্বেও, নাসিরের কথাবার্তা অধিকারের সীমা ছাড়িয়ে যায়, এমনটা বি টাউনের অনেকেই মনে করেন। এই মুহূর্তে দেশের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর একটি জায়গায়। রাজনৈতিক ঘোলাজলের ব্যাপারটা তো আছেই। সমাজের কিছু মানুষের মধ্যে ধর্মান্ধতার ভাবনাও বেশ প্রকট। এটাও সত্যি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিপরীত একটা বার্তা ইদানীং দেশের আনাচেকানাচে উড়ে বেড়াচ্ছে। দেশের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন সব মানুষই এ বাবদ আশঙ্কাগ্রস্ত। নাসিরুদ্দিনও নিশ্চয়ই তার ব্যতিক্রম নন।

তিনি নাকি রীতিমতো গৃহযুদ্ধের ভয় পাচ্ছেন–এ যেন বড় বেশি মরিয়া ভাবাপন্ন একটি উক্তি। সম্প্রতি মুম্বইয়ে সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে একথা জানিয়েছেন তিনি। সমস্যাটা এখানেই ! বিষয়টি একেই জটিল ও বিতর্কিত। নাসিরের মাপের একজন এই প্রসঙ্গে কিছু বললে তার গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়। কোনও ঘটনার প্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিক ভাবে কিছু বলা একরকম আর সামগ্রিক পরিস্থিতির বিচারে বললে সেটা আর একরকম। সেক্ষেত্রে মন্তব্যকারী যে-ই হোন, কথার ধার ও ভার ভেবে মন্তব্য করাই ভালো। একটা কথা মনে রাখা দরকার, যাবতীয় উস্কানি বা প্ররোচনা সত্ত্বেও দেশের অধিকাংশ মানুষ আজও মনেপ্রাণে অসাম্প্রদায়িক। এক্ষেত্রে নাসিরের উগ্র মন্তব্যে কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে না পড়ে। এই জায়গাটাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অনেকে। তাঁদের কথায়, নিরপেক্ষতা নয়, কোথাও যেন আবেগের বশে একপেশে মনে হচ্ছে নাসিরের বক্তব্য। ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে সচেতন হবেন তিনি, এমনটাই প্রত্যাশিত এই প্রাজ্ঞ অভিনেতার কাছে।