Monday, February 3, 2025
বিনোদনের ছোট বাক্স

পঞ্চমী হয়ে ওঠা সবদিক থেকেই অভিনব 

আকারে ছোট হলেও বিনোদন ক্ষেত্রে টেলিভিশনের গুরুত্ব আজ অসীম। মেগা থেকে রিয়ালিটি, গেম শো থেকে ম্যাগাজিন–টিভি শোয়ের চাহিদা ছিল, আছে, থাকবে। এই বিভাগে তারই খবর প্রতি সপ্তাহে। স্টার জলসার নতুন ধারাবাহিক ‘পঞ্চমী’, নাম ভূমিকায় ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী সুস্মিতা দে। মেগার সেটে একান্ত আলাপচারিতায় নানাকথা জানিয়েছেন সোমনাথ লাহাকে।

সুস্মিতা, তুমি এর আগে ‘বৌমা একঘর’, তার‌ও আগে ‘অপরাজিতা অপু’-তে যেরকম চরিত্রে অভিনয় করেছিলে, ‘পঞ্চমী’ তার থেকে একেবারেই আলাদা। সেটাই কী এই চরিত্রে কাজ করতে রাজি হওয়ার কারণ ?

একদমই তাই। তুমি ঠিকই বলেছ। এটা একদমই আলাদা একটা চরিত্র। অপু বা টিয়া–এর আগে যে চরিত্রগুলোয় আমি অভিনয় করেছি, ওরা শহরের শিক্ষিত মেয়ে ছিল। এখানে আমার চরিত্র ‘পঞ্চমী’ গ্রামের সাদামাটা একটা মেয়ে। এই গল্পটার মধ্যে রূপকথাও রয়েছে। আমার মাইথোলজি ভীষণ পছন্দের। তাই গল্পটা শুনেই আমি হ্যাঁ বলেছিলাম। হ্যাঁ, আমি হতে চাই সাপ!(হাসি)

Img 20221126 Wa0013
পঞ্চমী হয়ে ওঠা সবদিক থেকেই অভিনব  7

মেগার গল্পের বিষয়ে তোমার ভাবনা জানাও।

সাহানা দত্ত লিখেছেন এর গল্প। সাহানাদি ভীষণ ভালো গল্প লেখেন। এটা তো আর আমার বলার অপেক্ষা রাখে না। সকলেই সেটা জানে। সাহানাদির গল্প মানেই নতুন কিছু একটা আসতে চলেছে। একটা উত্তেজনা মনের মধ্যে ছিল। মনে হচ্ছিল, দারুণ ও অভিনব কিছু একটা থাকতে চলেছে মেগায়। পেলামও সেটা। বলতে পারি, এটাই আমায় ভীষণভাবে আকর্ষণ করেছিল।

এই ইউনিটের সঙ্গে কাজ করে কেমন লাগছে ?

ইউনিটের সকলেই ভীষণ ভালো। ভীষণ পজেটিভ।  এই ইউনিটে কেউ মুখ গোমড়া করে বসে আছে, ভীষণ সিরিয়াস–এমনটা কখনওই দেখিনি। আমাদের পরিচালক সাহানাদি যেরকম মজা করেন, অভিনেতারাও সেরকমই মজাদার মানুষ। বাকি টেকনিশিয়ানরা–তাঁরাও খুবই ভালো।

রাজদীপের সঙ্গে এটা তোমার প্রথম কাজ। কেমন অভিজ্ঞতা হলো ওর সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করে ?

খুব ভালো অভিজ্ঞতা। প্রথমবার কাজ করলাম। সেই দিক থেকে বলতে পারি, ভীষণ ভালো লেগেছে। সহ অভিনেতা হিসেবে রাজদীপ দারুণ। খুব মজা করে। সেটা আমার খুব ভালো লাগে। আমাদের যেটা হয়, আমরা শুটিং করতে করতে প্রচণ্ড সিরিয়াস হয়ে পড়ি। প্যানিকের দৃশ্য থাকলে আমাদের নিজেদের মধ্যেও বিষয়টা ঢুকে যায়। মনে হয় যে প্যানিক হচ্ছে। কিন্তু তার মাঝে যদি কেউ একটু হাসিয়ে দেয়, মজা করে সেই ব্যাপারটা আমার ভালো লাগে। রাজদীপ সেইরকমই একজন।(হাসি)

তুমি এর আগে যে চরিত্রগুলোয় অভিনয় করেছ সেগুলো শহুরে। পঞ্চমী গ্রামীণ আটপৌরে মেয়ে। তার কথা বলার ধরণ‌ও আলাদা। এর জন্য কি আলাদাভাবে তোমায় এই dialect শিখতে হয়েছে?

শিখতে হয়েছে বলতে, আলাদা করে শিখিনি। শুটিংয়ের সময় অভিনয় করতে করতেই বিষয়টা অনেকটা প্র্যাক্টিস হয়ে গিয়েছে। তবে, এটা সত্যি যে, প্রথমদিকে আমার ভীষণ রকম‌ই অসুবিধা হচ্ছিল। কারণ, আমরা তো একদমই ওভাবে কথা বলতে অভ্যস্ত ন‌ই। পারচিনে, করবোনে–চ-বলা, ছ-এর বদলে। তারপর পেরান–এই জাতীয় উচ্চারণ করে কথা বলতেও শুরুর দিকে অসুবিধা হচ্ছিল। তবে, এখন অনেকগুলো এপিসোডের শুটিং হয়ে গিয়েছে। তাই আমার কাছেও বিষয়টা অনেকটা সড়গড় হয়েছে। এখন আর অসুবিধা হচ্ছে না।

Img 20221222 Wa0060
পঞ্চমী হয়ে ওঠা সবদিক থেকেই অভিনব  8

এই চরিত্রটার লুকও তো আলাদা। তুমি একজন শহরের মেয়ে। সেখানে প্রথমবার এরকম এক লুক–

(প্রশ্ন শেষ হ‌ওয়ার আগেই) এই লুকটা আমার ভীষণ ভালো লেগেছে। আমার যত মেকআপ করতে না হয়, তত বেশি ভালো লাগে। এটা একদমই নো মেকআপ লুক। কিচ্ছু করতে হয় না। পাঁচ মিনিটেই হয়ে যায়। মাঝে মাঝে আমি নিজেই মেক‌আপটা করে ফেলি। সেই কারণেই এই লুকটা আমার ভীষণ পছন্দ হয়েছে।

পঞ্চমীর চরিত্রটার দ্বৈতসত্ত্বা রয়েছে। সে একাধারে মানবী, আবার অন্যদিকে সাপ। সেই বিষয়টা শুটিং করার সময় কতটা আকর্ষণ করেছে তোমায়?

সেটা ভীষণ‌ই ইন্টারেস্টিং। আমি যখন শুটিং করছি, তখন আমার নিজের‌ই কাজটা করতে ভীষণ ভালো লেগেছে। খালি মনে হতো, যে, এইবার কী হবে! এইবার পঞ্চমী কী করবে ? ওর সঙ্গে কী হবে? শুটিংয়ের ক্ষেত্রেও এটা সত্যিই খুব অন্যরকম একটা অভিজ্ঞতা।  আশা করছি দর্শকদের দেখতেও খুব ভালো লাগবে বিষয়টা। কারণ প্রত্যেকটা পর্বে দুর্দান্ত excitement তৈরি হয়েছে।

মেগা মানেই বেশিরভাগ ইন্ডোর শুটিং। সেখানে এই ধারাবাহিকে অনেকটাই আউটডোরে হয়েছে। বারুইপুর বা কলকাতার নলবনে আউটডোর শুটিং কতটা উপভোগ করলে?

শুটিংয়ের অনেকটাই আউটডোরে হয়েছে। এখনও হচ্ছে। প্রসঙ্গত, আমি এখনও ফ্লোরে সেভাবে শুটিং করিনি। কারণ, কাহিনির চলন হিসেবে এখনও আমার বিয়ে হয়নি। এই বাড়িতে (অর্থাৎ সেটে, যেখানে সাংবাদিক সম্মেলন হচ্ছে) সেই কারণেই আমি এখনও ঢুকিনি। তাই আপাতত আউটডোর শুটিংয়ের মধ্যেই আছি। ভালো লাগছে। মজাও হচ্ছে।

Pxl 20221126 140442799
পঞ্চমী হয়ে ওঠা সবদিক থেকেই অভিনব  9

এখন‌ও পর্যন্ত যতটুকু কাজ করেছ–কেমন ফিডব্যাক পেয়েছ?

প্রোমো দেখে সবাই খুব পজেটিভ রেসপন্স দিয়েছে।  ফিডব্যাক যা পেয়েছি, উৎসাহব্যঞ্জক। সেটা আমার খুব ভালো লেগেছে। কারণ এই প্রোমোটার শুটিং করার সময়ই আমার মনে হচ্ছিল, অন্যরকম কিছু একটা আসতে চলেছে। আমাদের বাংলা টেলিভিশনে অনেকদিন পর এরকম কিছু হচ্ছে। দর্শকও ভীষণ excited আমাদের মতোই। আমি নিজে তো প্রচন্ড excited ! কতটা, তা বলে বোঝাতে পারবো না (হাসি)।

মাঝে কিছুদিন বিরতির পর পঞ্চমীর চরিত্রটার হাত ধরে অন্যরকম ভাবে দর্শকদের সামনে এসেছ তুমি। কিছুটা সময় বিরতি পেলে কী ফ্রেশভাবে কাজ করতে সুবিধা হয়?

একদম তাই। আমি খুব ফ্রেশভাবে কাজটা শুরু করেছি। এই ধারাবাহিকের শুটিং শুরুর আগে আমি দেড়-দু’মাসের ছুটি কাটিয়েছি। প্রচুর ঘুরেছি। মজা করেছি। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়েছি। বেড়াতে গিয়েছি। এর ফলে এই ধারাবাহিকের কাজটা আমি ফ্রেশভাবে শুরু করতে পেরেছি। সত্যিই, সময়ের এই গ্যাপটা খুব জরুরি ছিল আমার জন্য।

আগামী দিনে কি তোমায় ধারাবাহিক ছাড়া অন্য মাধ্যমে দেখতে পাবো–মানে ওয়েব সিরিজ বা সিনেমা ?

আগে ‘পঞ্চমী’-র গোলটা পূরণ হোক। তারপর সবটাই হবে ধীরে ধীরে।