Monday, February 3, 2025
বিনোদন প্লাস স্পেশাললাইম-Light

বাদশার সাম্রাজ্য অটুট

আরিয়ান খানের বিরুদ্ধে ভারতীয় নারকোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)-র আনা ষড়যন্ত্রের প্রাথমিকভাবে কোনও প্রমাণ মেলেনি বলে জানিয়েছে বোম্বে হাইকোর্ট। এ খবর ইতিমধ্যেই জানা হয়ে গেছে সকলের। এও প্রকাশ, অভিযুক্তরা ক্রুজে যাচ্ছিলেন, শুধু সেই ভিত্তিতে তাঁদের বিরুদ্ধে মাদক আইনের ২৯ নম্বর ধারা প্রয়োগ করা যাবে না। বিচারপতি নীতিন সামব্রে জানিয়েছেন, আরিয়ানের কাছ থেকে কোনও মাদক উদ্ধার হয়নি। এছাড়া, আরবাজ ও মুনমুনের কাছ থেকে যে মাদক উদ্ধার করা হয়েছে, সেটাও মাদক আইন অনুযায়ী ‘কম’। এরই সঙ্গে, আরিয়ানের হোয়্যাটসঅ্যাপ চ্যাটেও কোনও ষড়যন্ত্রের প্রমাণ মেলেনি বলে জামিনের আদেশে জানিয়েছে হাইকোর্ট।

কথা হলো, এরপর কী ? এনসিবি কী এবার সুপ্রিম কোর্টে যাবে ? এ প্রতিবেদন যখন লিখছি, তখনও পর্যন্ত এমন কোনও তথ্য জানা যায়নি। সামগ্রিকভাবে ঘটনাটি এখনও বিচারাধীন। অতএব, এই বিষয়ে আগামী দিনে কী ঘটতে চলেছে, সে বিশ্লেষণ এখনই নয়। এটুকুই বলার, বিনোদন দুনিয়াকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া এই গুরুত্বপূর্ণ খবরের ওপর বাকি সব মিডিয়ার মতো আমাদেরও নজর থাকবে। তবে, তার আগে চলুন ঘটনার অন্য পিঠে কী আছে দেখা যাক ! নিন্দুকেরা শুরু থেকেই বলছে আরিয়ান তো উপলক্ষ মাত্র! লক্ষ্য যিনি, আরিয়ানের নেপথ্যে তিনিই ছিলেন বরাবর আলোচনার, আকর্ষণের, বিতর্কের কেন্দ্রে !

আমরা বরং তাঁকেই কিছুটা বোঝার চেষ্টা করি। কেন তাঁকে ভক্তরা বলিউডের বাদশা রূপে গণ্য করে, তা আরও একবার প্রকাশ পেল সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে। ছেলে আরিয়ানের ড্রাগচক্র-যোগের অভিযোগ, তার গ্রেফতার, জামিন পাওয়াকে ঘিরে একের পর এক নাটক এবং এনসিবি আধিকারিক বিতর্ক–এতকিছুর মধ্যে নিজেকে স্থির ও অবিচল রেখেছিলেন শাহরুখ খান। এমনকী ছেলেকে দ্রুত ছাড়িয়ে আনার ব্যাপারেও আইনের বাইরে গিয়ে কোনও আর্থিক লেনদেন বা প্রভাব-প্রতিপত্তি খাটিয়েছেন, এমনটা তাঁর অতি বড় সমালোচকও বলতে পারবে না।

কোনও কটূক্তি বা আক্রমণ নয়! কারও বিরুদ্ধে একটি কথাও বলেননি তিনি এখনও পর্যন্ত। যদিও জানতেন সারা বিশ্বের অগণিত বিনোদন-প্রেমী মানুষ আছে তাঁর পিছনে। তাদের কেউ কেউ প্রবল পরিমাণে অন্ধ। সামান্য স্ফুলিঙ্গতেই আগুন জ্বলে উঠতে পারে। সেখানেও ঠান্ডা মাথায় সুবিবেচকের ভূমিকাতেই দেখা গেছে তাঁকে। বলিউডের তাবড় তাবড় ব্যক্তিত্ব তাঁর পাশে থেকেছেন। সেখানেও স্তিতধী তিনি। বিনয়ের সঙ্গে সহমর্মিতা গ্রহণ করেছেন। এড়িয়ে চলেছেন অপ্রয়োজনীয় আলোচনা ও বিতর্ক। ছেলেকে গরাদের আড়ালে চরম বিপর্যস্ত অবস্থায় দেখে কেঁদে ফেলেন, এটুকুই এতবড় কাণ্ডে ছিল শাহরুখের প্রতিক্রিয়া। সে তো আমার-আপনার ঘরের বাবারও করবেন। বলা যায়, দেশের আইন ব্যবস্থার ওপর আস্থা রেখেই জীবনের কঠিনতম প্রহর পার করেছেন কিং খান।

এই পুরো বিষয় বা প্রতিক্রিয়া শাহরুখের নিজের ইমেজ বজায় রাখার স্ট্রাটেজি হতে পারে। তিনি বরাবর অত্যন্ত ডিপ্লোম্যাটিক, সকলেই জানে। জলে বাস করে কুমীরের সঙ্গে বিবাদ করবার মতো নির্বুদ্ধি তো তিনি মোটেই নন। তবু, শাহরুখের এই সংযত আচরণ প্রশংসার দাবি রাখে। গায়ে সামান্য আঁচড়টুকু লাগলে কারণে-অকারণে এদেশের বহু সেলিব্রিটি যেভাবে নিজেদের মর্যাদা হারিয়ে যা নয়, তাই কান্ড করেন, শাহরুখ অন্তত সেটা করেননি। তাঁর প্রকাশভঙ্গি সব অর্থেই ব্যতিক্রমী ছিল। শুটিং বন্ধ রেখেছেন। সংবাদ মাধ্যমকে এড়িয়ে চলেছেন যথা সম্ভব। মন্নতের সামনে তাঁর জন্মদিনে প্রতিবারের মতোই অপেক্ষা করেছিলেন শাহরুখের অগণিত ভক্ত। তাদেরও হতাশ করেছেন তিনি। এবার আর বাড়ির ছাদে বা ব্যালকনিতে এসে দাঁড়াননি শাহরুখ। মিডিয়া দেখাতে পারেনি তাঁর সেই হাসিমুখে ভক্তদের উদ্দেশ্যে হাত নাড়ার ছবি।

Images 12

এখন পরিস্থিতি কিছুটা আয়ত্তে আসার পর শুটিং শুরু করেছেন তিনি। তবে ধীর গতিতে। আপাতত আটকে থাকা কাজগুলি করবেন। পরিচালকদের অনুরোধ জানিয়েছেন ছোট ছোট শিডিউলে কাজ করার জন্য। এখন মন্নত ছেড়ে বেশিক্ষণ দূরে থাকতে চান না শাহরুখ। এরমধ্যেও সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন তিনি। বলেছেন, শুটিংয়ের ক্ষেত্রে ছবির বাকি শিল্পীদের কাজ আগে করিয়ে নিতে, যাতে তাঁদেরও সময় নষ্ট না হয় ! আর তিনি নিজেও পরিবারকে সময় দেওয়ার পাশাপাশি নিজের কাজটা করতে পারেন। ছেলের নিরাপত্তার বিষয়টাকে আলাদা করে গুরুত্ব দিচ্ছেন শাহরুখ। তাঁর ব্যক্তিগত দেহরক্ষী রবি সিং এখন থেকে আরিয়ানের সঙ্গে থাকবেন। বোঝাই যাচ্ছে, নিজের সঙ্গে সঙ্গে পরিবারকেও রাইট ট্র্যাকে আনার চেষ্টা করছেন শাহরুখ।

আজকের কথা লিখতে লিখতে বহু বছর আগে এক ডাক্তারের মুখে শোনা একটি গল্প মনে পড়ছে। একটি কাজে গিয়েছিলাম তাঁর কাছে। যাই হোক, বিনোদন সাংবাদিকতা করি এটা জানার পরই তিনি হাসতে হাসতে বললেন,”দাঁড়ান আপনাকে মুম্বইয়ের এক তারকার গল্প বলি। মুম্বইয়ের এক নামী হাসপাতালে কনসালট্যান্ট হিসেবে গেছি। একদিনের কথা, রাত তখন প্রায় ন’টা বাজে। হঠাৎ দেখি সারা হাসপাতাল জুড়ে খুব ব্যস্ততা। কিছুক্ষণের মধ্যেই সিকিউরিটির লোকজন হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডের দখল নিয়ে নিল এবং তিনি প্রবেশ করলেন !” বাকি গল্পটা এইরকম, ডাক্তারবাবু যে তারকার আসার কথা বললেন, তিনি শাহরুখ খান। হাসপাতালের শিশু বিভাগটির খরচাপাতি তিনিই চালান। শুধু টাকার যোগান দিয়েই দায়িত্ব সারেন না। নিয়মিত এসে ওয়ার্ডের শিশুদের সঙ্গে সময়ও কাটান সুযোগ পেলেই। “আমি তো অবাক শাহরুখের মতো একজন তারকা এসেছেন। অথচ মিডিয়া নেই। হাসপাতালের সুপার জানালেন, এটা ওঁরই কড়া নির্দেশ, মিডিয়া আসার অনুমতি নেই এখানে !”, যোগ করেন ডাক্তারবাবু।

Images 10

এই গল্প যখনকার, তখনও শাহরুখের মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ পাইনি। ইন্ডাস্ট্রিতে জায়গা করে নেওয়ার তাগিদে তাঁর লড়াই, জেদ, একাগ্রতা ইত্যাদি গুণের জন্য ওঁকে নিয়ে আগ্রহ দানা বাঁধছিল, এইটুকুই। গল্প শুনে আগ্রহ বাড়লো। বেশ কিছুটা অবাকও হয়েছিলাম। তারকা বলে যাঁদের আমরা জানি, তাঁরা অনেকেই সমাজসেবা করেন। তবে, সেইসবই মিডিয়াতে ফলাও করে প্রকাশ পায়। যাই হোক, এরপর তো মুখোমুখি হওয়ার সুযোগও এলো। বেশ কয়েকবারই হলো। আর প্রতিবারই নতুন ম্যাজিক ! নতুন করে চেনা মানুষটিকে।

একদম শুরুতে একটি সাংবাদিক সম্মেলন। এটা মুম্বইয়ে জি সিনে এওয়ার্ডস ফাংশনের সাংবাদিক সম্মেলন। কলকাতা সহ আরও বেশ কয়েকটি রাজ্যের সাংবাদিকরা হাজির। পাঁচতারা হোটেলের কনফারেন্স হলে আমরা টানটান অপেক্ষায়। শাহরুখ থাকবেন সাংবাদিক সম্মেলনে, সেটাই মুখ্য আকর্ষণ। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর এলেন তিনি। আমাদের পাশ দিয়েই এগিয়ে গেলেন মূল মঞ্চের দিকে। খুব সাধারণ চেহারার এক তরুণ। সেই অর্থে নজরে পড়ার মতো কিছুই নেই। কিন্তু যেই মঞ্চে গিয়ে কথা বলা শুরু করলেন, উপস্থিত সমস্ত মানুষের দৃষ্টি নিবদ্ধ হলো তাঁর প্রতি। মঞ্চে ছিলেন জি টিভির বিভিন্ন আধিকারিক। সাংবাদিক সম্মেলন শুরু হওয়ার পর তাঁরা তাঁদের বক্তব্য জানালেন। শাহরুখ বললেন, টেলিভিশন শুধু নয়, সিনেমা জগতের লোকজনের কাছেও কতটা গুরুত্বপূর্ণ এই পুরস্কার।

চমকপ্রদ ঘটনাটা ঘটলো এরপরই। সে বছর জি টিভি জয়পুর লিটারারি ফেস্টিভ্যাল স্পনসর করেছিল। একজন সাংবাদিক জি টিভির এম ডি-কে প্রশ্ন করলেন, “আপনারা হঠাৎ জয়পুর লিটারারি ফেস্টিভ্যাল স্পনসর করলেন ?” জবাবে এম ডি, “ওরাও ফিকশন নিয়ে কাজ করছে। আমাদেরও কাজ সেটা নিয়েই…”! উত্তরটা খুব যথাযথ হলো না। কারণ, সাহিত্য নিছক ফিকশন নয়। শাহরুখ সেটা বুঝেই হয়তো মাইক্রোফোন চেয়ে নিলেন এবং এম ডি-র অনুমতি নিয়ে যেটা বললেন, “সাহিত্য-সংস্কৃতি হলো আমাদের পরিচয়। আমাদের শিকড় প্রোথিত রয়েছে এসবের মধ্যে। জি টিভি খুব ভালো কাজ করেছে এই উৎসব স্পনসর করে। আমাদের সকলেরই উচিত এই জাতীয় কাজের পাশে থাকা। আমিও থাকার চেষ্টা করি।” করতালিতে ফেটে পড়লো কনফারেন্স হল। পরদিন সব কাগজ সাংবাদিক সম্মেলনের খবরের হেডিং করলো শাহরুখের বলা কথা দিয়েই।

সেই প্রথম দেখলাম বলিউড বাদশার মিডিয়াকে কাজে লাগানোর বুদ্ধি। তাঁর এই প্রখর বুদ্ধির ঝলক এরপর বারবার দেখেছি। প্রতিভা, মেধা, বুদ্ধি, পড়াশোনা (প্রবল ব্যস্ততার মধ্যেও দিনে অন্তত ৪ ঘন্টা) আর দুর্দান্ত কমিউনিকেশন স্কিল–এই সবকিছুর যোগফল হলো শাহরুখ খান। তাঁর মতো মিডিয়া ফ্রেন্ডলি হতে আর কাউকে দেখিনি আজ পর্যন্ত। মনে পড়ছে কেবিসি-র কথা। প্রথম সাংবাদিক সম্মেলন ছিল এক সন্ধ্যায়। তার আগে একই চ্যানেলের একটি সেট ভিজিট ছিল। কাজ হয়ে যাওয়ার পর আমরা অপেক্ষা করছি। শাহরুখ আর আসেন না। সাংবাদিকরা সকলেই ক্লান্ত ও বিপর্যস্ত। বিরক্তও কেউ কেউ।

তখন তাঁর হোম প্রোডাকশন রেড চিলিজ-এর প্রথম ছবি ‘ওম শান্তি ওম’-এর শুটিং চলছে। সেখানেই ব্যস্ত শাহরুখ। অবশেষে রাত দশটায় এলেন তিনি। আমরা জনা বিশেক ছিলাম সেদিন। আমি সবচেয়ে সিনিয়র। শাহরুখ ঢুকেই হাতজোড় ও মাথা নিচু করে সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলেন। তাঁর ক্ষমা চাইবার ভঙ্গিতে এমন একটা সততা ছিল যে, লোকজনের ক্লান্তি ও বিরক্তি মুহূর্তে উধাও। আমার আজও মনে আছে, আমরা সবাই দাঁড়িয়েছিলাম। প্রত্যেকে না বসা পর্যন্ত উনি বসলেন না। বিশেষত, আমায় বললেন, ” ম্যাডাম প্লিজ আপ বৈঠিয়ে!” বড়দের সম্মান দেওয়ার ক্ষেত্রে শাহরুখের সুনাম জানতাম। সেদিন চাক্ষুষ করলাম।

কেবিসি-র পরপর বেশ কয়েকটি সাংবাদিক সম্মেলন ও শেষে কেবিসি-র সেট। তারমধ্যে অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে তুলনা প্রসঙ্গে শাহরুখের দুরন্ত জবাব সংবাদ মাধ্যমে বিশেষ চর্চার বিষয় ছিল তখন। ঠিক তখনই ‘ডন’ রিমেক করছেন ফারহান আখতার। শাহরুখ করছেন ‘ডন’। বিগ বি-র সঙ্গে তাঁর তুলনা বা উনি এখন মাঝে মাঝেই ‘বচ্চন সাহেবের জুতোয় পা গলাচ্ছেন’–এই জাতীয় উক্তির জবাবে শাহরুখের সহাস্য উত্তর, “অত বড় জুতোয় পা গলাবো আমি ? মাথা খারাপ হয়েছে আমার ?” তারপরই সিরিয়াস নোটে, ” বচ্চন সাব কিংবদন্তী। আমার ধৃষ্টতা নেই ওঁর সঙ্গে পাল্লা দেব। উনি ওঁর মতো কাজ করে ছাপ রেখেছেন। আমি আমার মতো চেষ্টা করবো।”

কেবিসি হোস্ট করা অনেকটা বড় চ্যালেঞ্জ ওঁর পক্ষে। এক্ষেত্রে শাহরুখের নিজের প্রস্তুতিপর্ব কীভাবে চলছে―আমার করা এই প্রশ্নের জবাবে শাহরুখ বলেছিলেন, “প্রচুর পড়াশোনা করছি। রোজ লাইব্রেরীতে যাচ্ছি। সিদ্ধার্থ ও টিমের অন্যদের সঙ্গে আলোচনায় বসছি।” এটা বলার সময় তাঁর একেবারে অন্য মেজাজ। যথেষ্ট সিরিয়াস তিনি। এটাই শাহরুখের বৈশিষ্ট্য। বিষয় হিসেবে নিজেকে ভাঙতে জানেন তিনি। কেবিসি-র সেটে দেখেছিলাম কী অসম্ভব স্মার্ট, তৎপর, মেধাবী আর কর্মদক্ষ শাহরুখ। ছোট ছোট টুকরো কাগজে লেখা স্ক্রিপ্টের অংশে একবার চোখ বোলাচ্ছেন আর ঝপাঝপ শট দিচ্ছেন।

প্রযোজক সিদ্ধার্থ বসু বলেছিলেন, “শাহরুখের টাইম ম্যানেজমেন্ট বিস্ময়কর !” সত্যিই তাই। সেদিন ব্যাক টু ব্যাক দুটি এপিসোডের শুটিং শাহরুখ শেষ করলেন মাত্র আড়াই ঘন্টায়। শুটিংয়ের পর আমাদের সঙ্গে ছবি তোলার পালা। অল্পবয়সী মেয়েরা হুড়োহুড়ি করবে স্বাভাবিক। শাহরুখ প্রত্যেককে সমান মনোযোগ দিয়ে, হেসে, মধ্যমনি হয়ে বসলেন তাদের মাঝখানে। আমি পিছনে, ছেলের দলের সঙ্গে। সব মিলিয়ে অভিনব অভিজ্ঞতা পুরোটাই। এই শো-তে পূর্ণ সাফল্য পাননি তিনি। দর্শক অমিতজীর জায়গায় গ্রহণ করেনি তাঁকে। শাহরুখ কিন্তু সেই ব্যর্থতা মেনে নিয়েই সরে যান। তবু, সিদ্ধার্থ বোস কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন শাহরুখকে। সেই সময় অমিতাভ বচ্চন প্রবল অসুস্থ। এদিকে এই শো বন্ধ রাখা অসম্ভব ! শাহরুখ ছাড়া বিকল্প হিসেবে আর কেউ ছিল না। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে তিনি তখন। শাহরুখ সেই জায়গাটা বুঝেই ঝুঁকিটা নিয়েছিলেন।

একদা কেরিয়ারটাও তিনি শুরু করেন প্রবল ঝুঁকি নিয়েই। তাঁর মুম্বইতে এসে ফুটপাতে রাত কাটানোর গল্প আজও বহু স্বপ্ন দেখা তরুণকে উদ্বুদ্ধ করে। আজ পরিণত বয়সে পৌঁছে ছেলেকে নিয়ে যে কঠিন সময় পার করলেন তিনি, সেখানেও বিরাট এক চ্যালেঞ্জ ছিল শাহরুখের সামনে। সেখানেও নিজের সভ্যতা, শালীনতা বজায় রেখে, রাগ-ক্ষোভ-দুঃখ হজম করে নিজেকে উত্তরণে পৌঁছে দিয়েছেন। তাঁর ভক্তরা তাঁকে রঙিন মেজাজেই দেখেছে এতকাল। এবারের রূপটা একেবারে আলাদা। কঠিনতম চ্যালেঞ্জটাও জিতলেন তিনি । তাঁর ভক্তদের কথার রেশ ধরেই বলি, এরপর আর বাদশাকে সিংহাসনচ্যুত করবে কে ?!