মিনার্ভা থিয়েটারে মঞ্চস্থ দুটি মনোজ্ঞ নাটক
নাট্যকার,নির্দেশক ও কবি শ্যামল চট্টোপাধ্যায়ের ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সম্প্রতি মিনার্ভা থিয়েটারে মঞ্চস্থ হয়ে গেল ৭০ জন অভিনেতার অংশগ্রহণে ৭০ মিনিটের জমজমাট এক উপস্থাপনা। অঙ্গীকার নর্থ-এর প্রযোজনায় এদিন মঞ্চস্থ হল দুটি নাটক–’ধস্তুরী মায়া’ ও ‘ডিম’। দুটি নাটকের বিষয়ই দারুণ প্রাসঙ্গিক এবং সমসাময়িক।
পরশুরামের গল্প অবলম্বনে এবং শ্যামল চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশনায় ‘ধস্তুরী মায়া’ নাটকটি আপাত হাসির মোড়কে এক গভীর অনুভবের গল্প বলে। বেঙ্গমা-বেঙ্গমীর বরে দুই বুড়োর তিরিশ বছর বয়স কমে যাওয়া ও তারপর নানা ভোগ-দুর্ভোগ পেরিয়ে আবার আগের বয়সে ফিরে আসা নিয়ে ধুন্ধুমার কাণ্ড ‘ধস্তুরী মায়া’য়। হাসি-গান-রঙ্গব্যাঙ্গের মোড়কে নানাবিধ আশা-আকাঙ্খা, মোহ-মায়া, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির এক চালচিত্র উঠে আসে এ নাটকে। নাচ-গান-পাপেট-আলো এবং শিল্পীদের দক্ষ অভিনয়–সব মিলিয়ে এক জমজমাট প্রযোজনা ‘ধুস্তুরী মায়া’। নাটক, সংগীত, নির্দেশনা ও অভিনয়ে শ্যামল চট্টোপাধ্যায়ের মুন্সিয়ানা বিশেষভাবে প্রশংসনীয়।
দ্বিতীয় পর্বে মঞ্চস্থ হলো ৭০ জন অভিনেতা সমৃদ্ধ ৭০ মিনিটের নাটক ‘ডিম’। শ্যামল চট্টোপাধ্যায় রচিত এই নাটকটি এই সময়ের এক জ্বলন্ত দলিল। স্বাধীনতার ছিয়াত্তর বছর পর, আজও কোনও এক প্রত্যন্ত গ্রামের ক্ষুধার্ত শিশুর কাছে আশ্চর্য প্রাপ্তি, অপার আনন্দ, বিশাল বিস্ময় খাওয়ার জন্য পাওয়া একটা গোটা ডিম। এই অভিজ্ঞতা আমাদের ভাবতে আশ্চর্য লাগলেও, নিষ্ঠুর ও বাস্তব সত্য। ছোট্ট ভাইকে ডিম খাওয়ানোর জন্য তার কিশোরী দিদিকে নিতে হয় চুরির দায়। তবু এই দারিদ্র্যের মধ্যেও চলে উত্তরণের লড়াই। এতজন শিল্পী সমন্বয়ে, এমন একটা বিষয়কে সফলভাবে মঞ্চে উপস্থাপিত করার জন্য নাট্যকার, সঙ্গীতকার, নির্দেশক ও অভিনেতা শ্যামল চট্টোপাধ্যায় প্রশংসার দাবি রাখেন। অজন্তা চৌধুরী