Monday, February 3, 2025
ওয়েব-Wave

রহস্যে টানটান ‘হাশ হাশ’

হাতে হাতে স্মার্টফোন। তরুণ প্রজন্মের চোখ ইদানীং নিত্যনতুন ওয়েব সিরিজে। সারা বিশ্বের স্ট্রিমিং বিনোদন এখন হাতের মুঠোয়। সেইসব সিরিজ নিয়েই নানাকথা এই বিভাগে। জুহি চাওলা, সোহা আলি খান, আয়েশা জুলকা প্রমুখ অভিনীত ‘হাশ হাশ’ নিয়ে লিখেছেন অজন্তা সিনহা

ওয়েব দুনিয়া ক্রমশ বিনোদন জগতের রথী মহারথীদের বিচরণক্ষেত্র হয়ে উঠছে। আর এর কারণও একাধিক। বড়পর্দায় একটি সিনেমা মুক্তির পর কিছুদিন কিছু অঞ্চলের মানুষ দেখলো, তারপর অপেক্ষা, কবে টেলিভিশন বা ওয়েব মাধ্যমে আসবে সেই ছবি ! টেলিভিশনের কথাও যদি বলি, তার শো-গুলি প্রদর্শনের ক্ষেত্রেও রেঞ্জের একটা সীমাবদ্ধতা আছে। একমাত্র ওয়েব মাধ্যমের কোনও সীমারেখা নেই। সারা বিশ্বে এক লহমায় সে পৌঁছে দেয় তার যাবতীয় পসরা, সে নিজেদের সিরিজ হোক বা হলে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা কিংবা টিভিতে প্রদর্শিত সিরিয়াল বা রিয়্যালিটি শো ইত্যাদি। মোদ্দা কথা, ওয়েব দুনিয়ার গ্রহণযোগ্যতা এখন সার্বিকভাবেই চরম পর্যায়ে।

Image 5 1
রহস্যে টানটান 'হাশ হাশ' 7

এই প্রসঙ্গেই যদি বলি বলিউড তারকাদের অনেককেই এই কারণেই ওয়েব দুনিয়া বিপুলভাবে আকর্ষণ করছে, বাড়িয়ে বলা হবে না। তাঁদের অনেকেই ওয়েব দুনিয়ার মাধ্যমে নিজেদের হারানো জমি খুঁজে পেয়েছেন, এটাও ঠিক। জবরদস্ত হিট এবং ভিন্নস্বাদের বলিউডি ছবি ‘দুশমন’ ও ‘সংঘর্ষ’ ছবির পরিচালক তনুজা চন্দ্র যখন আমাজন প্রাইমের জন্য ‘হাশ হাশ’ তৈরি করছেন জানা যায়, তখন থেকেই ওয়েব দর্শক বেশ কিছুটা নড়েচড়ে বসে স্বাভাবিকভাবেই। সকলেই জানেন, ওয়েব সিরিজের ক্ষেত্রে কনটেন্ট খুব গুরত্বপূর্ণ একটা দিক। তনুজার তো রক্তেই লেখালেখি। প্রখ্যাত লেখক কামনা চন্দ্রের কন্যা তনুজার বাকি দুই ভাই-বোন লেখক বিক্রম চন্দ্র এবং বোন চিত্র সাংবাদিক অনুপমা চোপড়া। প্রসঙ্গত, যশ চোপড়ার মারকাটারি হিট ‘দিল তো পাগল হ্যায়’-এর স্ক্রিনপ্লে-র সহ লেখক ছিলেন তনুজা। ব্যতিক্রমী ‘জখম’ ও ‘তমান্না’ ছবির চিত্রনাট্যও তাঁরই লেখা।

Image 1 1
রহস্যে টানটান 'হাশ হাশ' 8

‘হাশ হাশ’-এর লেখক-পরিচালকও মুখ্যত তনুজা। দুর্দান্ত হিট আমেরিকান সিরিজ ‘বিগ লিটল লাইজ’ থেকে নেওয়া হয়েছে এর গল্প। বলা যায়, আমেরিকান সিরিজটির ভারতীয়করণ যথেষ্ট সফল ভাবেই করেছেন তনুজা ও তাঁর টিম। যার ফলে, দর্শকমহলে এর দ্বিতীয় সিজনের জন্য তীব্র অপেক্ষা শুরু হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই। ৭ পর্বের প্রথম সিজনে আমরা দেখি চার মহিলার গল্প। এরা চার বন্ধু এবং এদের কিছু একটা বিষয় গোপন রাখতে হয়েছে। এই গোপনীয়তার পিছনে কী ? কোনও অপরাধ লুকিয়ে আছে ? পর্বে পর্বে সেই প্রশ্ন আর রহস্যই ঘন হয়ে উঠবে ক্রমে। এখানে একটা কথা বলা দরকার, তনুজা এই সিরিজে সামাজিক জটিলতার আবর্তের সঙ্গে থ্রিলার মেজাজটি দিব্যি মিলিয়েছেন। ‘হাশ হাশ’-এর সার্থকতা এখানেই।

পটভূমি গুরগাঁওয়ের ধনী এলাকা। এখানকার ওই চার মহিলা, যাদের সম্পর্কে আশপাশের লোকজন, বিশেষত পুরুষকুল খুব একটা ভালো ধারণা পোষণ করে না। আদতে প্রবল পুরুষতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে গিয়ে এই চার মহিলা তাদের দাবি, অধিকার ইত্যাদি প্রতিষ্ঠা করে। এই প্রতিষ্ঠার পথ যে খুব সরল ছিল না, তা অনুমেয় ওই মহিলাদের গোপন রহস্য লুকোনোর চেষ্টায়। ঘরে-বাইরে এই চার মহিলা নিজেদের ভাবনা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কোন কোন পথ অবলম্বন করে, সেই সূত্র ধরেই এগিয়ে যায় গল্প। একদিকে সম্মুখ সমর, অন্যদিকে জটিল ও গোপন রহস্য !

Image
রহস্যে টানটান 'হাশ হাশ' 9

অভিনয়ে বিষয়টি জমিয়ে তুলেছেন জুহি চাওলা, আয়েশা জুলকা, সাহানা গোস্বামী, সোহা আলি খান, করিশমা তান্না, কৃতিকা কার্মা ও নিশা জিন্দাল। প্রথম চারজনই বড় পর্দার, পরের দু’জনের কেরিয়ার টেলিভিশনের পর্দায় শুরু। শেষ জন সিনেমায় কেরিয়ার গড়ার লক্ষ্যে। এঁরা সকলেই বিখ্যাত। জুহি তো সুপারস্টার, একসময় রীতিমতো বলিউড শাসন করেছেন। এই সিরিজে আয়েশার কামব্যাক ঘটেছে। জুহি এর আগে অল্ট বালাজিতে একটা কাজ করেন। তবে, বেশ বড় স্তরে তাঁর প্রত্যাবর্তন ‘হাশ হাশ’-এই। ক্রিয়েটর তনুজা চন্দ্র আগেই বলেছি। স্ক্রিনপ্লে লিখেছেন আশিস মেহতা। গল্প শিখা শর্মা ও জুহি চতুর্বেদী। তনুজার পরিচালন সঙ্গী আশিস পান্ডে ও কোপাল নাইথানি। প্রযোজনা শিখা শর্মা, তনুজা চন্দ্র, বিক্রম মালহোত্রা। ২০২২-এর সেপ্টেম্বরে দেখানো হয় প্রথম সিজন। প্রত্যাশিত, আগামী অক্টোবরে আসবে ‘হাশ হাশ’-এর দ্বিতীয় সিজন। দর্শকমহলে আপাতত অপেক্ষার পারদ চড়ছে।