সেরাইকেলা ছৌ নাচের কিংবদন্তি শিল্পী কুমারী বাণীর বায়োগ্রাফি
সেরাইকেলা ছৌ নাচের কিংবদন্তি শিল্পী কুমারী বাণী। প্রজন্মগত ভাবে এই বিশেষ লোকায়ত নৃত্যধারার উত্তরাধিকার বহন করে চলেছেন তিনি। সেরাইকলা ছৌ নাচ যুগ যুগ ধরে একান্তভাবেই সেরাইকেলা রাজ পরিবারের নৃত্যচর্চার অঙ্গ ছিল, যেখানে পরিবারের পুরুষরাই নারী-চরিত্রগুলি সহ সমস্ত মুখ্য চরিত্রে নৃত্যাভিনয় করতেন। কুমারী বাণী এই প্রথা থেকে মুক্ত করে, অনন্যসাধারণ এই নৃত্যকলাকে আম জনতার দরবারে নিয়ে আসেন। সেরাইকলা ছৌ নাচের জনপ্রিয়তায় তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। পরবর্তীকালে তিনি শান্তিনিকেতনের কলাভবনে ভর্তি হন ও নৃত্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সংস্পর্শে আসার পর কুমারী বাণীর নৃত্য পরিবেশনে বাড়তি সৌকর্য যুক্ত হয়।
সম্প্রতি কলকাতায় ‘ছন্দবন্ধনে কুমারী বাণী’ শিরোনামে প্রকাশিত হলো এই গুণী নৃত্যশিল্পীর বায়োগ্রাফি। লেখক শিল্পী-কন্যা তিলোত্তমা দাস। প্রকাশক ‘কারিগর’। আনুষ্ঠানিক ভাবে বইটি প্রকাশ করেন সেরাইকেলা রাজবাড়ির সুযোগ্য বংশধর রাজা প্রতাপ আদিত্য সিং দেও। এছাড়াও বইপ্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত ভাষাবিদ পবিত্র সরকার, শিক্ষাবিদ দীপঙ্কর দাশগুপ্ত, সঙ্গীতজ্ঞ ও বিজ্ঞানী ডঃ ভিএম কুলকার্নি প্রমুখ। অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রসঙ্গীত ও অন্যান্য ধারার বাংলা গান পরিবেশিত হয়। পরিবেশনায় ছিলেন অজন্তা চক্রবর্তী ও পায়েল কর। অনুষ্ঠানে ঋতচেতা গোস্বামীর উপস্থাপনা বিশেষ মাত্রা যোগ করে।
প্রসঙ্গত, কুমারী বাণী হলেন বিখ্যাত মজুমদার পরিবারের কন্যা। তাঁর দুই ভাইয়ের একজন সাহিত্যিক কমল কুমার মজুমদার, অপরজন চিত্রশিল্পী নীরদ মজুমদার। বোন শানু লাহিড়ী ও ভাইপো শিল্পী চিত্রভানু মজুমদার। লেখক তিলোত্তমা এই পরিবারের সুযোগ্য উত্তরসূরী। সেদিক থেকে এই বইটি প্রকাশের গুরুত্ব অসীম। এক অতুলনীয় নৃত্যশিল্পীর কাজের অনন্য স্বীকৃতি ও তাঁর অবদানকে সাধারণের মধ্যে তুলে ধরার এই প্রচেষ্টা কুর্নিশযোগ্য। সবমিলিয়ে বলতেই হবে, এ এক অনবদ্য শ্রদ্ধাজ্ঞাপন। নিজস্ব প্রতিনিধি