Saturday, May 18, 2024
টলিউডলাইম-Light

বিষ্ণুর নানা অবতারে চমকে দেন যীশু

‘দশম অবতার’ নির্ভেজাল খুনে-পুলিশের টক্কর উইথ আ পাঞ্চ অফ চেজ এন্ড কিস! লিখেছেন চারুবাক

সৃজিত মুখোপাধ্যায় তাঁর পুরোনো তিনটি ছবি (‘দ্বিতীয় পুরুষ’, ‘বাইশে শ্রাবণ’ ও ‘ভিঞ্চিদা’) থেকে প্রধান দুটি ঢরিত্র আগুনমুখো প্রবীণ গোয়েন্দা রায়চৌধুরী ও তরুণ সহকারী পোদ্দারকে নিয়ে শহরে আবির্ভূত। তাঁর এবারের নিবেদন ‘দশম অবতার’। দুটি পুরোনো চরিত্র ও এক নতুন সিরিয়াল কিলারের খোঁজ ও গ্রেফতারের দীর্ঘ কাহিনিতে রয়েছে নানা ধরনের নাটকীয় টুইস্ট অ্যান্ড টার্ন ! সব মিলিয়ে দর্শককে একটি যথেষ্ট  উপভোগ্য রহস্যময় ছবিই উপহার দিলেন সৃজিত। একথা বলতেই হবে, চিত্রনাট্যে ঘটনা ও চরিত্রের সংঘাত, অভিঘাত, পারস্পরিক বিরোধ, সংলাপের দারুণ কাটাকুটিতে মজাদার ও উপভোগ্য এক পরিমন্ডল তৈরি করে দেন তিনি।

এই ছবির অন্যতম সেরা পাওনা হলো, মুখ্য দুই চরিত্রে প্রসেনজিৎ ও অনির্বাণ ভট্টাচার্যের অসাধারণ যুগলবন্দি! এক.জন যদি ছয় হাকান, অন্যজন সপাটে বল পাঠান বাউন্ডারি লাইনের বাইরে! আবার অনুজ ছয় মারলে, প্রবীণের ব্যাট থেকে বাউন্ডারি বেরিয়ে আসে অনায়াসে! আবার এঁদের পাশে দাঁড়িয়েই খুনী বিশ্বরূপের ভূমিকায় খেল দেখিয়েছেন যীশু সেনগুপ্ত মশাই ! তাঁর জন্য শুধু থ্রি চিয়ার্স যথেষ্ট নয়। শহরের দুর্নীতিগ্রস্ত লোকজন ও দুষ্কৃতিকারীদের নিকেষ করতে তিনি স্বয়ং বিষ্ণুর নানা অবতারের প্রতীক হয়ে যে নিস্পৃহতার অভিনয় দিয়ে খুনগুলো করে চলেন, সেটা রুদ্ধ নিঃশ্বাসে দেখার মতো! যীশু তাঁর অনায়াস দক্ষতায় সারল্যের মুখোশ চড়িয়ে, স্বগোতক্তি আওড়াতে আওড়াতে খুনগুলো করে যায় !

এর পাশাপাশি জয়া আহসানকেই বা সরিয়ে রাখব কী করে! দুই গোয়েন্দাকে খুনিকে ধরায় সাহায্য করতে এসে মনের ডাক্তার মৈত্রেয়ী প্রেমের জটে পোদ্দারের সঙ্গে জড়িয়ে পরে। তারপর অন্তিমে পুরো বিষয়টার এক বিচিত্র পরিচয় প্রকাশ পায়। এটা নিয়ে সৃজিত বেশ রহস্যময় নাটক ও পরিস্থিতি তৈরি করেন–সেটাও ছবির বড় ইউএসপি ! আর সেটা সম্ভব হয়েছে জয়ার একান্ত নিজস্ব স্টাইলের অভিনয় গুণেই ! প্রসঙ্গত, এই ছবিতে শুরু থেকেই স্পষ্ট, খুনি কে ! রহস্য জমে থাকে তাকে ধরা এবং তার সত্যিকারের মোটিভ কী সেটা জানাকে কেন্দ্র করে!

সৃজিত অত্যন্ত কুশলী দক্ষতায় সেই রহস্য বজায় রেখেছেন। ছবিতে কিছু কিছু সংলাপ ব্যবহার নিয়ে পছন্দ-অপছন্দের তর্ক উঠতে পারে। কিন্তু চরিত্রের ব্যাকগ্রাউন্ড মনে রাখলেই, কোনও তর্ক আর ওঠে না। অনুপম রায়ের সুরে দুটি গান ‘আমি আর সে মানুষ নেই’ ও রূপমের গাওয়া ‘আগুনখেকো’ কানে লেগে থাকে। এই ছবি রিলিজের আগে ‘প্রিক্যুয়েল’, ‘সিক্যূয়েল’ শব্দদুটি নিয়ে ভালোই কচকচানি হয়, যা অনর্থক! তবে, এটা যদি ছবির প্রচারের স্ট্র্যাটেজি হয়ে থাকে, তাহলে কিছু বলার নেই! কারণ, এই বিশ্ব ছড়ানো বাজার ধরতে সবই জরুরি। আমার এ ছবি দেখার অভিজ্ঞতা বলে, ‘দশম অবতার’ নির্ভেজাল খুনে-পুলিশের টক্কর দেওয়া-নেওয়ার ছবি উইথ আ পাঞ্চ অফ চেজ এন্ড কিস! তার বেশি বা কম নয় !!