Monday, February 3, 2025
কৃষ্টি-Culture

পাঠকের মর্মে লেগে থাকে ‘অবাধ্যতার রঙ’

শেষ কবে এমন একটি সংগ্রহ হাতে পেয়েছি, বলতে পারবো না। এমন হৃদয় নিংড়ানো, মেদহীন, নির্বাধ, আপোষহীন শব্দচয়ন–যেন পাঠকের মর্ম ছুঁয়ে চেতনায় চাবুকের আঘাত হানে ! শুধু তাই নয়। কবিতার অন্তর্নিহিত অর্থ পাঠকমনে এক দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে। ভাবায় এবং অনেক প্রশ্ন ও উপলব্ধির জন্ম দেয়। অধ্যাপক, গবেষক, কবি ও সংগীতশিল্পী আবীর চট্টোপাধ্যায়ের লেখা কবিতার সংকলন ‘অবাধ্যতার রঙ’ প্রকাশিত হয়েছে সাম্প্রতিক কলকাতা বইমেলায়।

একশোর ওপর কবিতা সংকলিত এখানে। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত কাব্যগুলিকে একই মলাটের অভ্যন্তরে এনে সুচারু এক প্রকাশনায় উপনীত করা–আক্ষরিক অর্থেই রসিক ও মননশীল পাঠকের জন্য এ এক মূল্যবান উপহার! একদিকে বিষয়ভাবনা, যেখানে অনুভব ও উপলব্ধির বিচিত্র ব্যঞ্জনা ! জীবনের যত অভিমুখ, পরতে পরতে তাকে আবিষ্কার করার মধ্য দিয়েই যেন কবি খুঁজে পেয়েছেন অবাধ্যতার রঙগুলিকে। পড়তে পড়তে পাঠকও অবলীলায় শরিক হবেন এই অনুপম অবলোকনের। খাঁচা বা শিকল, সে তো নানারূপে হাজির আমাদের অন্তরেই। অবাধ্যতাই তো পারে তাকে ভেঙেচুরে ওড়ার পথ করে দিতে। এই প্রেক্ষিতে কবির নিজের মুখবন্ধটি পাঠককে পৃথকভাবে পড়তে অনুরোধ জানাবো।

অবাধ্যতা শব্দটির এক নতুন আভিধানিক অর্থও চাইলে খুঁজে পাবেন পাঠক। অন্তত, আমি তো পেয়েছি। পড়তে পড়তে মনে হয়েছে খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে আছি। সামনে যতদূর চোখ যায়, মাখামাখি প্রথম সূর্যের আলো। জগৎ ও জীবনের যা কিছু, ভালো হোক বা মন্দ, স্পষ্ট হচ্ছে দিনের প্রথম সূর্যের আলোকপাতে। ছন্দ, কাঠামো, প্রকাশের অভিব্যক্তি, পরিবেশন ভঙ্গি বা কবিতার জন্য নির্ধারিত শব্দসংখ্যা–প্রতি ক্ষেত্রে পরীক্ষা-নিরীক্ষা এসেছে এমন এক স্বতঃস্ফূর্ত গতিতে, পাঠকের মনে হবে, তিনিও এই যাত্রার সঙ্গী। হ্যাঁ, এই সংকলনের প্রতিটি কাব্য, এক একটি সম্পূর্ণ যাত্রা, অখন্ড জীবনদর্শন। আরও অনেক কিছু বলার লোভ সংবরণ করলাম অতি কষ্টে। বাকিটা ছেড়ে রাখলাম পাঠকের বিচারের জন্য। ঝকঝকে ছাপা ও অর্থবহ প্রচ্ছদ বাড়তি পাওনা।

অবাধ্যতার রঙ

লেখক : আবীর চট্টোপাধ্যায়

নিবেদক : শব্দসাঁকো

প্রকাশক : বার্তা প্রকাশনীর পক্ষে সৌরভ বিশাই

প্রচ্ছদ : সুমন হাজরা

মূল্য : ২২০ টাকা

সংগ্রহের জন্য যোগাযোগ : বার্তা প্রকাশন  (8777719380), দে বুক স্টোর (কলেজ স্ট্রিট)

ও 98303 44572