Monday, February 3, 2025
ওয়েব-Wave

অ্যালেক্সকে দেখলেই চিনতে পারবেন আপনি

লিখেছেন মৃণালিনী ঠাকুর

নিজেকে ও তার শিশুকন্যাকে বাঁচাতে অত্যাচারী বয়ফ্রেন্ড শনের কারণে তার পুরোনো শহর ওয়াশিংটনের পোর্ট হ্যামস্টেড ছেড়ে চলে যায় অ্যালেক্স রাসেল। একদিন মধ্যরাতে মেয়ে ম্যাডিকে নিয়ে অজানার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় সে। কিন্তু কোথায় যাবে অ্যালেক্স ? একদিকে তার পরিবার, যেখানে কোনও সাহায্যের আশা করাই বাতুলতা। পরিবারের লোকজন উদাসীন তার ব্যাপারে। তাদের নিজেদের ভাবনা বা জীবনযাপনও স্বাভাবিক নয়। অন্য দিকে নিজেরও একেবারে নিঃস্ব অবস্থা। আশ্রয়হীন অ্যালেক্স বাধ্য হয় একটি গাড়ির মধ্যে রাত্রি যাপনে। মাথার ওপর ছাদের সন্ধানে এক সমাজকর্মীর শরণাপন্ন হয় অ্যালেক্স। কিন্তু সেখানেও যে রয়েছে কিছু শর্ত। একমাত্র যে কাজটির সুযোগ তার সামনে রয়েছে, সেটা হলো ভ্যালু মেইডস নামের এক ক্লিনিং কোম্পানি। যাই হোক, তার মালিক ইওলান্ডা অ্যালেক্সকে কাজ দেয়।

অ্যালেক্সের সংকট অবশ্য এত সহজে কাটে না। একটি শিশুকে একা মানুষ করা চাট্টিখানি কথা নয়। বিশেষত, পরিচারিকার কাজ করে। এক এক বাড়ির মালিক এক এক ধরণের। তাদের সঙ্গে মানিয়ে চলাটাও কম বড় চ্যালেঞ্জ নয় ! অ্যালেক্সের মা পলা ম্যাডির দেখাশোনা করবে, এটাই ঠিক হয়। এই ব্যবস্থা সেই সময়ের জন্য, যখন অ্যালেক্স নৌকোয় তার প্রথম শিফট কাজের জন্য ফিশার আইল্যান্ডে বিশাল বড়লোক ক্লায়েন্ট রেজিনার বাড়িতে কাজ করতে যাবে। কাজ সেরে ফিশার আইল্যান্ড থেকে ফিরে অ্যালেক্স দেখে ম্যাডিকে পলা শনের কাছে দিয়ে এসেছে।

শন, অর্থাৎ, তার সেই এক্স বয়ফ্রেন্ড, যে কিনা আদ্যন্ত একজন নিম্নরুচির লোক। গালিগালাজ ছাড়া কথা বলে না। তার কাছে থাকবে ম্যাডি ? অ্যালেক্স কী করে এটা মেনে নেয় ? সে শনের সঙ্গে ঝামেলা করে মেয়েকে ফিরিয়ে আনে। শনের দুর্ব্যবহার থেকে রেহাই পেতে, যতই চেষ্টা করুক, দুঃস্বপ্ন যেন পিছু ছাড়ে না অ্যালেক্সের। অন্য দিকে পলার মাথাতেই বা কী ঘুরছে, কে জানে ? এরইমধ্যে ইওলান্ডা জানায়, রেজিনা অ্যালেক্সের কাজে খুশি নয়। কোনদিকে যাবে বেচারা অ্যালেক্স ? তার পরিবার বিচ্ছিন্ন বাবা হাঙ্ক কী দাঁড়াবে অ্যালেক্সের পাশে ? গল্পের শুরু সিয়াটেলে, আর ক্রমে সেটি পল্লবিত হয় কাল্পনিক ফিশার আইল্যান্ডে।

বস্তুত, নেটফ্লিক্স-এ অ্যালেক্সের এই কাহিনি,  আমেরিকান ড্রামা ‘মেইড’ দেখতে দেখতে, এতটুকু কল্পনার এক মেয়ে বলে মনে হচ্ছিল না তাকে। এদেশের অজস্র নিম্নবিত্তের খেটে খাওয়া মেয়ের সঙ্গে সহজেই মেলানো যায় অ্যালেক্সকে। অবশ্যই এক্ষেত্রে কৃতিত্ব অনেকটাই পাবেন অভিনেত্রী মার্গারেট কোয়ালি। তাঁর প্রাণময় অভিনয় বাদ দিয়ে অ্যালেক্সের পর্দায় জীবন্ত হয়ে ওঠা সম্ভব ছিল না। অ্যালেক্স তার অন্ধকারময় জীবনের মাঝেও স্বপ্ন দেখে। একজন লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশের স্বপ্ন। ১০ পর্বের এই মিনি সিরিজের শেষে জানা যাবে, অ্যালেক্সের স্বপ্ন পূরণ হলো কিনা। জানার আছে, তার মেয়ের ভবিষ্যতও কী গড়তে পারবে সে ? শন কী শান্তিতে থাকতে দেবে তাদের মা-মেয়েকে ?

Images 1 2
অ্যালেক্সকে দেখলেই চিনতে পারবেন আপনি 7

‘মেইড’-এর ক্রিয়েটর মলি স্মিথ মেটজলার। স্টেফানি ল্যান্ডের বহু আলোচিত মেইড : হার্ড ওয়ার্ক, লো পে, এন্ড আ মাদার্স উইল টু সারভাইভ, পশ্চিমী দেশগুলির দারিদ্র্য নিপীড়িত মানুষজনের ওপর লেখা এই বইটি মলির ভাবনার উৎস। ২০২১-এর অক্টোবরে নেটফ্লিক্সে এই সিরিজের প্রিমিয়ার হয়। অভিনয়ে মার্গারেট ছাড়াও আছেন নিক রবিনসন, অ্যানিকা নোনি রোজ, ট্রেসি ভিলার, বিলি বার্ক, অ্যান্ডি ম্যাকডয়েল প্রমুখ। মিউজিক ক্রিস স্ট্রেসি ও এস্তে হেইম। পর্বগুলির সময়সীমা ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা। প্রযোজনা জন ওয়েল প্রোডাকসন্স, লাকি চ্যাপ এন্টারটেনমেন্ট ও ওয়ার্নার ব্রাদার্স টেলিভিশন।