চলচ্চিত্র মহলে ফের শোকের ছায়া, প্রয়াত কবি-পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত
বাংলা চলচ্চিত্র মহলে ফের শোকের ছায়া। বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত আজ নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন। কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে তার ডায়ালিসিস চলছিল এমনকি গতকালও তা করা হয়েছে। পরিবারের লোকেরা সকালে তার দেহে কোন সাড়া না পেয়ে চিকিৎসককে খবর দিলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৭।
সালটা ১৯৪৪। ১১ ই ফেব্রুয়ারি পুরুলিয়া আনাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তিনি ছিলেন পরিবারের তৃতীয় সন্তান। পিতা তারাকান্ত দাশগুপ্ত পেশায় চিকিৎসক ছিলেন। রেলের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি। সেই সুবাদে কবি পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত নানা জায়গা ঘুরে বেড়িয়েছেন। মাত্র ১২ বছর বয়সে তারা কলকাতায় চলে আসেন। হাওড়ার দীনবন্ধু স্কুলে পড়াশোনা শুরু করেন। স্বাধীনতার পর তার বাবা ঝাড়খণ্ড ও খড়গপুরে বদলি হয়ে যায়। অর্থনীতি নিয়ে স্কটিশ চার্চ কলেজে পড়াশোনা করেছেন বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত শ্যামসুন্দর কলেজে বেশ কিছুদিন অধ্যাপনাও করেছেন তিনি।
এরপরই শুরু হয় সিনেমা তৈরীর ভাবনা চিন্তা। গ্রহণ করেন কলকাতা ফিল্ম সোসাইটির সদস্য পদ। ১৯৬৮ সালের ১০ মিনিটের একটি তথ্যচিত্র দিয়ে পরিচালনায় তার হাতেখড়ি। তারপর একে একে “দূরত্ব”, “নিম অন্নপূর্ণা”, “গৃহযুদ্ধ”, “মন্দ মেয়ের উপাখ্যান”, “স্বপ্নের দিন”, “উড়োজাহাজ” -এর মত বহুল প্রশংসিত ছবি তিনি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন। তাঁর বহু ছবি জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে। বিনোদনের পাশাপাশি সাহিত্যজগতে ও তার অবদান অনস্বীকার্য। বছরের পর বছর ধরে তিনি “গভীর আড়ালে”, “কফিন কিম্বা সুটকেস”, “হিমজগ”, “ছাতা কাহিনি”, “রোবটের গান”, “শ্রেষ্ঠ কবিতা”, “ভোম্বোলের আশ্চর্য কাহিনি” ও অন্যান্য কবিতা সহ কবিতার বিভিন্ন রচনা প্রকাশ করেছেন।
তাঁর এই প্রয়াণে শোকে পাথর পরিচিতরা। তাঁর মৃত্যু অপূরণীয় ক্ষতি বলে জানিয়েছেন অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়।