Monday, February 3, 2025
কৃষ্টি-Culture

নাটক ‘বিদ্যার সাগরেরা’

বিদ্যাসাগরকে কেন্দ্রে রাখা হলেও এ নাটক ব্যক্তি বিদ্যাসাগরকে নিয়ে নয়। বিদ্যাসাগরের সময়কার ইতিহাসও এ নাটকের প্রতিপাদ্য নয়। এই নাটকে বিদ্যাসাগর এক ‘প্রবণতা’ হিসেবে কাজ করেন। বিদ্যাসাগর শক্তিমান, অগ্রগামী দৃঢ় চেতনার প্রতীক হয়ে ওঠেন। সেই অনুষঙ্গেই ‘বিদ্যার সাগরেরা’ নাটকটি তৈরি। আগামিকাল যোগেশ মাইম একাডেমিতে সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টায় মঞ্চস্থ হচ্ছে এই নাটক। প্রসঙ্গত, এটি ‘বিদ্যার সাগরেরা’ নাটকের পঞ্চম শো। প্রযোজনা ‘ভাণ’। নাটক ও প্রয়োগ গৌরাঙ্গ দন্ডপাট। অভিনয়ে পল্লব, মৌলিকা, শুভজিৎ, সৃজিতা, অনির্বাণ এবং গোরা। আবহ সায়ন। আবহ প্রক্ষেপণ তপন। সামগ্রিক পরিকল্পনা পার্থ।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশত বর্ষ উদযাপনকে কেন্দ্র করে এই নিবেদন, যেখানে আমরা দেখি, কলকাতার তাবৎ বুদ্ধিজীবীকে চরম প্রশ্নচিহ্নের সামনে দাঁড় করিয়ে দেয় এই নাটকের বিষয়। এমন একটি পরিস্থিতির মধ্যে নিয়ে আসে তাদের, যেখানে জীবন-মৃত্যুর সামনে দাড়িয়ে তারা প্রত্যেকে বেআব্রু হয়ে পড়ে। বোঝা যায়, বিদ্যাসাগরের অনুসরণ অত সস্তা কাজ নয়। অন্তত তাদের পক্ষে মোটেও সস্তা নয়, যারা ক্ষমতার চাদর মুড়ি দিয়ে যাপনে অভ্যস্ত। যারা অর্থ ও যশ লোভী।

আজকের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির থেকে টলিপাড়ার অবস্থা, এমনকী একদা বিদ্যাসাগরের মুন্ডু ভেঙে ফেলা নকশাল দর্শনেরও নানা প্রশ্ন,এই নাটকের মূলে অঙ্গীভূত হয়ে যায়। ফলে বিদ্যাসাগর আমাদের সমকালকে চেনার একজন সুযোগ্য মানুষ হিসেবে নাটকে উঠে আসেন। যে শিথিলতা, ভন্ডামো সরীসৃপধর্মিতা আমাদের চারপাশকে অসহনীয় করে রেখেছে, তার বিপরীতে ঋজুতা, আধুনিকতা, প্রগতির  বৈপরীত্য তৈরি করা হয় নাটকীয় চমৎকারিত্বে।নাটকের পরিনতি দর্শকদের গভীরভাবে ভাবিয়ে তোলে।