আরও নিষ্ঠুর কলীন ভাইয়া
বছর শেষে আসছে মির্জাপুর ৩
লিখেছেন মৃণালিনী ঠাকুর
অপরাধের অন্ধকার জগৎ ওয়েব দুনিয়ার সবচেয়ে চর্চিত বিষয়। এতটাই যে ইদানীং অনেকেই এটাকে বহু ব্যবহারে জীর্ণ বলছেন। আর একটি অভিযোগও খুব শোনা যায়, বেশিরভাগ কনটেন্ট বিদেশি সমাজ ও জীবন প্রভাবিত। তবে, এই সব অভিযোগ, অনুযোগের একেবারে বাইরে আপনি রাখতে পারেন ‘মির্জাপুর’-কে। এমনি এমনি কোনও সিরিজ, প্রদর্শনের এতদিন পরেও এই মাত্রার ভিউয়ারশিপ পায় না ! কিছুদিন আগেই নির্মাতাদের পক্ষ থেকে ঘোষিত হলো ‘মির্জাপুর’ তৃতীয় সিজন আসার খবর। তারই মধ্যে আগের সিজনের সাফল্যের খবর। জানা গেছে, দ্বিতীয় সিজনের শেষ দু’টি পর্ব প্রচারে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজের জায়গাটা দখল করেছে ‘মির্জাপুর’। এক্ষেত্রে পর্ব প্রতি এক কোটি দর্শক দেখেছেন এই ক্রাইম থ্রিলার। দর্শকের উৎসাহ এই মুহূর্তে কোন বিন্দুতে, বুঝতে অসুবিধা হয় না। এ বছরের শেষেই ‘মির্জাপুর’-এর তৃতীয় সিজন আসছে ভারতীয় ওটিটি দর্শকের দরবারে। আপাতত টানটান আগ্রহে অপেক্ষা।
আমাজন প্রাইমের এই সিরিজ আমাদের অত্যন্ত চেনা অপরাধ জগৎকে নিয়ে আবর্তিত। ভারতের সব ছোট-বড় শহরে একজন করে কলীম সিদ্দিকী আছে। শোনা যাচ্ছে, তৃতীয় সিজনে আরও বেশি ক্রুরতা ও নিষ্ঠুরতার সঙ্গে পর্দায় অবতীর্ণ হচ্ছে হিন্দি ওয়েব অপরাধ দুনিয়ার বেতাজ বাদশা। এবার মুনিম ও তার দলবলের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার পালা। কলীম অর্থাৎ পঙ্কজ ত্রিপাঠি। দুর্ধর্ষ এই অভিনেতার গ্রহণযোগ্যতা আজ সর্বজনবিদিত। একেবারে ভিন্ন এক পরিবার ও পরিবেশ থেকে আসা পঙ্কজের বলিউডে জমি তৈরি করতে অনেকটা সময় লেগেছে, এটাও সকলেই জানেন। নেপটিজমের স্বর্গ বলিউড সহজে ঠাঁই দেয় না কাউকে, সে যতই প্রতিভাবান, দক্ষ ও মেধাবী হন না কেন ! এনএসডি’র প্রাক্তনীরও ভাগ্যে সূর্যোদয় হয়েছে অনেকটা দেরিতে। ভাগ্যিস অনুরাগ কাশ্যপের মতো কতিপয় পরিচালক আজও আছেন। তাই তো গ্যাংস অফ ওয়াসিপুর, আর সেই সূত্রেই পঙ্কজের যথাযথ আবিষ্কার। তারপর মির্জাপুর। শুরু হলো পঙ্কজের ওটিটি জয়ের অভিযান।
তবে, পঙ্কজ একা নন। ‘মির্জাপুর’-এর পুরো অভিনয় টিমটাই এককথায় জবরদস্ত ! পঙ্কজের পরেই যাঁর নাম উঠে আসে, তিনি আলি ফজল। কলীমের পর মির্জাপুরের শাসন যার হাতে যাওয়ার কথা, সেই গুড্ডুর চরিত্রে আলির কামাল দেখার অপেক্ষায় তাঁর ভক্তরা। গোলু অর্থাৎ শ্বেতা ত্রিপাঠিও যোগ দেবেন আলি ফজলের সঙ্গে। গোলুর মনেও প্রতিশোধের আগুন জ্বলছে কলীন ভাইয়ার বিরুদ্ধে। বোন সুইটির মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে মরিয়া গোলু। তার ফেরার পথ ধরেই ঘটে যাবে একশনে ভরপুর নানা কান্ড। বীনা ত্রিপাঠি ও শারদ শুক্লা চরিত্রে রসিকা দুগাল ও অঞ্জুম শর্মা আগের মতোই আসরে নামবেন। মুন্নার (দিব্যেন্দু) ফেরার সম্ভাবনা কম, এমনটাই খবর। আগের মতোই থাকছেন ঈশা তলোয়ার (মাধুরী), শিবা চাড্ডা (বসুধা), হর্ষিতা গৌর (ডিমপি), রাজেশ টাইলাং (রমাকান্ত), শাজী চৌধুরী (মকবুল) প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, আলি ফজল জানিয়েছেন,”আগের দুটি সিজনের সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখাটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ আমাদের কাছে।” সত্যিই তাই। ‘মির্জাপুর’ সম্পর্কে দর্শকের প্রত্যাশা এমন এক উচ্চতায় পৌঁছে গেছে, যেটা ধরে রাখাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এখন। দ্বিতীয় সিজন শেষ হয়েছিল বহু অপ্রত্যাশিত ঘটনা প্রবাহে। দর্শকের মনে জেগে ওঠা নানা প্রশ্নের জবাব রয়ে গেছে বাকি। সেইসব প্রশ্ন ও ঘটনার সূত্র ধরেই আরও জমে উঠতে চলেছে আসন্ন নতুন সিজন। প্রথম দুটি সিজনের ক্রিয়েটর করণ অংশুমান, বিনীত কৃষ্ণ ও পুনীত কৃষ্ণ। এবারেও তাঁরাই এই দায়িত্বে থাকবেন প্রত্যাশিত। কলীন ভাইয়ার জান বাচিয়েছিল শারদ শুক্লা। সেই হিসেবে ওরা এখন এক টিমে। উল্টোদিকে বীনা, গোলু ও গুড্ডু। দু’পক্ষের লড়াই এবার আরও ধামাকাদার হতে চলেছে বলে খবর! ১৯টি পর্বে গত দুটো সিজন দেখেছি আমরা। এবারের সিজনে নাকি ১১টি পর্ব ! প্রত্যাশার পারদ আপাতত উর্ধমুখী। অপেক্ষা বছর শেষের।