Sunday, May 19, 2024
ওয়েব-Wave

‘গুল্লাক’-এ মধ্যবিত্ত জীবনের চেনা ছন্দ

মৃণালিনী ঠাকুর

যাঁরা ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ক্রাইম, হরর, সেক্স দেখে ক্লান্ত, তাঁরা একবার ‘গুল্লাক’ দেখতে পারেন। একেবারে নিটোল এক পারিবারিক গল্প। সন্তোষ মিশ্র, তার স্ত্রী শান্তি, তাদের দুই ছেলে আনন্দ ও আমন। আর আছে কয়েকজন পাড়াপড়শি। যেমন সচরাচর দেখি আমরা আমাদের চারপাশে। গুল্লাক শব্দের ইংরিজি প্রতিশব্দ পিগি ব্যাঙ্ক। বঙ্গ সংস্করনে যেটা লক্ষ্মীর ভাঁড়। নির্মাতা শ্রেয়াংশ পান্ডে। দ্য ভাইরাল ফিভার-এর ব্যানারে তৈরি এই ফ্যামিলি ড্রামাকে মোটেই সাদামাটা ভাববেন না। জীবনের চেনা ছন্দে প্রচুর আকস্মিক ঘটনা ও তার ভিত্তিতে মজার খোরাক পাবেন আপনি। যদিও, যে কোনও মধ্যবিত্ত ভারতীয় পরিবারেই এমনটা ঘটে। আর দর্শক নিজেকে এভাবেই মিলিয়ে দেয় সিরিজের কাহিনির সঙ্গে। প্রথম সিজন দেখানো হয় দ্য ভাইরাল ফিভার-এর স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম ও সোনি লিভ-এ। ২০১৯-এর জুনে প্রথম সিজন। একই সঙ্গে দুটি চ্যানেলে চালু প্রথম সিজন ছিল বাম্পার হিট। দর্শকরা বিপুল হারে সাড়া দেয়।

দ্বিতীয় সিজন দেখানো হয় সোনি লিভ-এ ২০২১-এর জানুয়ারি মাসে। এই সিজন সেই অনুপাতে কিছুটা কম সাড়া পায়। কারণ, সম্ভবত ক্রু মেম্বারদের পাল্টে যাওয়া। সবাই সব বিষয় হ্যান্ডেল করতে পারেন না। প্রথম সিজনে গল্প লেখেন নিখিল বিজয়, দ্বিতীয় সিজনে দুর্গেশ সিং। পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রথম সিজনে অমৃত রাজ গুপ্তা। পরেরটি পলাশ বাসোয়ানি। গত এপ্রিল থেকে সোনি লিভ-এ দেখানো শুরু তৃতীয় সিজন। এখনও পরিণত দর্শক ভালোই সাড়া দিয়েছে। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন জামিল খান, গীতাঞ্জলি কুলকার্নি, বৈভব রাজ গুপ্তা, হর্ষ মেয়র। এঁরা প্রত্যেকেই হিন্দি বিনোদন জগতের চেনা মুখ। জমিয়ে দিচ্ছেন পর্বগুলি। তাঁদের অভিনয়ের রসায়ন এই সিরিজের সেরা প্রাপ্তি। প্রসঙ্গত, মোট ১৫টি পর্বে দেখবেন ‘গুল্লাক’।

চাকরি নেই। একের পর এক চাকরির পরীক্ষাগুলিতেও বিফল আনন্দ ওরফে অন্নু। মায়ের সঙ্গে এই নিয়েই তার পদে পদে সংঘাত। শান্তি সারাক্ষণ খোঁটা দিয়ে চলেছে ছেলেকে। একদিন অন্নুর সঙ্গে তার ছোট ভাই আমনের মারামারি বেধে যায় টিভির ভলিউম বাড়ানো-কমানো নিয়ে। আমন মায়ের কাছে আবদার করে, শান্তি যেন অন্নুকে বলে আমনের বোর্ড প্রাকটিক্যাল পরীক্ষার চার্ট বানিয়ে দিতে। এই নিয়ে আর একপ্রস্থ অশান্তি হয়।

রবিবার হলো মধ্যবিত্ত পরিবারের অবকাশের, বিশেষ ভাবে কাটানোর দিন। স্বামী সন্তোষের ঘড়ির এলার্মে এক রবিবার সকালে ঘুম ভাঙ্গলো শান্তির। এবার কী ঘটবে ? কীভাবে রবিবার কাটাবে মিশ্র পরিবার ? আর একটি দিন। আমন আবিষ্কার করে, দেরি হয়ে গেছে। তবু, অন্নু ঘরে ফেরেনি তখনও। সন্তোষ অবশ্য তেমন টেনশন করে না। ছেলের জন্য অপেক্ষা করে। অন্নু অনেক দেরি করে ফেরে এবং দাবি তোলে একটি স্কুটির। তার অজুহাত ও যুক্তি, স্কুটি নেই বলেই দেরি হয়েছে অন্নুর ফিরতে।

রাখিবন্ধন উৎসব। সারাদিন খাটাখাটনি করে ক্লান্ত শান্তি। এদিকে অন্নুর রেজাল্ট বেরিয়েছে এবং সে ফেল করেছে। কথাটা অন্নু আমনকে জানালে, সে তাকে পালাবার পরামর্শ দেয়। এদিকে অন্নুর ফেলের সংবাদে অজ্ঞান হয়ে পড়ে শান্তি। তারপর জ্ঞান ফিরলে, সন্তোষ ও শান্তি দুজনেই অন্নুকে ক্ষমা করে দেয়। এভাবেই আজ ছেলেদের পড়াশোনা, কেরিয়ার তো কাল বাজারের আগুন দশা। আজ কিটি পার্টি তো কাল বিয়েবাড়ি। একদিকে সামাজিক মেলামেশা। অন্যদিকে সামাজিক স্তরভেদ। কোনদিকে যাবে সন্তোষ ও শান্তি ? আর লক্ষ্মীর ভাঁড় ? কোথায় আছে সেটা ? পারবে সাহায্য করতে মিশ্র পরিবারকে ? চেনা চেনা লাগছে তো ? মন চাইলেই এই চেনা ছন্দে মেতে উঠতে চোখ রাখুন সোনি লিভ-এ।