Monday, February 3, 2025
বিনোদন প্লাস স্পেশাললাইম-Light

মানুষের হৃদয়ে বাস করেন দেব

লিখেছেন অজন্তা সিনহা

কেশপুরের সন্তান দীপক অধিকারী ওরফে দেব যেদিন ঘাটাল কেন্দ্রে প্রবীণ ও অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ গুরুদাস দাশগুপ্তকে হারিয়ে সাংসদ হলেন, মিথ্যে বলবো না, সেদিন অত্যন্ত হতাশ হয়েছিলাম। মনে হয়েছিল, রাজ্যটার হলো কী ? এত বছরের রাজনৈতিক একজন নেতা, এক প্রাজ্ঞ ব্যক্তিত্ব হেরে গেল এক সিনেমার নায়কের কাছে, যাঁর কোনও রকম রাজনৈতিক উত্তরাধিকার দূর, রাজনীতির বিষয়ে ঝুলিতে সামান্যতম অভিজ্ঞতাও নেই। সেদিন বুঝিনি, রাজনীতির ময়দানে কিছুই না থাকা দেবের যা আছে, তা দেশের তাবড় তাবড় রাজনৈতিক নেতাদের নেই, থাকে না। তা হলো, একটি সুবর্ণ হৃদয়। আর অসম্ভব লড়াই করবার ক্ষমতা। এই ক্ষমতাই তাঁর নিজের ক্ষেত্র, সিনেমার ময়দান থেকেও বারবার দূরে ঠেলে দেবার পর কাছে টানতে বাধ্য হয়।

‘চাঁদের পাহাড়’ মুক্তি পাওয়ার আগে পর্যন্ত দেবকে আমি একজন সিনেমা সাংবাদিকের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে অভিনেতা হিসেবে আলোচনায় আনার যোগ্য মনে করতাম না। অস্বীকার করবো না, এটা ছিল আমার নিতান্তই একপেশে মনোভাব। এমনও নয়, ‘চাঁদের পাহাড়’-এ তাঁর অভিনয় দেখে অভিনেতা দেব সম্পর্কে আমার ধারণা খুব একটা পাল্টেছে। তবে, এই ছবি মুক্তির আগে দেবের একটি এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম আমি। সেই প্রথম তাঁর মুখোমুখি হওয়া। বলা যায়, এরপর থেকেই দেব সম্পর্কে আমার ভাবনাচিন্তার জগৎটা পাল্টে গেল।

সেই গল্পে পরে যাচ্ছি। তার আগে আর একটি কথা। দেব বড় অভিনেতা নন, কিন্তু, অত্যন্ত সফল এক তারকা। দেবের প্রথম ছবি ‘অগ্নিশপথ’ ছিল সুপার ফ্লপ। ফিল্ম ক্রিটিক থেকে দর্শক–কেউই গ্রহণ করেননি তাঁকে এ ছবিতে। সেদিন থেকে আজ–গত বছর মুক্তিপ্রাপ্ত ‘গোলন্দাজ’ বা ‘টনিক’–দেবের নায়ক হিসেবে উত্থান-পতনে যেটা প্রমাণিত হয়, আর কিছু না হোক, লড়াইয়ের ময়দান ছেড়ে পালাবার লোক তিনি নন। প্রসঙ্গত, ‘টনিক’ তো রীতিমতো রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। সেই কথায় পরে আসছি। দেবের ক্ষেত্রে আরও যেটা বলার, রাজনীতির ময়দানে পা দেবার পর, যে ভুলটা তাপস পাল করেছিলেন, অমন শক্তিশালী একজন অভিনেতা হওয়া সত্বেও রাজনীতিতে গিয়ে অভিনয় জগৎটা একেবারে ছেড়ে দিলেন–দেব সেটা করেননি। তিনি তাঁর প্যাশনকে ছাড়েননি।

একদিকে সক্রিয় রাজনীতিকে একটু দূরে রেখে নিজের কেন্দ্রে বারবার যাতায়াত করে সেখানকার মানুষের সুখদুঃখ বোঝার চেষ্টা করেছেন। পাশাপাশি অভিনয় ও বিনোদন সংক্রান্ত তাঁর যাবতীয় কর্মকান্ড চালিয়ে গেছেন। সম্ভবত, তৃণমূল নেতৃত্বও এটা বুঝেছে, দেবের স্টারডমই তাঁর ইউএসপি। এই ইউএসপি-র কৌশলেই একদা ধরাশায়ী হন গুরুদাস দাশগুপ্তের মতো পরাক্রমশালী নেতা। দেবের পক্ষে এটা বোঝানো কতটা জরুরি ছিল, সহজেই অনুমেয়। তিনি কর্তব্যের সঙ্গে নিজের স্বপ্নের সৌধ নির্মাণের বিষয়টিকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে পেরেছেন। এটা সবাই পারেন না। দেব পেরেছেন। তাঁর কাছে এটাই শেখার।

সত্যি বলতে কী, ঢিলেঢালা, অলস, স্বপ্নপ্রিয় বাঙালি তরুণ প্রজন্মের আরও অনেক কিছুই শেখার আছে দেবের কাছে। আর সেটা আমি উপলব্ধি করেছিলাম প্রথমবার দেবের মুখোমুখি হওয়ার পর ওই ‘চাঁদের পাহাড়’-এর সৌজন্যে। বেশ মনে পড়ছে, ‘চাঁদের পাহাড়’-এর প্রযোজক ভেঙ্কটেশ ফিল্মস-এর অফিসে ছিল আমার এপয়েন্টমেন্ট। পৌঁছে, নির্ধারিত ঘরে ঢুকে আমি না বসা পর্যন্ত দেব দাঁড়িয়েই রইলেন। বললেন, “দিদি, আপনি বড়। আগে আপনি বসুন।” যথেষ্ট অবাক হয়েছিলাম দেবের সৌজন্যে। কারণ ততদিনে সুপারস্টার তকমা পড়ে গেছে ওঁর কেরিয়ারে। আক্ষরিক অর্থেই টলিউডে এক নম্বর তিনি তখন (এখনও)। তারপরের চমক ছিল, প্রথম প্রশ্নের জবাবে।

প্রশ্নটা যথেষ্ট আক্রমণাত্মক–”তুমি ‘চাঁদের পাহাড়’-এ অভিনয় করছো খবরটা প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে প্রায় সকলেই তো বলছে, দেব আর ‘চাঁদের পাহাড়’ ? এটা নিশ্চয়ই খারাপ লাগছে তোমার ?” দেবের তৎক্ষণাৎ জবাব, “না লাগছে না। প্রশংসা আমাকে প্রেরণা (inspiration) দেয়। আর সমালোচনা ‘মোটিভেট’ করে।”  ইচ্ছে করেই ‘মোটিভেট’ শব্দটা বাংলা করলাম না। পাঠক অনুভব করবেন, কতখানি তীব্র আত্মবিশ্বাসের আবেগ ছিল, যখন দেব বলছেন শব্দগুলি। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন, “জবাবটা আমি কাজেই দিতে চাই দিদি।”

দিয়েছিলেন তিনি। অভিনয় ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করেন সীমাহীন কঠিন ও যন্ত্রণাদায়ক এক একটি অ্যাকশন দৃশ্যে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। অপরিসীম মনোবলের অধিকারী এই তরুণ কী পরিমাণ কষ্টসহিষ্ণু, সেটা জানেন তাঁর অভিনীত প্রত্যেক ছবির পরিচালক, সহ-অভিনেতা থেকে ইউনিটের লোকজন। দেব শুধু অগণিত দর্শকের হৃদয়ে রাজ করেন না। তাঁকে বিস্ময়কর রূপে ভালোবাসে সমগ্র বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। ইদানীং তার সঙ্গে যুক্ত অসংখ্য টিএমসি সদস্য ও সমর্থক। ভুল বললাম। দেবকে ভালোবাসার মানুষ দল-সংস্কৃতির উর্দ্ধে। তাঁর বিপক্ষ দলের সদস্য-সমর্থকরাও দেবের অনুরাগী। সকলেই তাঁর ফ্যান।

এই ফ্যান ফলোয়িং প্রসঙ্গেই বেশ বুদ্ধিদীপ্ত ও মজাদার এক জবাব দিয়েছিলেন দেব সেদিন। তাঁর কিশোরী-তরুণী ফ্যানকুলের পাশাপাশি রয়েছে বিপুলসংখ্যক বাচ্চাও–এটার কারণ কী ? দেবের জবাব,”জানি না ঠিক। মনে হয়, ওরা আমার মধ্যে নিজেদের সারল্য খুঁজে পায়। (তারপরই হেসে) তবে, ওরা কিন্তু আমার ইনভেস্টমেন্ট। ওরাই বাড়ির বড়দের হলে টেনে আনে। আর বড় হয়ে যাওয়ার পরেও ওরা আমার ফ্যান থাকবে, আমার স্থির বিশ্বাস।” এই বিশ্বাসে ভর দিয়েই উত্তরণের পথযাত্রী দেব। বডি ডাবল ছাড়াই অ্যাকশন দৃশ্যে অভিনয় করেন।

‘চাঁদের পাহাড়’-এ কাজ করার সময় কিছু শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা জানাতে বলেছিলাম দেবকে। যা বলেছিলেন তিনি, শুনুন তাঁর মুখেই–”পাহাড়ে চড়ার একটা দৃশ্যের কথা বলবো। আফ্রিকার পাহাড় খুব খাড়াই আর রুক্ষ। ট্রেকিংয়ের অভ্যাস, রিহার্সাল, প্র্যাকটিস কোনওটাই খুব একটা কাজে দেয় না এখানে। মনে পড়ছে এই দৃশ্যটা যখন তোলা হচ্ছে, রোজ হোটেলে ফেরার পর হাঁটুর যন্ত্রনায় চোখে জল এসে যেত। হাঁটু এবং তার আশপাশের জায়গাগুলো কেটেছড়ে রক্তাক্ত হয়ে থাকতো। ডাক্তার ছিলেন। কিন্তু কত ওষুধ, কত মলম বা ড্রেসিং ! সবচেয়ে আতঙ্ক হতো ভেবে, কাল আবার শুটিং করতে পারবো তো ? তখনই মন শক্ত করে নিজেকে বলতাম, পারতেই হবে আমাকে। অন্য কিছু চিন্তার অবকাশই নেই।” এই হলো দেব। যিনি নিজের গুণেই শ্রদ্ধা অর্জন করে নেন আমাদের।

চরিত্রের প্রয়োজনে যে পর্যায়ের কষ্ট বা পরিশ্রম সুপারস্টার হওয়ার পরও দেব করেন, সেটা এক বিরল দৃষ্টান্ত। ‘গোলন্দাজ’ ছবির  প্রয়োজনে দেবকে ওজন বাড়াতে হয়েছিল। শুটিং শেষ, ওজন তো আর রাতারাতি কমানো যায় না ! দেবের ওজন সেইসময় ১১০ কেজি। এদিকে পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায় তৈরি তাঁর প্রথম ছবি ‘কিশমিশ’-এর গল্প নিয়ে। মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করবেন দেব। গল্পের সূত্রে চার রকমের বয়েসী চেহারায় দেখা যাবে তাঁকে, যার মধ্যে একটি কলেজ পড়ুয়া লুক। রাহুল দেবকে বললেন, তিনি চরিত্রটির জন্য একজন ২৩-২৪ বছরের ছেলেকে খুঁজে বের করবেন। দেব এরমধ্যে ওজন ঝরিয়ে ফেলবেন এবং বাকি চরিত্রগুলো তিনিই করবেন।’’ শুনে দেবের অনুরোধ, এই চরিত্রটাও তিনিই করতে চান। একটা সুযোগ চাই তাঁর। তারপর দেবের লুক পছন্দ না হলে, পরিচালক নিশ্চয়ই অন্য কাউকে দেখে নেবেন। একদিন রাহুলের অফিসে হাজির এক স্লিম তরুণ। হালকা কোঁকড়া লম্বা চুল, গোল ফ্রেমের চশমা চোখে, পরনে হাফপ্যান্ট–পাক্কা ছবির চরিত্র অর্থাৎ ‘টিনটিন’ লুক। চরিত্রের প্রয়োজনে দেড় মাসে ৪০ কেজি ঝরিয়েছেন তিনি। এই হলো দেব। তাঁর সব সীমাবদ্ধতা তিনি নিজেই বারবার অতিক্রম করেন।

একাধারে অভিনেতা, প্রযোজক, লেখক ও সাংসদ। তাঁর প্রোডাকশন হাউজ দেব এন্টারমেন্ট ভেঞ্চারস প্রাইভেট লিমিটেড প্রযোজিত ছবিগুলির মধ্যে ‘টনিক’ আর ‘চ্যাম্প’ যৌথ প্রযোজনা। এককভাবে প্রযোজনা করেছেন ককপিট, হইচই আনলিমিটেড, কবীর, পাসওয়ার্ড, হবুচন্দ্র রাজা গবুচন্দ্র মন্ত্রী। ডান্স তাঁর আর একটি প্রতিভা ও ক্ষমতার জায়গা। বাংলা টিভি চ্যানেলের জনপ্রিয়তম ডান্স রিয়ালিটি শো ‘ডান্স বাংলা ডান্স’-এর মেন্টর হন তিনি কিংবদন্তী মিঠুন চক্রবর্তীকে সরিয়ে। এখানে অন্য কোনও খেলা নেই। যোগ্যতম উত্তরাধিকারী হিসেবেই মিঠুনের জায়গায় দেব এসেছেন–একথা দেবের চরমতম সমালোচকও বলবেন। প্রচুর পুরস্কার পুরেছেন ঝুলিতে। তবু, শুধু অভিনয়কে শান দেবার জন্য ভিন্নধারার ছবিতে কাজ করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন। চাঁদের পাহাড়, বুনো হাঁস, কবীর, পাসওয়ার্ড, সাঁঝবাতি-র মতো ছবিতে অভিনয় করা সেই তাগিদেই।

Images 49

এবার ‘টনিক’ প্রসঙ্গ। ২০২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর মুক্তি পায় এই ছবি। এই কোভিড ও ওমিক্রন বাজারেও, গত মাসের প্রথম দিক পর্যন্ত হাউসফুল ছিল দেব এবং পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অভিনীত ভিন্ন স্বাদের ছবি ‘টনিক’। এখনও এ ছবির ক্ষেত্রে সিনেমাহল হাউসফুলই থাকছে। প্রসঙ্গত, দেব এ ছবির প্রযোজকও বটে। ছবির সাফল্যে তিনি কতটা উদ্বেলিত জানাতে সম্প্রতি নন্দনে উপস্থিত হয়েছিলেন দেব। দর্শকদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান তিনি। ভক্তকূল বিশেষ খুশি হবেন, দেবের এই সৌজন্যে, স্বাভাবিক। তবে, সবচেয়ে বড় খবর হলো, এই রাজ্যে ‘টনিক’ হারিয়ে দিয়েছে আল্লু অর্জুনের বহু আলোচিত ‘পুষ্পা’-কে। সারা দেশের সঙ্গে, এমনকী বলিউডেও এগিয়ে ‘পুষ্পা’। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে এসে তার জয়রথ থেমে গেছে। এক্ষেত্রে দেবের ম্যাজিকের পাশাপাশি বিষয়ভাবনা এবং পরান বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো প্রাজ্ঞ ও প্রবীণ চরিত্রাভিনেতাকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত বাংলা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে যথার্থ ‘টনিক’ হিসেবে কাজ করেছে।

তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ার ও অভিনয়ের মধ্যে টানাপোড়েনের গল্প বলেছিলেন, ‘যোদ্ধা’ ছবি উপলক্ষে আর একবার ওঁর সামনাসামনি হওয়ার পর। ছবি নিয়ে নানাকথার পর এই টানাপোড়েনের প্রশ্নটা তুলেছিলাম। বলেছিলেন, “এমনিতে ঠিকই আছে। আমি আমার মতো করেই টাইম ম্যানেজমেন্টের ব্যাপারটা করি। তবে, একই দিনে শুটিং আর নিজের কেন্দ্র অর্থাৎ ঘাটাল যাওয়ার কোনও প্রোগ্রাম একসঙ্গে পরে গেলে খুব কষ্ট হয়। সবচেয়ে সমস্যা হয় একেবারে ব্যক্তিগত কাজ–যেমন এই স্নান-খাওয়া-ঘুম এগুলোর ক্ষেত্রে। স্নানের জন্য হয়তো ছুটে বাড়িতে ঢুকলাম। খাওয়া গোগ্রাসে বা নিয়ে নেওয়া হলো প্যাকেট করে। শেষে গাড়িতেই একটু ঘুমিয়ে নিলাম। জানি না কতদিন ম্যানেজ করতে পারবো!”

সম্প্রতি নিজের অন্যরকম এক পরিচয় দিয়েছেন দেব। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “ভারতের দক্ষিণের রাজ্যগুলির সংসদ সদস্যরা কখনও হিন্দি অথবা ইংরেজিতে কথা বলেন না। আমি লক্ষ্য করেছি, তাঁরা তাঁদের নিজেদের ভাষায় কথা বলেন। আমাদের সেটা কষ্ট করে বুঝতে হয়। তবু, ওঁরা এটা বজায় রাখেন। এটা ভালো, যে, সংসদে ইংরেজি ও হিন্দি অনুবাদক থাকেন, আমরা হেডফোনের মাধ্যমে সেই অনুবাদ শুনে ওঁদের বক্তব্য বুঝতে পারি।” মাতৃভাষাকে সম্মান দিয়েই দেবের এই বক্তব্য, বোঝাই যায়। প্রসঙ্গত, কয়েকবছর আগেই সংসদে বাংলায় ভাষণ দিয়েছিলেন দেব। সেটা নিয়ে যথেষ্ট আলোচনাও হয়। বিষয়টি নিয়ে এরপর তিনি কলকাতার একটি টিভি অনুষ্ঠানেও মন্তব্য করেন। দেবের বাংলা উচ্চারণ তাঁর কেরিয়ারের শুরুতে মোটেই ভালো ছিল না। কেশপুরে জন্ম হলেও খুব অল্প বয়সেই বাবার কাজের সূত্রে মুম্বই চলে যান তিনি। সেটা তাঁর বাংলা ভালো বলতে না পারার একটা কারণ ছিল নিঃসন্দেহে। পরে ঘষামাজা করে অনেকটাই শোধরান নিজেকে। পাশাপাশি মাতৃভাষার পক্ষে বারবার প্রচার। ইউথ আইকন দেবের বাংলা ভাষা নিয়ে সাম্প্রতিক এই বক্তব্য সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এটা নিশ্চয়ই একটা ইতিবাচক প্রচেষ্টা তাঁর। তিনি অন্তত বিষয়টার গুরুত্ব বুঝে এগিয়ে তো এসেছেন !

Images

সাংসদ হিসেবে জনপ্রিয়তা বেড়েছে তাঁর। এই কোভিডের বাজারেও গত বছর দেবের দুটি ছবি মুক্তি পেয়েছে। ধ্রুব ব্যানার্জি পরিচালিত ‘গোলন্দাজ’ মুক্তি পেয়েছে এসভিএফ-এর ব্যানারে। এই পিরিয়ড স্পোর্টস ড্রামায় চিত্রায়িত হয়েছে ভারতীয় ফুটবলের জনক নগেন্দ্র প্রসাদ সর্বাধিকারীর জীবনী। নগেন্দ্রর ভূমিকায় দেব। খুব শিগগিরই এর ডিজিটাল রিলিজ হবে এসভিএফ-এর অফিসিয়াল ওটিটি প্ল্যাটফর্ম, হৈচৈ ও আমাজন প্রাইম ভিডিওতে। এছাড়াও মুক্তি পেয়েছে অভিজিৎ সেন পরিচালিত ‘টনিক’। দুটি ছবিই ভালো ব্যবসা করেছে এই মন্দার বাজারেও। অর্থাৎ সফল সাংসদ হওয়ার পরও সিনেমাকে ছাড়েননি তিনি। বরং বেশি করে জড়িয়ে আছেন। ছবি প্রযোজনার ক্ষেত্রে দেবের উদ্যোগ আর একটু বেশি দায়বদ্ধতার পরিচয় দিয়েছে বাংলা বিনোদন বাণিজ্যে লগ্নির ক্ষেত্রে। বহু মানুষের রুটিরুজির ব্যবস্থা হয়েছে। এই দায়বদ্ধতার উৎস তাঁর হৃদয়, যা প্রতিবেদনের শুরুতেই বলেছি। এটাই দেবের দীর্ঘ ইনিংসের ম্যাজিক।