Saturday, May 18, 2024
সম্পাদকীয়

খবর নয় গিমিক ভরসা

সংবাদ মাধ্যমের প্রযুক্তিগত বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে, সেখানে কীভাবে কী তথ্য পরিবেশন করা হবে, সেই নিয়মবিধিও বদলাবে,সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বদলে যাওয়ার অর্থ এই নয় যে, সেখানে ন্যূনতম নীতি বা আদর্শটুকুও থাকবে না। সিরিয়াস বিষয়গুলির ক্ষেত্রে তো বটেই। আমরা এই আলোচনার ক্ষেত্রটা যদি তুলনামূলকভাবে হালকা অর্থাৎ বিনোদনকে কেন্দ্র করেও বলি, সেখানেও সংবাদ মাধ্যমের অনেকটাই দায়িত্ব থেকে যায় সমাজের প্রতি। বলতে দ্বিধা করবো না, ইদানীং এই দায়িত্ববোধের অভাবটা অত্যন্ত প্রকট হয়ে পড়েছে সর্বস্তরে।

বিশেষত, ডিজিটাল মাধ্যমে যেন সাংবাদিকতার ভাষাটাই একটা সস্তা গিমিকের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এই কয়েকদিন আগেই একটি খবরের হেডিং দেখে চমকে উঠি, ‘বাংলার মুখ উজ্জ্বল করলেন দেব, পেলেন অস্কার’ ! বলা বাহুল্য, হেডিং দেখেই সকলে দ্রুত খবরের অন্দরে গেলেন, যদিও সবাই জানতেন এটা বাস্তবে অসম্ভব। দেবের বাবা তাঁর ‘কিসমিস’ ছবিটি দেখে প্রশংসা করেছেন, সেটাই দেবের কাছে অস্কার প্রাপ্তির সামিল, সেটা তারকা নিজেই গর্ব করে বলেছেন। তিনি আবেগের বশে এটা বলতেই পারেন। কিন্তু সেটা একটা খবরের হেডিং হতে পারে ?

এই বিভ্রান্তিকর হেডিংয়ের মাধ্যমে আলোচ্য সংবাদ মাধ্যমটি সস্তা জনপ্রিয়তার যে অঙ্কটি কষেছিলেন, নিঃসন্দেহে সেটা অত্যন্ত নিন্দনীয়। ডিজিটাল মাধ্যমের পত্রপত্রিকাগুলির অধিকাংশ বাংলা ভাষার ব্যবহার  নিয়ে যথেচ্ছাচার করছে, এই অভিযোগ অনেকদিন ধরেই উঠছে। এরই সঙ্গে খবর বিক্রির তাগিদে তিলকে তাল করা, অহেতুক মশলা যোগ করে বিষয়কে অতিরঞ্জিত করা–সবই চলছে দুর্দম গতিতে। এদের আটকানোর কেউ নেই। সংস্থার কর্তারাও সস্তায় বাজিমাত করারই পক্ষে। মাঝখান থেকে সামগ্রিকভাবে পাঠকের রুচি নিম্নগামী। আর সেটাই সমাজের ক্ষেত্রে অদূর ভবিষ্যতে সবচেয়ে ক্ষতিকারক হয়ে দাঁড়াচ্ছে।