Sunday, May 5, 2024
Cine-সংবাদ

অনীকের ছবিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অথবা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব নিয়ে এবার ছবি তৈরি হচ্ছে টলিউডে। টলিউড হলেও এ ছবি বাংলা নয়, হিন্দি ভাষায় তৈরি। বস্তুত বিষয়ের গুণেই পরিচালক অনীক চৌধুরীর হিন্দি ছবি ‘দ্য জেব্রাজ়’ এই মুহূর্তে তুমুল আলোচনায়। ছবির প্রেক্ষাপট ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি। মুখ্য ভূমিকায় বলিউডের শারিব হাশমি ও বাংলা ছবির এই মুহূর্তের অন্যতম সেরা অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা সরকার। তথ্যসূত্র বলছে, কলকাতার চিনেপাড়ায় শারিবকে নিয়ে শুটিং করেছেন অনীক। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই কলকাতা অংশের শুটিং শেষ করেছেন পরিচালক। এরই সঙ্গে তিনি প্রকাশ্যে এনেছেন প্রিয়াঙ্কার ফার্স্ট লুক। ফার্স্ট লুকে তাঁকে দেখা যাচ্ছে অটোর পিছনে বসে থাকা অবস্থায়, একেবারে মেকআপ বিহীন। আর একটি লুকে একেবারে ঝাঁ চকচকে ফ্যাশনেবল এক মেয়ে তিনি! 

প্রসঙ্গত, এই ছবির মাধ্যমেই হিন্দি ছবিতে ডেবিউ করলেন প্রিয়াঙ্কা। ছবিতে প্রিয়াঙ্কার বেশ কয়েকটি লুক রয়েছে। কয়েকটি জায়গায় চরিত্রের প্রয়োজনে তিনি একেবারে মেকআপ বিহীন, যার কথা আগেই বলেছি। ছবির বিষয়ে বিস্তারে যাওয়ার আগে প্রিয়াঙ্কাকে নিয়ে কিছু কথা। প্রিয়াঙ্কার সহজাত অভিনয়ের ক্ষমতা বাংলার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি থেকে আম দর্শক লক্ষ্য করেছিল তাঁর প্রথম ছবি ‘চিরদিনই তুমি যে আমার‘ থেকেই। এরপর একাধিক ছবিতে অভিনয়। বাংলার প্রায় সমস্ত নামী পরিচালকের সঙ্গেই কাজ করেছেন প্রিয়াঙ্কা। আর কাউকেই হতাশ করেননি তিনি। একটু ভিন্নধারার এই হিন্দি ছবিতে প্রিয়াঙ্কার নির্বাচন তাই আনন্দিত করে আমাদের।

‘দ্য জেব্রাজ়’-এ প্রিয়াঙ্কার চরিত্রের নাম সুমেরা। চরিত্রটি প্রসঙ্গে অনীক জানিয়েছেন, “মফস্বলের মেয়ে সুমেরা একজন স্বপ্ন-দেখা মডেল। ফ্যাশন জগতে নিজের কেরিয়ার গড়তে চায় সে। সেই উদ্দেশ্যেই তার কলকাতায় আসা। এরপর একের পর এক বাধার সম্মুখীন হয় সুমেরা। একটি সাদাসিধে মেয়ে পরিণত হয় এক ভয়ঙ্করী নারীতে। অভাবনীয় এই পরিবর্তন পৃথকভাবে দর্শককে ভাবাবে বিষয়টি নিয়ে।” এবার ছবির গল্পে অভিনব এআই প্রযুক্তি প্রয়োগ প্রসঙ্গ। আমরা দেখব, কলকাতায় ছড়িয়ে পড়ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ। সেই প্রয়োগের দ্বারাই সব বাধা সরিয়ে, এগিয়ে যাওয়ার সব সমস্যার সমাধান করে সুমেরা।  এই প্রয়োগই কী বদলে দেবে সুমেরাকে ? ছবির শেষে রয়েছে এর উত্তর। 

পবন নামে এক ফোটোগ্রাফারের চরিত্রে দেখা যাবে শারিবকে। ক্ষমতাশালী এই তরুণ ইতিমধ্যেই একজন ভার্সেটাইল অভিনেতা হিসেবে স্বীকৃত। ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে ফ্যাশন ফোটোগ্রাফারদের গুরুত্ব অসীম। ‘দ্য জেব্রাজ়’-এ শারিবের প্রতিভা কতটা কাজে লাগিয়েছেন অনীক, তা দেখার অপেক্ষা থাকবে। এই ছবিতে আর একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন ঊষা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঊষা এর আগেও কাজ করেছেন অনীকের সঙ্গে। প্রতিভাময়ী এই তরুণীকে নিয়েও দর্শক প্রত্যাশা অসীম। ঊষা ছবিতে একজন ডকুমেন্টারি ফটোগ্রাফার–সেই এখানে শিকারী। শহরে এ আই প্রযুক্তি ছড়িয়ে পড়ার মূলে রয়েছে সে। আর তার শিকার হলো সুমেরার মতো মেয়েরা। দুইয়ের মাঝখানে সেতুর কাজ করে পবন। 

কলকাতা ছাড়াও ছবির শুটিং হয়েছে উত্তরপাড়া এবং ক্যানিংয়ে। চলছে ছবির পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ। কেন ছবির নাম ‘দ্য জেব্রাজ়’ এই বিষয়ে পরিচালক যথার্থই বলেছেন, “জেব্রার গায়ে রয়েছে সাদা-কালো ডোরা। সাদা অর্থাৎ ভালো, আর কালোর অর্থ মন্দ। এ ছবি পর্দায় সেই দুটি দিককেই তুলে ধরবে!” ছবিটি প্রযোজনা করেছেন ইউলিন প্রোডাকসন্স। এর আগে ওরা মালয়ালম ছবি প্রযোজনা করেছেন। বলিউডে এই প্রথম ছবি নির্মাণে ওরা। দুই নির্মাতা অখিল-আশিককে ধন্যবাদ জানিয়ে অনীক বলেছেন, ওঁরা এগিয়ে না এলে এমন এক বিষয়ে ছবি তৈরি সম্ভব ছিল না। এই মুহূর্তে অপেক্ষা তীব্র, কবে দেখা যাবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে তৈরি টলি পরিচালকের প্রথম ছবি।