Saturday, May 18, 2024
বিনোদনের ছোট বাক্স

দুই বোনের গল্প ‘সন্ধ্যাতারা’

আকারে ছোট হলেও বিনোদন ক্ষেত্রে টেলিভিশনের গুরুত্ব আজ অসীম। মেগা থেকে রিয়ালিটি, গেম শো থেকে ম্যাগাজিন–টিভি শোয়ের চাহিদা ছিল, আছে, থাকবে। এই বিভাগে তারই খবর প্রতি সপ্তাহে। স্টার জলসার নতুন মেগা নিয়ে লিখেছেন সোমনাথ লাহা

সম্পর্ক ভালো রাখার জন্য ক্ষুদ্র স্বার্থত্যাগ করলেই সুন্দর হতে পারে আগামীর পথচলা। ঠিক যেমন আকাশের বুকে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে তবেই দেখা মেলে তারার। স্টার জলসায় ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে দুই বোনের মধুর ভালোবাসার কাহিনি-নির্ভর ধারাবাহিক ‘সন্ধ্যাতারা’। মিসিং স্ক্রু প্রোডাকশনের ব্যানারে নির্মিত এই মেগার কাহিনি ও চিত্রনাট্য লিখেছেন সাহানা দত্ত। ধারাবাহিকটি পরিচালনা করেছেন কৃষ্ণেন্দু বসু।

মেগার কাহিনি আবর্তিত হয়েছে মফস্বলে বসবাসরত দুই বোন সন্ধ্যা ও তারাকে কেন্দ্র করে। পিতৃহীন পরিবারে ছাতা হয়ে দাঁড়িয়েছে পরিবারের মেজ মেয়ে সন্ধ্যা। পরিবারের সকলকে ভালো রাখার জন্য দিবারাত্র পরিশ্রম করে সে। তার আশেপাশের মানুষরা ভালো থাকলেই ভালো থাকে সন্ধ্যা। দিদি, মা, ছোট বোন তারাকে নিয়ে সন্ধ্যার সংসার। বোন তারা সন্ধ্যার কাছে সন্তানসম। তারাকে সে তুলোয় মুড়িয়ে রাখতে চায়। পড়াশোনায় ভালো তারা শহরের কলেজে পড়ে। তারা পড়াশোনা শিখে নিজের পায়ে দাঁড়াক এমনটাই চায় সন্ধ্যা। তারাও তার দিদি সন্ধ্যাকে ভীষণ ভালোবাসে। একে অপরের পরিপূরক সন্ধ্যা-তারা। 

ঘটনাচক্রে এই দুই বোনের মাঝখানে এসে পড়ে তাদের  গ্রামের‌ই জমিদার পরিবারের ছেলে আকাশনীল কাঞ্জিলাল। মাতৃভক্ত, পরোপকারী এই তরুণের কাছে তার মা বিজয়াই পুরো পৃথিবী। মায়ের কথাই বেদবাক্য আকাশনীলের কাছে। আকাশ‌ও শহরের কলেজে পড়ে। সেই সূত্র ধরেই তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে তারার। এদিকে সন্ধ্যার‌ও ভালো লেগে যায় আকাশকেই। কিন্তু সন্ধ্যা ও তারার হাত দেখে গ্রামের পুরোহিত মশাই জানান দুই বোনের মধ্যে যে স্বার্থপর হতে পারবে সেই সুখী হবে। ভালোবাসায় কে করবে স্বার্থত্যাগ? সন্ধ্যা নাকি তারা ? কার সঙ্গে সাতপাকে বাঁধা পড়বে আকাশ, সেই উত্তর মিলবে মেগার আগামী পর্বগুলিতে।

ধারাবাহিকে সন্ধ্যার চরিত্রে রয়েছেন ছোটপর্দায় অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী অন্বেষা হাজরা। ‘এই পথ যদি না শেষ হয়’-এর পর আবার ছোটপর্দায় দেখা মিলতে চলেছে তার। অপরদিকে তারার ভূমিকায় দেখা যাবে অমৃতা দেবনাথকে। ‘বকুলকথা’, ‘মনফাগুন’-এর মতো মেগায় কাজ করা অমৃতাও বেশ পরিচিত ছোটপর্দায়। আকাশের চরিত্রে রয়েছেন নবাগত সৌরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। এই মেগার হাত ধরেই টেলিভিশনের আঙিনায় পা রাখতে চলেছেন এই অভিনেতা। কর্পোরেট অফিসে কর্মরত সৌরজিৎ অভিনয়ের টানেই চাকরিতে ইস্তফা দিয়েছেন। ক্যামেরার সামনে এটি তার প্রথম কাজ হলেও ক্যামেরার পিছনে ইতিমধ্যেই কাজ করে ফেলেছেন তিনি। রাজ চক্রবর্তীর ‘আবার প্রলয়’-এ সহকারী পরিচালক ছিলেন সৌরজিৎ। মেগায় অন্যান্য চরিত্রে রয়েছেন বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, মৌমিতা চক্রবর্তী, ঝুলন ভট্টাচার্য, সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌরভ চট্টোপাধ্যায়, চন্দ্রনীভ মুখোপাধ্যায়, কন্যাকুমারী মুখোপাধ্যায় প্রমুখ।

সম্প্রতি কালার ফিউশন স্টুডিওতে ‘সন্ধ্যাতারা’-র ঘোষণা উপলক্ষে আয়োজিত সাংবাদিক সন্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মেগার তিন মুখ্য অভিনেতা ও পরিচালক। মেগায় নিজের অভিনীত চরিত্র নিয়ে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত অন্বেষা জানান, “আমি ভীষণ লাকি যে চ্যানেল ও সাহানাদি আমাকে সন্ধ্যার চরিত্রে কাস্ট করেছে। গল্পে ত্রিকোণ প্রেমের আঙ্গিক থাকলেও, এখানে একটি ছেলেকে নিয়ে কিন্তু কখনওই দু’জন মেয়ে টানাটানি করছে না। এখানে কেউই ভিলেন নয়।” সহশিল্পীদের নিয়ে তাঁর মত, “অমৃতার সঙ্গে এই প্রথমবার কাজ করছি। ওর কাজ দেখছি। খুব ভালো অভিনেত্রী। লুক সেট থেকেই ওর সঙ্গে একসঙ্গে সময় কাটাচ্ছি। আমাদের মধ্যে খুব ভালো বন্ডিং হয়ে গেছে। আর সৌরজিতের সঙ্গে কাজ করা হয়নি এখন‌ও। তবে, ওর কাজ দেখছি। ভীষণ‌ই ভালো, বাধ্য ছেলে।”

“এই গল্পের মধ্যে একটা বিশুদ্ধতা রয়েছে। নানা ইতিবাচক দিক আছে। এখানে কোন‌ও মানুষ‌ই নেগেটিভ নয়। বরং পরিস্থিতিটা নেতিবাচক। দুই বোনের যে ভালোবাসা দেখানো হয়েছে, সেটার মধ্যে নির্মলতা রয়েছে। তারা খুব ভদ্র, নম্র একটি মেয়ে। সে সবাইকে খুব ভালোবাসে। তবে নিজের মেজদি সন্ধ্যাকে সে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালবাসে। আমিও বাস্তবে এইরকমই। বাবা-মা, বন্ধুদের ভীষণ ভালোবাসি। তাই এই চরিত্রটা আমাকে খুবই আকর্ষণ করেছে”–জানান অমৃতা। অন্বেষা প্রসঙ্গে অমৃতার বক্তব্য, “অন্বেষাকে অনেক দিন ধরে চিনি। এই প্রথমবার ওর সঙ্গে কাজ করছি। খুব ভালো লাগছে। শুধু সহশিল্পী হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবেও ও খুব ভালো।” সৌরজিতকে নিয়ে অমৃতা বললেন, “প্রথম কাজ বলে ও একটু নার্ভাস।  কিন্তু খুব‌ই ডেডিকেটেড।”

সৌরজিৎ জানান, “এখানে আমি নতুন হলেও পুরো কাস্ট ও ক্রু আমাকে খুব সাপোর্ট করছে। ৭-৮ বার অডিশন দেওয়ার পর ওরা আমাকে এই চরিত্রে বেছে নিয়েছেন। আমাদের পরিচালক কৃশদা আমাকে খুব গাইড করছেন। আমি একজন ছাত্রের মতো এখানে কাজ শিখছি আর  আকাশ চরিত্রটাকে  ফুটিয়ে তোলার‌ আপ্রাণ চেষ্টা করছি।”

পরিচালকের কথায়, “এখানে সন্ধ্যা ও তারা দুটি চরিত্রের মধ্যে কেউই নেগেটিভ নয়। এটা সম্পূর্ণমাত্রায় একটি লাভস্টোরি। আমার মনে হয় দর্শক গল্পের তিনটি চরিত্রের সঙ্গে একাত্মতা অনুভব করবেন।” পাশাপাশি পরিচালক তিন মুখ্য শিল্পী প্রসঙ্গে বলেন, “অন্বেষার সঙ্গে আগে কাজ করেছি। এই মুহূর্তে টালিগঞ্জে ছোটপর্দা হোক বা বড়পর্দা, অন্বেষার মতো দক্ষ অভিনেত্রী খুব কমই আছে। অমৃতার সঙ্গে এই প্রথম কাজ করছি। খুব নিয়মানুবর্তী একজন অভিনেত্রী। যত‌ই ব্যক্তিগত সমস্যা থাকুক না কেন, ক্যামেরার সামনে ও একদম অন্য মানুষ। সৌরজিতের ডেডিকেশন ওকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।” স্টার জলসায় ‘সন্ধ্যাতারা’ দেখান হচ্ছে থেকে সোম থেকে রবি, প্রতিদিন সন্ধে ৭.৩০ মিনিটে।