Saturday, May 18, 2024
টেলি-Talk

ঐশ্চর্যকেই পাশে চাই–উৎসবে, একান্তে…

জি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘ইচ্ছে পুতুল’-এর নীল, অভিনেতা মৈনাক ব্যানার্জি। টেলিTalk-এ তিনি কথা বলেছেন অজন্তা সিনহার সঙ্গে।

নীল এই মুহূর্তে মৈনাককে কতটা আচ্ছন্ন করে রেখেছে ?

🔶 পুরোটাই বলতে পারো। একটা চরিত্রে সম্পূর্ণভাবে সম্পৃক্ত হয়ে না গেলে, পর্দায় তাকে রক্তমাংসের একজন মানুষ করে গড়ে তোলা সম্ভব নয়। এছাড়া, শুরুর পর বেশ কয়েকটা মাস তো হয়ে গেল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অভিনীত চরিত্রের সঙ্গে বন্ডটা শক্ত হয়। মাঝে অন্য কোনও কাজও করিনি। সবমিলিয়ে আপাতত নীলেই আচ্ছন্ন হয়ে আছি।

উড়ো খবর পাচ্ছি, ‘ইচ্ছে পুতুল’ ধারাবাহিক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এটা কী ঠিক ?

🔶 নাহ। সৌভাগ্যের কথা, এখনই সেটা হচ্ছে না। Extension পেয়েছে ‘ইচ্ছে পুতুল’।

ধারাবাহিক বন্ধ হওয়া প্রসঙ্গেই আর একটি প্রশ্ন, সেটা কোনও না কোনও দিন তো হবেই। তখন কতটা মিস করবে মেঘকে ?

🔶 গল্পের শেষে কী আছে, আমরা কেউ জানি না। মেঘ যদি নীলের জীবনে ফিরে না আসে, তাহলে, নীল নিশ্চয়ই মেঘকে মিস করবে। আমি কিন্তু নীলকে মিস করব। ওর সঙ্গেও তো আমার যাপন চলছে ! আর মিস করব আমার মেকআপ রুমটা। সেখানকার নিভৃতি, শুটের আগে নীলের সঙ্গে আর একটু একাত্ম হওয়া আর ইউনিটের সব্বাইকে।

নীল তো আসলে মেঘকেই ভালোবাসে ! তাই তো?

🔶 হ্যাঁ। অবশ্যই। নীল মেঘকেই ভালোবাসে। মেঘকে নিয়ে তার সমস্যার পুরোটাই মানসিক। এক্ষেত্রে ওই হারাবার ভয় থেকেই চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে সে। যত নিরাপত্তাহীনতা, তত আঘাত করা মেঘকে। মজা হলো, তোমার এই প্রশ্নের অভিমুখটাই নির্যাস হয়ে উঠে এলো আমাদের শুটিংয়ে। দর্শকও এই মনস্তাত্বিক দিকটা অনুভব করবেন। তাঁরা বুঝবেন, জটিলতাগুলো গজিয়ে উঠছে নীলের এই সমস্যা থেকেই। অথচ, সে যেটা করে, পুরোটাই অজান্তে। নিজের কাছেই বড় অসহায় নীল !

এই ‘নীল’ হয়ে ওঠাটা খুবই মনস্তাত্বিক একটা প্রক্রিয়া। এই যাপনটা ঠিক কেমন ?

🔶 চারিত্রিক দোলাচলের এই কাজটা বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। একজন অভিনেতা হিসেবে নিজেকে এক্সপ্লোর করার দারুণ সুযোগ পাচ্ছি এখানে। অন্যদিকে মেগায় আমরা টানা কাজ করি। সিনেমা বা ওয়েব সিরিজে সেটা হয় না। স্বভাবতই চরিত্রে সংযুক্ত হয়ে যাওয়াটা অনেক বেশি। বন্ধ হয়ে যাবে শুনে খুব মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল। সত্যি কথা বলতে কী, নীল ‘যাপন’ মৈনাকের জন্য অন্যতম সেরা।

নীলের কথা ছেড়ে এবার মৈনাকে আসি। একটি ধারাবাহিকের শেষ আর শুরুর মাঝের অবকাশে কী করো ? একেবারে সুইচ অন-অফ, নাকি অবকাশেও পরের কাজের চর্চা চলে মনে মনে ?

🔶 সুইচ অফ করাটা ঠিক হয়ে ওঠে না, সেই অর্থে। আমি আসলে পর্দার বাইরেও অভিনয়টাই যাপন করি। পরের কাজের তো বটেই, সামগ্রিকভাবেও একটা প্রস্তুতি পর্ব চলতে থাকে। এখনও বহু কিছু শেখা ও চর্চার আছে। সময় পেলেই তাই সিনেমা দেখি। বই পড়ি। আর বেড়াতে যাই, স্পেশালি পাহাড়ে। প্রকৃতির সান্নিধ্যে সতেজ হয়ে ফিরি।

প্রতিদিন অন্দরের পর্দায় দেখা ধারাবাহিকের কাহিনি আমাদের বাস্তব জীবনকে কতটা প্রভাবিত করে ?

🔶 খুবই করে। যে ধরনের ফিডব্যাক পাই ফেসবুক ইনস্টাগ্রামে, তার থেকেই বুঝতে পারি। নীল শুরুতে যেমন ছিল, বেশ সুন্দর স্বভাবের একটি ছেলে। মেঘের প্রতি তার প্রেম, প্যাশন–সবটাই দর্শক পছন্দ করতেন। জানাতেনও সেটা। পরে ওই মনস্তাত্বিক কারণেই তার স্বভাবে বেশ খানিকটা পরিবর্তন এলো। সেটা আর দর্শকের ভালো লাগে না। তার প্রতিক্রিয়াও জানাতে শুরু করলেন তাঁরা। এ অভিজ্ঞতা মনে হয় সব অভিনেতার ক্ষেত্রেই হয়।

ছোট পর্দায় কেরিয়ার শুরু। এখন সব মাধ্যমেই কাজ করছ। কোথায় কী কী পার্থক্য পাও ?

🔶 যতটুকু পার্থক্য, সেটা মূলত টেকনিক্যাল। টিভির অভিনয়ে ক্লোজ শট একটু বেশি দিতে হয়। অভিব্যক্তির তারতম্য তেমন থাকে না। এটা ঠিক, ক্যামেরা কতটা তোমায় ধরছে–কাছে-দূরে, আলো বেশি-কম–এইসব খেয়াল রেখে অভিনয় উচ্চগ্রামে না খাদে হবে, সেই টেকনিকটা প্রয়োগ করতে হয়।

পর্দার বাইরের মৈনাক কীভাবে ভালো থাকে ?

🔶 আগেই বলেছি, পাহাড়ের সান্নিধ্যের কথা। এছাড়া পছন্দের  সিনেমা বা ভালো ওয়েব দেখা। এছাড়া, একান্তে স্ত্রীর সঙ্গে সময় কাটাতেও ভালোবাসি।

সমাজের অসঙ্গতিগুলো কতটা ভাবায় তোমাকে ?

🔶 ভাবায়। ভীষণভাবে ভাবায়। সবথেকে হতাশ লাগে, যখন কিছুই করতে পারি না। আমরা ‘জওয়ান’-এর মতো সিনেমা দেখি। হলে হাততালি দিই। কিন্তু ওই পর্যন্তই। তার বাইরে কিছু করা সম্ভব হয় না। তার অনেক কারণ। সেসব বিস্তারে না গিয়ে বলা যায়, সমাজ সচেতন মানুষের এ এক চরম অসহায়তা।

পুজোর শহরে মেঘ না ময়ূরী, কে হবে সঙ্গী ?

🔶 দুজনের কেউই নয় ! আমার স্ত্রী ঐশ্চর্যকেই পাশে চাই আমি সবসময়–উৎসবে, একান্তে, সারাদিনের কাজের পর শ্রান্তি ও ক্লান্তিতে।

◾ছবি ঋণ : মৈনাক ব্যানার্জি

***মৈনাকের ফেসবুক প্রোফাইল link

https://www.facebook.com/mainak.banerjee.9465?mibextid=ZbWKwL

***মৈনাকের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট link

https://instagram.com/mainakadventure?utm_source=qr&igshid=MzNlNGNkZWQ4Mg==