Sunday, May 5, 2024
বিনোদনের ছোট বাক্স

মরমি কথায় জমে গেছে ‘রাঙা ব‌উ’

আকারে ছোট হলেও বিনোদন ক্ষেত্রে টেলিভিশনের গুরুত্ব আজ অসীম। মেগা থেকে রিয়ালিটি, গেম শো থেকে ম্যাগাজিন–টিভি শোয়ের চাহিদা ছিল, আছে, থাকবে। এই বিভাগে তারই খবর প্রতি সপ্তাহে। আজ ‘রাঙা বউ’-এর সেটের অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন কলি ঘোষ

একেবারে বর বেশে হাজির সে। গরদের ধুতি পাঞ্জাবি, কপালে চন্দনের ফোঁটা পরা সৌম্য দর্শনের ছেলেটিকে দেখে একবারও মনে হলো না, তার ভিতরে কোনও মানসিক সমস্যা রয়েছে। সে জানায়, তাদের কারখানার এক কর্মচারীর মৃত্যুসংবাদ দিতে তাকে যেতে হয় পাখিদের গ্রামে। কিন্তু সেখানে গিয়ে সেই কাজের কথাটাই ভুলে যায় সে। জানা যায়, এই সৌম্যকান্তি তরুণ, অর্থাৎ, কুশের এটাই রোগ, স্মৃতিশক্তি হারিয়ে যাওয়া। যাই হোক, সেই গ্রামেই পাখির সঙ্গে দেখা হয় কুশের। পাখি ভেষজ উপাদান দিয়ে নানা ধরনের প্রসাধনী সামগ্রী বানায়। আর এই কাজে সে খুব পটু। তাই দেখে আপ্লুত হয়ে যায় কুশ। তার সঙ্গে কথাবার্তা বলে, সবকিছু দেখে সে আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। ভালো লাগে পাখিকে। সে একেবারে বিয়ে করে বাড়ি নিয়ে চলে আসে পাখিকে। জি বাংলায় সম্প্রতি শুরু হয়েছে এক ভিন্নস্বাদের গল্প নিয়ে ধারাবাহিক ‘রাঙা বউ’। কুশ-পাখির সাংসারিক জীবনের নানা সংগ্রামের ঘটনা নিয়েই ধারাবাহিকের কাহিনি এগিয়ে চলে। কুশের ভূমিকায় গৌরব রায়চৌধুরীর অভিনয় ইতিমধ্যেই নজর কেড়েছে দর্শকের।

অকুস্থল ভারতলক্ষী স্টুডিও। সেখানেই শুটিং চলছে ‘রাঙা বউ’-এর। সেটে গিয়ে দেখলাম, একেবারে চেনা এক বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠান। প্রকাণ্ড এক সদর দরজা, যার পাশে ঠাকুর দালান, যেখানে এক বড় লক্ষ্মী প্রতিমার মূর্তি। দেখে গৃহলক্ষ্মী বলেই মনে হলো। বাড়ির সদর দরজায় আলতা পায়ে টুকটুকে লাল শাড়ি পরে দাড়িয়ে এক সদ্য বিবাহিত কন্যা। বরণ ডালা হাতে এগিয়ে গেলেন শীলবাড়ির বড় বউ, সঙ্গে পরিবারের অন্য সদস্যরা। মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বড় বউ প্রশ্ন করে, কী নাম তোমার। নববধূর উপযোগী বিনম্র কণ্ঠে উত্তর দিল পাখি। তাকে বরণ করে নিতেই উল্টোদিক থেকে পরিচালক স্বর্নেন্দু সমাদ্দার ‘কাট’ বললেন।

পরবর্তী শট নেওয়ার জন্য প্রস্তুত চলছে। এরই মধ্যে পরিবারের অন্য বউয়েরা স্ত্রী আচারের আয়োজন করতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। পাখি অর্থাৎ শ্রুতি দাসের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ করে নিলাম এই ফাঁকে। শট দিয়ে কিছুটা ক্লান্ত, আর জ্বরও হয়েছে তাঁর। তাই একটু বিরতি নিয়ে কথা শুরু করলেন শ্রুতি। একটু মজা করেই জানতে চেয়েছিলাম, পাখি কেমন ? সে কি শুধু উড়ে বেড়ায় না খাঁচাতেও বন্দি থাকে ? মজার রেশ রেখেই শ্রুতির জবাব, “না না পাখি শুধু উড়ে বেড়ায় না। যারা উড়ে গেছে তাদেরও ঘরে ফিরিয়ে আনে।”

মুর্শিদাবাদের প্রত্যন্ত এক গ্রামের মেয়ে পাখি। বাবার সংসারে ঠাঁই হয়নি তার। ছোটবেলায় মা মারা যাওয়ার পর মেয়ের দায়িত্বের কথা ভেবে পাখির বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে। এরপর বিমাতা ও বোনের অত্যাচারে পাখি জেরবার হয়ে যায়। জীবনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে ওঠে সে। তখন তাকে মামার বাড়িতে রেখে আসা হয়।মামা-মামী-মামাতো ভাইবোনেরাও কিছু কম যায় না। একইভাবে দুর্ব্যবহার ও অত্যাচার করে তারাও। এরপরই ঘটনাচক্রে কুশের সঙ্গে পরিচয় ও সেখান থেকে বিয়ে করে শীল পরিবারে আসে পাখি। সেখানেও কী সমাদর পাবে সে ? এর স্বাভাবিক উত্তর হলো, ‘না’ ! কলকাতার বনেদি শীল পরিবারের কাছেও অবাঞ্ছিত গ্রাম্য এই মেয়েটির নতুন করে সংগ্রাম শুরু হয়। পাখি চেষ্টা করে পরিবারের সকলের সঙ্গে মানিয়ে চলতে। তাতে শেষ রক্ষা হয় কি ? জানতে দেখুন ‘রাঙা ব‌উ’, জি বাংলায় সোম থেকে শনি রাত ৮.৩০ মিনিটে।